Last Updated on 8 months by Shaikh Mainul Islam
একজন ব্যক্তির তার দেশের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার আইনি ডকুমেন্ট হচ্ছে ভোটার আইডি কারদ বা জাতীয় পরিচয় পত্র। অনেকেই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম না জানায় নতুন আইডি কার্ড করতে ঝামেলায় পরে থাকেন।
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোষ্ট “নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম । নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক” এ।
আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম, নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম এবং ভোটার voter id card related সবকিছু জানবো।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
একজন ব্যক্তি একবার মাত্র ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। এরপর বিভিন্ন কারণে তথ্য চেঞ্জ করার দরকার হলে সংশোধন করা যায়। তবে, ভোটার আইডি কার্ড একবার ই করা হয়।
ভোটার হননি এমন যেকোনো নাগরিককে নতুন ভাবে ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য দুইটি উপায়ের যেকোনো একটি অবলম্বন করে নতুন ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ নতুন আইডি কার্ড কিভাবে দেখব । ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম
- অনলাইনের মাধ্যমে
- সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভা থেকে
তাহলে চলুন, দুই ভাবেই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি করার সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ সরকারের আওতাধীন নির্বাচন অফিসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট nidw ব্যবহার করতে হবে।
প্রিয় পাঠক, আপনি অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চাইলে প্রথমে আপনাকে নির্বাচন অফিসের ওয়েবসাইটে একাউন্ট তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করার উপায়
নিচে দেখিয়ে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে একাউন্ট তৈরি করে নিন।
চলুন তাহলে অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য একাউন্ট খলার নিয়ম নিচের সম্পূর্ণ প্রসেসটি স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করুন।
নতুন ভোটার হতে একাউন্ট খোলার নিয়ম
- গুগলে গিয়ে nidw লিখে সার্চ করুন। (লিংক নিচে দেওয়া আছে)
- এবার নিচে দেখতে পাওয়া ছবিটির মত একটি পেজ ভিউ দেখতে পাচ্ছেন।
- উপরের ছবির মত দেখতে পাওয়া পেজ এর দ্বিতীয় অপশন “নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন করুন” এ ক্লিক করলেই নিচের ছবির মত পেজ ভিউ দেখতে পাবেন।
উপরের ছবির মতো দেখতে পাওয়া পেজ এ যেসকল তথ্য দিতে বলা হয়েছে সেসব তথ্য বসাতে হবে।
- পুরো নাম (ইংরেজিতে) এই ঘরে জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী নাম লিখতে হবে।
- জন্ম তারিখ এর ঘরে প্রথমে দিন পরে মাস এবং শেষে জন্ম সাল লিখতে হবে।
- এরপর নিচে দাগ কাটা ঘরের লেখাটি (ছবিতে প্রদর্শিত কোডটি প্রবেশ করান) ঘরে লিখে দিন।
- এবার ফর্মে লেখা সকল তথ্য একবার মিলিয়ে সঠিক কি না দেখে নিন।
- এবার সব তথ্য ঠিক থাকলে নিচে কালো মার্ক করা ঘরে লেখা “বহাল” বাটনে ক্লিক করুন।
- “বহাল” বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে নিচের ছবিটির মতো একটি পেজ ভিউতে নিয়ে যাওয়া হবে।
- উপরের ছবিটির মতো পেজ ভিউ দেখার পরে মোবাইল নাম্বারের ঘরে আপনার সচল মোবাইল নাম্বারটি লিখুন।
- এবার কালো মার্ক করা “বার্তা পাঠান” বাটনে ক্লিক করুন।
- এবার আপনার মোবাইলে একটি পিন নাম্বার পাঠানো হবে।
- নিচে দেখতে পাওয়া ছবির মত পেজ ভিউতে মেসেজে আসা যাচাইকরণ কোডটি দিন।
- আগের মতো পুণরায় “বহাল” বাঁটনে ক্লিক করুন।
বহাল বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে পরবর্তী স্টেপে নিয়ে যাওয়া হবে। সতর্কতার সাথে ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড সেট করে সংরক্ষণ করুন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য আবেদনের এই পর্যায়ে উপরের ছবিটির মতো পেজ ভিউতে ফর্ম আকারে যে সকল তথ্য তৈরি করতে বলা হয়েছে তা করতে হব।
অর্থাৎ, এখানে আপনাকে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে। যেখানে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড বসাতে হবে। তৃতীয় ঘরে প্রথমে দেওয়া পাসওয়ার্ডটি পুনরায় বসাতে হবে।
একাউন্ট নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পরে নিচের কালো কালির মধ্যে “বহাল” বাটনে ক্লিক করতে হবে।
এবার আপনাকে আপনার প্রোফাইলে ব্যক্তিগত তথ্য পূরণের একটি ফর্মে নিয়ে যাওয়া হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ
উপরের সকল নিয়ম অনুযায়ী তথ্য পূরণ করার পরে নিচের ছবির মতো একটি পেজ ভিউ দেখতে পাবেন।
যেখানে লাল মার্ক করা এডিট অপশনে ক্লিক করে ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য এবং ঠিকানা অপশনে ক্লিক করে ফর্ম পূরণ করতে হবে।
উপরের সকল তথ্য নিচের ছবির মতো একটি ফর্মে পূরণ করতে হবে। এখানে উল্লেখিত আপনার যাবতীয় সকল তথ্য দিতে হবে।
বলে রাখা ভালো যে, যে ঘরের পাশে *(স্টার ) চিহ্ন দেওয়া আছে সেই ঘরের তথ্য বাধ্যতামূলক পূরণ করতেই হবে।
ভাবে আপনি সকল তথ্য পূরণ করবেন “পরবর্তী” অপশন ক্লিক করে করে।
যাবতীয় তথ্য পূরণ করার পরে একদম শেষ স্টেপে সাবমিট অপশন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করে আপনার প্রদানকৃত যাবতীয় তথ্য সংবলিত ফর্মটি সাবমিট করতে হবে।
সফল ভবে আপনার আবেদন টি সাবমিট হলে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করে পূরণ কৃত ফর্মটি ডাউনলোড করতে হবে।
ডাউনলোড কৃত ফর্মটি প্রিন্ট করে হার্ড কপি বের করতে হবে।
এবার ফর্মের নিরধারিত স্থানে আপনার এলাকার চেয়ারম্যান এবং মেম্বার দ্বারা সিগনেচার এবং তাদের ভোটার আইডি নাম্বার লিখে নিয়ে নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
ভেরিফিকেশন ও বায়োমেট্রিক প্রদান
সকল কাজ সম্পাদন করে উক্ত ফর্মটি আপনার নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
এরপর আপনার সকল তথ্য ভেরিফিকেশন এর পরে নির্বাচন অফিস থেকে আপনার সাথে যোগাযোগ করে ছবি এবং আঙ্গুলের ছাপ নেওয়ার জন্য নির্ধারিত স্থানে যেতে বলবে।
সেই অনুযায়ী আপনি গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ এবং ছবি দিয়ে আসবেন। এবার ১০ থেকে ১৫ কিংবা ২০ দিন অপেক্ষা করুন। আপনার মোবাইলে ১০৫ নাম্বার থেকে মেসেজ করে আইডি নাম্বার জানিয়ে দেওয়া হবে।
আইডি নাম্বারটি পেলেই আপনি ওয়েবসাইট থেকে ভোটার আইডি কার্ড এর অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
এবং আসল কপি পাওয়ার জন্য ১ থেকে ২ মাস পরে নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলেই পেয়ে যাবেন।
সরাসরি ভোটার আইডি কার্ড করার উপায়
সরাসরি বলতে ইউনিয়ন কিংবা পৌরসভা থেকে নির্বাচন অফিসার মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড করাকে বোঝায়।
আমাদের দেশে ১৬ বছর বয়স হলেই ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
অনলাইনে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম থাকলেও প্রতি ৩ বছর পর পর স্থানীয় পর্যায় থেকে ভোটার যোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য নিয়ে ভোটার আইডি কার্ড করা হয়।
এছাড়াও যেকোনো সময়ে নির্বচন অফিস থেকে ফর্ম পূরণ করে ১০ থেকে ২০ কিংবা ১ মাসের মধ্যে ভোটার আইডি কার্ড করা যায়।
সরাসরি নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চাইলে অবশ্যই সকল ডকুমেন্ট ফর্মে পূরণ করতে হবে।
তবে, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কত্রিপক্ষ আপনাকে সার্বিক ভাবে কাজটি সম্পাদন করে দিবে।
কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড হাতে পাবো
উপরের নিয়ম অনুযায়ী সবগুলো ধাপ সম্পন্ন করার পর আপনাকে নির্বাচন অফিস থেকে একটি টোকেন সংগ্রহ করতে হবে।
এরপর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা করার পর আপনি আপনার ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে দেখে নিতে পারবেন আপনার আইডি কার্ড সম্পন্ন হয়েছে কি না।
সম্পন্ন হয়ে থাকলে আপনি অনলাইন থেকে অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন এবং আপনাকে নির্বাচন অফিস থেকে দেওয়া টোকেন নিয়ে নির্বাচন অফিস থেকেও মূল কপি সংগ্রহ করতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে টোকেনটি নিয়ে আপনার স্থানীয় নির্বাচন অফিস অর্থাৎ যেখানে আপনি পিডিএফ প্রিন্ট ফর্ম জমা দিয়েছেন সেখানে গিয়ে অফিস সহকারির কাছে জজ্ঞেসা করলে তিনি আপনার আইডি কার্ডটি স্বাক্ষর রেখে আপনাকে দিয়ে দিবেন।
নতুন ভোটার হতে হলে কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। কি সেই যোগ্যতা যা নতুন ভোটার হওয়ার জন্য দরকার?
এসব যোগ্যতার সবগুলো আপনার মধ্যে উপস্থিত থাকলে তবেই আপনি নতুন ভোটার হতে পারবেন।
এক্ষেত্রে অনলাইনের মাধ্যমে ফর্ম পূরণ করতে হবে। জেনে নেওয়া যাক নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নতুন নিয়ম সম্পর্কে।
নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতা সমূহ
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার আবেদন করার জন্য আপনার ১৮ বছর বয়স হতে হবে।
আপনার জন্ম নিবন্ধন এবং এসএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী আপনর বয়স মিনিমাম ১৮ বা তার উপরে হতে হবে।
এছাড়া আপনাকে বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ডের স্কান কপির প্রয়োজন হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ nid card status check
আপনাকে কোনো ভাবেই আগে অন্য কোনো স্থান থেকে তথ্য গোপন বা পরিবর্তন করে ভোটার হওয়া যাবে না।
অর্থাৎ, এক ব্যক্তি যেকোনো ভাবেই হোক একবারের বেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড করলে বা করার চেষ্টা করলে আর্থিক এবং সশ্রম আজীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত সাজা হয়ে থাকে।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম।
কিভাবে আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করবো কিভাবে নিজের আইডি কাদ মূল কপি পাওয়ার আগে পেতে পারি।
এবার ভোটার আইডি কার্ড বিষয়ে সবথেকে অধিক কিছু প্রশ্ন অর্থাৎ FAQS সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে FAQS
হ্যা। আপনি আপনার মতো যে কোন সময়ে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন।
এজন্য অনলাইন বা সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে এই পোষ্টে উল্লেখিত নিয়ম মেনে আবেদন করতে হবে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি অনলাইনে রিইস্যু আবেদন করলেও আবার আসল আইডি কার্ড পাবেন।
না। ভোটার আইডি কার্ডের তালিকার ডাটাবেজে শুধুমাত্র নাম সংযুক্ত করা হয়।
আপনি অনলাইন থেকেই আপনার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
এছাড়া যে এলাকায় ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেই এলাকার উপজেলার নির্বাচন অফিস থেকে আইডি কার্ড সংগ্রহ করা যাবে যেকোনো সময়ে।
না, আপনার কার্ড আপনাকেই উত্তোলন করতে হবে।
তবে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন যেকোনো সময়ে যেকোনো দেশে বসে।
আপনি ভোটার আইডি কার্ডের কি তথ্য সংশোধন করছেন তার উপর নির্ভর করছে কত দিন সময় লাগে। তবে, সাধারণত, ১ মাসের আগেই ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হয়ে যায়।
প্রথম বার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ২০০ তাকা ফি এবং ৩০ তাকা ভ্যাট সহ মোট ২৩০ টাকা লাগে। এবং দ্বিতীয়বার ৩০০ টাকা সাথে ১৫% ভ্যাট সহ মোট ৩৪৫ টাকা লাগে।
আর আপনি চাইলেই ইচ্ছা মতো সংশোধন করতে পারবেন না। সঠিক কারণ থাকলে তবেই আপনি ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে পারবেন।
বয়স ১৮ এর নিচে হলে জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট করা যাবে। ১৮ এর বেশি হলে অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড লাগবে পাসপোর্ট করতে।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম । সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জেনেছি।
আশা করছি এই পোষ্ট থেকে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কিত সকল বিষয়ে সঠিক ভাবে জানতে পেরেছেন।
এরপরেও নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম সম্পর্কে আরও কিছু জানার থাকলে আমাদের Government Service Information category ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোষ্ট পড়ার জন্য Dainik kantha ভিজিট করুন।
সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
💕💕💕💕
Thank u