রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ)

Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam

প্রত্যেক বছর রমজান মাসে মুসলমানরা রোজা আদায় করেন। আর তখন রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া জানতে চেয়ে থাকেন।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট ” রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ)” এ।

আজকে আমরা জানবো আত্মশুদ্ধির মাস রমজান মাসে রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া, রোজা রাখার দোয়া,  রোজার নিয়ত, রোজার নিয়ত বাংলায় এবং রোজার সম্পর্কিত বিস্তারিত।

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া

রমজানে রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া আদায় করতে হয়। মূলত রোজা রাখবো এবং ইফতারি করবো এটি অন্তরে থাকলেই রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সাথে সাথে হয়ে যায়।

তবে তারপরেও রোজার নিয়ত আছে যা পরলে ভালো হয়। তবে আলেমদের মতে, রোজা রাখবো ও ইফতার করবো আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং সাওয়াবের আশায় এতেই রোজার নিয়ত হয়ে যায়।

রোজার নিয়ত । বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ সহ

রোজার আরবি নিয়তঃ –

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ  غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا  اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

আরবি রোজার নিয়তের বাংল উচ্চারণঃ

“নাওয়াইতু আং আছুম্মা গাদাম্ম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আংতাস সামিউল আলিম”।

রোজার নিয়ত বাংলায়ঃ

“হে আল্লাহ, আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার জন্য মনের ইচ্ছা (নিয়ত) পোষণ করলাম”।

অতএব, হে আল্লাহ তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা অর্থাৎ পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল করে নাও, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, যখন রাখা লাগবে না

রোজা রাখার দোয়া রমজানের সময় প্রতিদিন সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে পাঠ করবেন। অর্থাৎ সেহরি খাওয়ার পরেই আপনি এই দোয়া পাঠ  করবেন।

রমজানের দোয়া আপনি আরবিতে কিংবা বাংলায় যেকোনো ভাবেই পাঠ করতে পারেন। আপনি যেভাবে সহজে মনে রাখতে পারেন সেই ভাবে পাঠ করবেন।

রোজার নিয়ত আদায়ের মধ্য দিয়ে রোজার পূর্ণতা অর্জন হয়। তবে রোজা রাখার মানসিকতা থাকাটা অনেক বড় দোয়া।

ইফতারের দোয়া । বাংলা উচ্চারণ এবং অর্থ সহ

রোজা রাখার উদ্দেশ্যে যেমন রোজার দোয়া আছে তেমনই ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে ইফতারের দোয়া আছে।

এখন আরবিতে ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থ সহ দেখবো। এর আগে বলে নেই, ইফতারের দোয়া ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে ইফতার সামনে নিয়ে পড়তে হয়।

এবং আই সময়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হয়। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হয়।

ইফতার সামনে নিয়ে বান্দা কোনও দোয়া করলে আল্লাহ সেই দোয়া কবুল করে নেন।

ইফতারের দোয়া আরবিতেঃ اَللهُمَّ إِنِّيْ أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِيْ وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ أَنْ تَغْفِرَ لِيْ.  رواه ابن ماجه، وقال البوصيري في الزوائد :  هذا هديث صحيح، ورجاله ثقات.

ইফতারের আরবি দোয়া বাংলায় উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা সুমতু  লাকা ওয়া তাওয়া ক্কালতু আ’লা রিয কিকা ওয়া আফতারতু বিরহ মাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।

আরও পড়ুনঃ রমজানে সাহরি ইফতারিতে যা থাকা উচিত

বাংলা অর্থ ইফতারের দোয়ারঃ হে আল্লাহ, আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক্বের মাধ্যমে ইফতার করছিহ।

ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে ইফতারি সামনে নিয়ে এই দোয়া পরে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা ও করুণা চাইতে হবে।

নিয়মিত আমল করলে কিছুদিনের মধ্যেই এই দোয়া মুখস্ত হয়ে যাবে।

রোজার ফজিলত

পবিত্র মাহে রমজানের মাস্কে আত্মশুদ্ধির মাস বলা হয়। এর অন্যতম কারণ, রাসুল  (সাঃ) বলেন,

“যে মুসলমান ব্যক্তি সয়াবের আশায় নিজ ইমানের সাথে রমজানে সব রোজা রাখে এবং তারাবির নামাজ আদায় করে অই ব্যক্তির অতীতের সকল গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (বুখারি হাদিস নং ১৯০১)

আরও পড়ুনঃ শবে বরাতের রোজা কয়টি । শবে বরাত সম্পর্কে বিস্তারিত

অন্যদিকে মহান আল্লাহ তায়ালা রোজার সম্বন্ধে সুরা বাকারার ১৮৩ নাম্বার আয়াতে বলেন,

হে আমার মুমিন বান্দারা, তোমাদের উপর রমজান মাসের রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমনটা ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী মানুষদের উপর। (সুরা বাকারার ১৮৩ নাম্বার আয়াত থেকে নেওয়া)

আরও পড়ুনঃ ঈদুল ফিতরে করণীয় বর্জনীয় সমূহ

এই কথা দ্বারা স্পষ্ট যে, ইমানের সাথে মনে আল্লাহকে বিশ্বাস রেখে সাওয়াবের এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় যে ব্যক্তি রমজানের সকল রোজা আদায় করেন এবং তারাবির নামাজ পরেন আল্লাহ তার পিছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেন।

তাই রমজান মাসকে আত্মশুদ্ধির মাস বলা হয়। রমজান মাসে মুমিন মুসলিমরা যত বেশি আল্লাহর ইবাদত করবেন ততবেশি নেকি (সাওয়াব) অর্জন করবেন।

রোজা সম্পর্কিত FAQS

বমি করলে কি রোজা ভেঙে যায় ?

অনিচ্ছাকৃত ভাবে বমি হলে রোজা ভাংবে না।

রোজার মধ্যে মনের ভুলে কিছু খেলে রোজা ভাংবে?

না, মনের অজান্তে কিছু খেলে রোজা ভাংবে না।
তবে রোজার কথা মনে হওয়ার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
তাহলে আর রোজা ভাংবে না বা ছুটে যাবে না।

কি করলে রোজা একদম ভেঙ্গে যায়?

রোজা চলাকালীন সময়ে গলার ভিতরে কোনও খাবার জাতীয় (হোক তরল বা কঠিন) কোনও পদার্থ প্রবেশ করলেই রোজা ভেঙ্গে যাবে।

তবে মনের অজান্তে খেলে রোজা ভাংবে না যদি মনে পরার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করা হয়।

রোজার দোয়া ও ইফতারের দোয়া সম্পর্কিত সর্বশেষ

আজকের পোস্ট থেকে আমরা রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া জেনেছি। জেনেছি রোজার এবং ইফতারির দোয়ার বাংলা অর্থ।

আশা করছি এই পোস্ট থেকে রোজার দোয়া ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ) জানতে পেরেছি।

রোজা সম্পর্কিত আরও সকল বিষয়ে জানতে আমাদের Islamic info Category ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

24 thoughts on “রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ)”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.