কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় । শারীরিক স্বাস্থ্যে কিসমিসের ভুমিকা

Last Updated on 12 months by Shaikh Mainul Islam

কিসমিসের সাথে আমরা কম বেশি সবাই পরিচিত। সাধারণত কোনো খাদ্য সুস্বাদু করতে কিসমিস ব্যবহার হয়। তবে এর আরও হাজারের বেশি উপকার রয়েছে। যৌন স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে রক্ত বৃদ্ধিতে কিসমিসের ভুমিকা অসাধারণ। তাই আজকে আমরা জানবো কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় এবং ঘরে বসে কিসমিস তৈরির উপায় সম্পর্কে।

শারীরিক বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি ভুমিকা রাখে শুকনা কিসমিস। কিন্তু আমাদের মধ্যে কেন যেন মনে হয় শুধু  কিসমিস খাওয়া সাস্থের পক্ষে ক্ষতিকর। বাজারে কিনতে পাওয়া কিসমিস স্বাস্থ্যকর কি না তা আমরা ভালোভাবেই জানি। তেমনই আবার সামান্য কয়েকটি কিসমিসের দাম নেওয়া হয় এত বেশি যা অনেকের কাছে নিয়মিত খাওয়া অসম্ভব।

আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, কিসমিস কি, কিসমিস তৈরি করতে কি কি লাগে/ উপকরন, কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় এবং কিসমিস এর সকল উপকারি এবং অপকারি দিক সম্পর্কে। আরও জানবো সেক্স লাইফে কিসমিস কি ভুমিকা রাখে। জানবো কিসমিসে কি পরিমাণ শক্তি এবং ভিটামিন পাওয়া যায় এই সব বিষয়ে বিস্তারিত।

কিসমিস কি । What are raisins?

আমাদে সকলের কাছে অতি পরিচিত একটি ফল আঙুর। আর এই আঙুর ফলের শুকনা রুপ হচ্ছে কিসমিস ফল। আঙুর ফলকে কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করে কিসমিসে রুপ দেওয়া হয়। এজন্য মূলত হচ্ছে কিসমিসকে শুকনা ফলের রাজা বলা হয়।

আরও পড়ুনঃ পিরিয়ডের সময় পেট ব্যথা কমানোর উপায়

নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কিসমিস কি। এখন মাথায় কি চিন্তা হচ্ছে আপনার? যে তাহলে কিসমিস তৈরি করতে আঙুর ফল কিনে শুকিয়ে নিলেই হয়ে যাবে? তাহলে বলবো, আপনার ধারণা ৪০-৪৫ % সঠিক। তবে আঙুর ফলকে সরাসরি শুকালেই কিসমিস তৈরি হবে না। এজন পনাকে ঘরে বসে কিসমিস তৈরির সম্পূর্ণ নিয়ম জানতে হবে।

কিসমিস তৈরির উপকরণ । কিসমিস তৈরি করতে কি কি লাগে

এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, আজকের সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লেই আপনিও ঘরে বসে কিসমিস বানাতে পারবেন এবং তার সঠিক ব্যবহার করতে পারবেন। জি ঘরে বসে খুব সহজেই তৈরি করা যায় স্বাস্থ্যসম্মত কিসমিস।

ঘরে বসে স্বাস্থ্য সম্মত কিসমিস তৈরি করতে যযেসব জিনিস দরকার তা হচ্ছেঃ

১) পরিমাণ মতো লম্বা ধরনের আঙুর ফল।

২) বিশুদ্ধ পানি।

৩) পানি ঝাড়ানোর চালি।

৪) সুতির পরিষ্কার কাপর।

৫) রান্না ঘর/ কিচেন।

এতক্ষণে আমাদের জানা হয়ে গেল কিসমিস তৈরির পদ্ধতি অনুযায়ী কিসমিস তৈরিতে কি কি লাগবে। এই জিনিসগুলো আপনার কাছে থাকলে কিসমিস তৈরি করা শুরু করে দিতে পারেন এখনই। এবার জেনে নেওয়া যাক ঘরে বসে কিসমিস তৈরি করার পদ্ধতি বা নিয়ম।

কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় । How are raisins made?

কিসমিস তৈরি করার জন্য যা যা করার দরকার তা নিচে সিরিয়াল অনুযায়ী উল্লেখ করছি। যাতে আপনার বুঝতে এবং সিরিয়াল অনুযায়ী কাজ করতে সুবিধা হয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক ঘরে বসেকিসমিস কিভাবে তৈরি হয় সে সম্পর্কেঃ

আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, যখন রাখা লাগবে না

১) পরিষ্কার পাত্রে বিশুদ্ধ পানি চুলায় দিয়ে ফুটানো শুরু করুন।

২) পানি যখন ফুটতে শুরু করবে তখন আঙুর ফলগুলি ফুটন্ত পানির মধ্যে দিয়ে দিন।

৩) পানি একটু বেশি পরিমাণে দিবেন যাতে আঙুর ফলগুলো ফুটন্ত পানির মধ্যে  ঘুরতে পারে।

৪) এবার পানি ফুটাতে থাকেন। আর আঙুর ফলগুলো সিদ্ধ করতে থাকুন।

৫) কিছু সময়ের মধ্যে আঙ্গুরগুলো ফুটন্ত পানির উপরে উঠে আসবে এবং আঙুর ফলের একপাশ ফেটে যাবে। (তখন বুঝতে হবে আঙুর ফল সিদ্ধ হয়ে গেছে)।

৬) চুলা থেকে নামিয়ে পানি ঝেরে ফেলটে হবে।

৭) একটি ঝাঁঝরির উপরে পরিষ্কার সুতির কাপর বিছিয়ে সিদ্ধ আঙুর ফলগুলো রোদে দিন।

৮) ২- ৩ দিন খুব ভালো রোদে রাখুন। এবং আঙুর ফলগুলো পাতলা করে রাখুন। যাতে তারাতারি শুকিয়ে যায়।

৯) ২ – ৩ দিন শুকানো শেষে সম্পন্ন হয়ে গেল আপনার কিসমিস তৈরি।

এখানে বলে রাখা ভালো যে, অনেক দিন রোদে শুকানো যাবে না। রোদ খুব ভালো হলে ২ দিন শুকাতে হবে। আর রোদের তাপমাত্রা তুলনামূলক কম হলে সর্বাধিক ৩ দিন শুকাতে পারেন। আর একটু বেশি ভেজা ভেজা লাগলে কিছুক্ষন ফ্যানের নিচে দিয়ে শুকিয়ে নিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ গরমে ত্বক ভালো রাখার সহজ উপায়

বেশ, হয়ে গেছে আপনার কিসমিস তৈরি। এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন ঘরে বসেই কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় সে বিষয়ে। তবে শুধু তৈরি করলেই হবে না। কিসমিস স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে সংরক্ষণ এবং খাওয়ার নিয়ম জানতে হবে। আর তা জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়তে থাকুন।

পাঠক, আপনি এই সম্পূর্ণ প্রসেসটি সম্পন্ন করার পর যে ফলটি পেয়েছেন সেটি হচ্ছে আপনার কাঙ্ক্ষিত কিসমিস। যা খাদ্যের স্বাদ বাড়িয়ে থাকে। এবং শুধু কিসমিস শরীরে যৌন বা সেক্সুয়াল বিষয়ে সহ হাজারের বেশি উপকার করে যা এরপরেই আমরা জানবো।

কিসমিস সংগ্রহের নিয়ম । কিভাবে কিসমিস সংগ্রহ করতে হয়

এতক্ষণে নিশ্চয়ই আপনার কিসমিস তৈরি শেষ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কিসমিস কিভাবে সংগ্রহ করবেন? পরিষ্কার বয়ামে মুখ আটকিয়ে দুই মাস পর্যন্ত ভালো রেখে খাওয়া সম্ভব। আর এর বেশি সময় রাখতে হলে কাচের বয়ামে সংরক্ষণ করতে হবে। তবে কিসমিস সর্বাধিক ৬ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ কয়া যায়, তবে সেটি ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে হয়।

শুকনা কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা । কিসমিসের উপকারিতা

মানবদেহে প্রায় হাজারের বেশি উপকার করে থাকে কিসমিস। এর মধ্যে সবথেকে উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। 

১) কিসমিস শরীরের আয়রনের ঘাটতি দুর করে এবং রক্তে লাল কনিকার বৃদ্ধি করে। তবে কিসমিস ভিজিয়ে খেলে শুকনা কিসমিসের থেকে বেশি উপকার পাবেন।

২)  কিসমিস ভেজানো পানি মানব দেহের রক্ত পরিষ্কার করতে অসামান্ন অবদান রাখে।

৩) নিয়মিত কিসমিস ভিজানো পানি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অ্যাসিডিটি তদুর হয় কোনো ঔষধ ছাড়াই।

৪) শুধু কিসমিস খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।

৫) শুধু কিসমিস খেলে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ পাওয়া যায়। পাওয়া যায় প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সহজে রোগমুক্ত করে থাকে।এছাড়াও কিসমিসে প্রচুর আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার উপস্থিত থাকে।

৬) উচ্চ রক্ত চাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে। মানব শরীরে রক্ত সল্পতা দুর করে।

৭) খাদ্য গ্রহণের পর তা হজম করার শক্তি বাড়িয়ে তোলে।

আরও পড়ুনঃ

৮) যেকোনো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৯) মানব শরীর দূষণ মুক্ত রাখতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত কিসমিস খেতে হবে।

১০) শরীরে প্রচুর শক্তি যোগায় এবং যৌন শক্তিতে চাঙ্গা করে তোলে।

১১) পরিমাণ মতো কিসমিস স্বাস্থ্য রাখে ফিট।

কিসমিস খাওয়ার অপকারিতা । কিভাবে কিসমিস খাবেন না

কোনোকিছুই প্রয়োজনের থেকে অতিরিক্ত কিছু ভালো না।

তেমনই খুব বেশি পরিমাণ কিসমিস খআওয়া ঠিক নেই। যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা ভুলেও অতিরিক্ত কিসমিস খাবেন না।

কিসমিস খেলে ওজন বাড়ে। সুতরাং বুঝে শুনে পরিমাণ মতো কিসমিস খাবেন।

আরও পড়ুনঃ রমজানে সাহরি ইফতারিতে যা থাকা উচিত

এছাড়া কিসমিসে খুব বড় ধরনের কোনো ক্ষতি বা অপকারিতা নেই।

কিসমিস সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন উত্তর । FAQS

শুধু কিসমিস খাওয়া কি স্বাস্থ্যের প্রতি ক্ষতিকর?

না। বরং শুধু কিসমিস খাওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক অনেক উপকারী।

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা?

কিসমিস খাওয়ার উপকারিতা হচ্ছে অনেক। উপরের সম্পূর্ণ ব্লগটি পড়লেই কিসমিসের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।

প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত?

একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের গড়ে মোট হচ্ছে প্রায় ৩০ – থেকে ৪০ পিস কিসমিস খাওয়া উচিত।

শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়?

সবথেকে বেশি উপকার হচ্ছে শুকনা কিসমিস খাওয়ায়। কিসমিস হচ্ছে আমরা সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়ানোর জন্য খাই।

কিন্তু প্রত্যেকের শুকনো কিসমিস খাওয়া দরকার।

কিসমিস কইভাবে তৈরি হয় । সর্বশেষ

আজকের পোষ্টে আমরা কিসমিস কি, কিসমিস তৈরি করতে কি কি লাগে/ উপকরন, কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় এবং কিসমিস এর সকল উপকারি এবং অপকারি দিক সম্পর্কে জেনেছি।

আরও জেনেছি যৌন জীবনে কিসমিস কি ভুমিকা রাখে।জানলাম কিসমিসে কি শক্তি এবং কোন কোন ভিটামিন পাওয়া যায় এই সব বিষয়ে বিস্তারিত।

আশা করছি এই বিষয়ে আর কিছু অজানা নেই। এরপরেও কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানান।

কমেন্টে আপনাদের উত্তর দেওয়া হবে অতি তারাতারি।

নিয়মিত বিভিন্ন ব্লগ পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট। চোখ রাখুন আমাদের ব্লগের অফিসিয়াল ফেসবুক ব্লগ পেজে

1 thought on “কিসমিস কিভাবে তৈরি হয় । শারীরিক স্বাস্থ্যে কিসমিসের ভুমিকা”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.