Last Updated on 2 months by Shaikh Mainul Islam
বর্তমান সময়ে সবথেকে সম্ভাবনাময় খাতের একটি হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং বা ডিজিটাল মোবাইল ব্যাংকিং সেবা। এই মুহূর্তে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করছে না এমন লোকের সংখ্যা নাই বললেই চলে। অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং কি এবং এর সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে জানতে চান।
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “মোবাইল ব্যাংকিং কি ? সুবিধা অসুবিধা সমূহ । what is mobile banking । mobile banking in bangladesh” এ।
আরও পড়ুনঃ নগদ থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, মোবাইল ব্যাংকিং কি, মোবাইল ব্যাংকিং সফটওয়্যার কি, মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা অসুবিধা সমূহ কি, দেশের সকল মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের তালিকা সহ মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কিত সকল তথ্য।
মোবাইল ব্যাংকিং কি, কাকে বল
খুব সহজ ভাষায় বললে, Mobile banking হলো মোবাইলের মাধ্যমে যে ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করা যায় তাকে Mobile banking সেবা বলে।
অর্থাৎ, আজ থেকে বেশ কিছু বছর আগেও লেনদেন বা টাকা পয়সা আদান প্রদান সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে স্ব শরীরে বা ব্যাংকের মাধ্যম দরকার হত। কিন্ত আজকাল তা আর দেখা যায় না। হর হামেশাই ব্যবহার হচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা।
আরও পড়ুনঃ বিকাশে টাকা দেখার উপায়
এছাড়াও Mobile banking সেবা ব্যবহার করে ব্যাংক একাউন্টের একসেস করা সম্ভব। সম্ভব টাকা ট্রান্সফার করা। এছাড়া এখন প্রত্যেকটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের জন্য Mobile banking সেবা চালু রেখেছে।
অর্থাৎ বেশিরভাগ প্রায় ব্যাংকের নিজস্ব মোবাইল ব্যাংক সেবা আছে।
অত্যাধুনিক সেবার একটি এই সেবাটি। এই সেবার মাধ্যমে গ্রাহক ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে জায়গায় বসেই সকল লেনদেন করতে পারেন। টাকা আদান প্রদান। বেতন বোনাস প্রদান।
বিল পরিশোধ সবই এখন স্মার্ট একটি মোবাইল ফোন থেকে করা যায় Mobile banking ব্যবহার করে।
মোবাইলে ব্যাংকিং সফটওয়ার কি
অন্য সব সফটওয়ারের মতোই সাধারণ সফটওয়ার হলো মোবাইল ব্যাংকিং সফটওয়ার।এটি ব্যাংকের অফিসিয়াল সাইট বা গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করা থাকে। সেখান থেকে ডাউনলোড করে ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারেন।
এই সফটওয়ারটি সরাসরি ব্যাংকের সার্ভারের সাথে যুক্ত থাকে। আর ব্যাংকের সার্ভারের সাথে যুক্ত থাকা সফটওয়ারই Mobile banking সফটওয়ার নামে পরিচিত। ব্যাংক হিসাব ব্যবহারকারী তা ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েই প্রবেশ করতে পারবেন নিজের একাউন্টে।
আরও পড়ুনঃ নগদে টাকা দেখার নিয়ম জেনে নিন
এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন, Mobile banking কি। জানতে পেরেছেন Mobile banking সফটওয়ার কি এবং কিভাবে কাজ করে।
এবার চলুন, জেনে নেওয়া যাক Mobile banking এর সুবিধা অসুবিধা সমূহ।
মোবাইল ব্যাংকিং এর সুবিধা সমূহ কি কি
- ঘরে বসে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে ২৪ ঘণ্টা যেকোনো সময়ে টাকা আদান প্রদান করা যায়।
- Mobile banking ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর থেকে অনেক সহজ এবং নিরাপদ বলে বিবেচিত।
- আপনার মোবাইলে ব্যাংকিং এর User ID, Password, translation code এই তথ্যগুলো শুধু আপনিই জানবেন।
- তাই আপনি ছাড়া এটি কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না।
- যেকোনো সময়ে মোবাইল রিচার্জ, মিল পেমেন্ট, অনলাইনে সকল পেমেন্ট শো টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন খুব সহজেই।
- যেকোনো সময় নিজের একাউন্ট চেক করতে পারবেন।
- শুধু কিছু ব্যাংক এই সেবা বাবদ সামান্য টাকা কেটে নেয়। আর Mobile banking গুলো সামান্য পরিমাণ টাকা কেটে নেয়। যা থেকে আমাদের সময় এবং শ্রম সবই লাঘব হয়।
আরও পড়ুনঃ বিকাশে টাকা দেখার নিয়ম । How To Check Bkash Account Balance
- অনেক সময় বড় অংকের টাকা সাথে নিয়ে বহন করা অনেক কঠিন বা রিস্ক হয়ে দাড়ায়।
- কিন্তু Mobile banking গ্রাহক হলে নিরাপদ এবং সময় সাশ্রয়ী হয়।
- বিদ্যুৎ বিল, নেট বিল, পানি বিল, ক্লাসের বেতন সবই পরিশোধ করা যায় Mobile banking এর মাধ্যমে।
- কিছু কিছু হাসপাতালে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা Mobile banking এর মাধ্যমে পূরণ করলে সেখান থেকে আবার বড় একটি এমাউন্ট ক্যাশব্যাক পাওয়া যায়।
- মোবাইলে নির্দিষ্ট টাকা রিচার্জ করলেও অনেক টাকা ব্যাক পাওয়া যায়।
- এছাড়াও শতাধিক সুবিধা আছে Mobile banking ব্যবহারে।
বর্তমান সময়ে অন্তত একটি Mobile banking একাউন্ট নাই এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। তবে কিছু মানুষের দরকারে প্রায় ৬-৭ টি Mobile banking একাউন্ট থেকে থাকে।
এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক Mobile banking ব্যবহারে অসুবিধা সমূহ। তবে সর্বদা সতর্ক থাকলে এই অসুবিধা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এবারে জেনে নেওয়া যাক Mobile banking এর অসুবিধা সমূহ।
মোবাইল ব্যাংকিং এর অসুবিধা সমূহ কি কি
সুবিধা যেখানে সেখানে কিছু অসুবিধা থাকবেই। ঠিক সেভাবেই মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে শতাধিক সুবিধা থাকলেও কয়েকটি অসুবিধা যেন হেকেই যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক এইসেবা ব্যবহারে অসুবিধাগুলো।
- এটি একটি প্রচুর সিকিউরিটি সম্পন্ন সার্ভিস। তবুও আপনার একাউন্টের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড কেউ জেনে গেলে হ্যাকাররা আপনার সব টাকা তুলে নিতে পারবেন।
- মাঝে মাঝে ফেক মেসেজ এসে প্রলোভিত করে আপনার একাউন্টের সকল টাকা আপনার অজানতেই নিয়ে যায়। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
আরও পড়ুনঃ বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম । how to delete bkash accoun
- কিছু Mobile banking সেবা আছে যারা তাদের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চার্জ নিয়ে থাকে।
- তবে,এদের জনপ্রিয়তার একটি বিষয় অবশ্যই হেকেই যায়।
- আপনার মোবাইল যদি কখনো চুড়ি হয়ে যায় তাহলে আপনার একাউন্ট এবং একাউন্টের টাকা হারিয়ে ফেলার বেশ সম্ভাবনা আছে।
এছাড়া অন্য বিশেষ কোনো অসুবিধা নেই। আর এই অসুবিধাগুলো চাইলেই একজন গ্রাহক তার সচেতনতা দিয়ে সমাধান করতে পারে। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কিভাবে মোবাইল ব্যাংকিং আমাদের সার্ভিস দিয়ে থাকে।
এবার আমরা দেশের অতি পরিচিত বেশ কিছু Mobile banking এর সাথে পরিচিত হব। এই Mobile banking সেবাগুলো দেশ সেরা এবং সর্বাধিক বিশ্বস্ত Mobile banking সেবা।
সকল মোবাইল ব্যাংকিং বাংলাদেশ
এখানে সর্বশেষ সার্ভিস দিতে থাকা ৯ টি মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এই সব মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোই সার্ভিস দিয়ে আসছে।
বিকাশ – Bkash
ব্রাক ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের আওতায় ২০১১ সালের জুলাই বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর সেবা চালু করে। বিকাশের মালিকানা ব্রাক ব্যাংক প্রতিষ্ঠানের। এটি এখন জনপ্রিয়তার প্রথম এবং দ্বিতীয় নাম্বারেই আছে।
রকেট – Rocket
ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড এর মালিকানাধীন ২০১১ সালের মে মাসে রকেট মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে।
নগদ – Nagad
মাত্র কয়েক বছর আগে ২০১৮ সালে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশের ডাক বিভাগের মালিকানাধীন যাত্রা শুরু করে। এটি এখন জনপ্রিয়তার প্রথম এবং দ্বিতীয় নাম্বারেই আছে।
ইউ ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং – UCash
২০১৩ সালে ইউসিবি ব্যাংক এর মালিকানাধীন ইউ ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করেন।
মাই ক্যাশ – My Cash
ফেব্রুয়ারি ২০১২ সালে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের মালিকানায় মাই ক্যাশ চালু করেন।
এম ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং – M Cash Mobile Banking
২০১৯ সালে ইসলামি ব্যাংকের অধীনে এম ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং চালু করা হয়।
টি ক্যাশ – T Cash
ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর মালিকানায় ২০১৮ সালে টি ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং চালু করা হয়।
সিওর ক্যাশ – Sure Cash
২০১৮ সালে রুপালি ব্যাংকের আওতায় সিওর ক্যাশ মোবাইল ব্যাংকিং চালু করে হয়।
ওকে মোবাইল ব্যাঙ্কিং – Ok Mobile Banking
২০১৩ সালের অক্টোবরে ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড ওকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে।
এছাড়াও আরও একাধিক Mobile banking সেবা চালু আছ। যা বিভিন্ন ব্যাংকের আওতায় পরিচালিত হয়।
এবার Mobile banking সম্পর্কিত অধিক কিছু প্রশ্ন উত্তর জেনে নেওয়া যাক। এই প্রশ্ন উত্তর গুলো সাধারণত মানুষ জানতে চায়।
মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কিত FAQS
অনেকগুলোই জনপ্রিয় আছে। তবে বিকাশ এবং নগদ এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় Mobile banking সেবা।
এক একটি ব্যাংক এক একটিMobile banking সেবা চালু করে পরিচালিত হয়ে থাকে।
এক এক প্রতিষ্ঠান এক এক রকমের চার্জ নেয়। তবে চার্জ নির্ভর করে কাজ বং টাকার পরিমাণের উপর ভিত্তি করে।
বর্তমান সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকিং সেবায় ডিজিটাল Mobile banking সেবা চালু হতে যাচ্ছে।
ডাচ বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশে প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং শুরু করে। ২০১১ সালের ৩১শে মার্চ বাংলাদেশে প্রথম এই সেবাটি চালু করে ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড।
মোবাইলের মাধ্যমে যেসব ফিনান্সিয়াল কার্যক্রম (টাকা লেনদেন, পেমেন্ট ইত্যাদি) করা হয় তাকে মোবাইল ব্যাংকিং বলে।
মোবাইল ব্যাংকিং এর বেশ কিছু সুবিধা আছে। যেমনঃ
মুহূর্তের মধ্যে টাকা উত্তোলন, টাকা প্রেরণ, ঘরে বসে লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদন সহ ইত্যাদি।
Mobile Banking নিয়ে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা জানতে চেষ্টা করেছি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা কি, এবং এর সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত।
আশা করছি এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে পেরেছেন। এরপরেও এই বিষয়ে আর কোনও বিষয় জানার থাকলে আমাদের Mobile Banking Category ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে Dainik kantha ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
good post