২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম ( নমুনা বক্তব্য সহ)

১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাঙ্গালী জাতির জীবনে এক অন্যতম দিন। কারণ, ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস। তাই ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম জানবো।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “২৬ শে মার্চ এর বক্তব্ব দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)” এ।

আজকের পোষ্টে আমরা ২৬ শে মার্চ বক্তব্যের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়, ২৬ শে মার্চ বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম সহ ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার জন্য একটি নমুনা বক্তব্য দেখবো।

২৬ শী মার্চ বক্তব্যের ক্ষেত্রে লক্ষণীয়

শুধু স্বাধীনতা দিবসে উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সময় সবার আগে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার বক্তব্যের সময় যেন খুব কম হয়।

এতে করে আপনার বক্তব্য গুছিয়ে বলতে যেমন সহজ হবে তেমন শ্রোতারা আপনার কোথায় ব ইরক্ত হবে না। আর উপস্থিত বক্তব্য সাধারণত অনেক কম সময়ের হয়ে থাকে।

আমারা যারা কোনও বিষয়ে বক্তব্য দেই তখন আমরা অল্প কথার মধ্যে সেই কথাটি গুছিয়ে বলতে চেষ্টা করি না। তাই আমাদের বক্তব্য সুন্দর হয় না।

এজন্য আপনি যে বিষয়ে বক্তব্য দিবেন সেই বিষয়কে আপনার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্যে শুরু থেকে শেষ সংক্ষেপে উল্লেখ করতে হবে।

এরপর আপনার খেয়াল রাখতে হবে আপনি যে বিষয়ে বক্তব্য দিবেন সেই ঘটনার সকল তারিখ এবং সাল উল্লেখ করতে হবে। এতে বক্তব্যের মান কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

আপনি ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলেন, কিন্তু আপনি ২৬ শে মার্চ সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা থাকলো না। তাহলে বক্তব্য আপনার জন্য না।

মনে রাখবেন, কোনও বক্তব্য মুখস্তের কোনও বিষয় না। তাই আপনাকে অবশ্যই ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার আগে এই বিষয়ে জানা শোনা থাকতে হবে।

এবার আপনাকে সুন্দর করে গুছিয়ে বলার জন্য প্রয়োজন হলে একদিন আগে কয়েকবার নিজে নিজে প্রাকটিস করতে হবে।এতে জড়তা কাটার পাশাপাশি গুছিয়ে বলা সহজ হবে।

মঞ্চে ওঠার পরে আপনার বক্তব্যের শুরু থেকে সবাইকে বাধ্য করতে হবে আপনার কথা শোনার জন্য। তাই আপনাকে অঙ্গভঙ্গি আবেগ দিয়ে থেমে থেমে মনের গভির থেকে কথা বলতে হবে।

বক্তব্যকে আকর্ষণীয় করতে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছেঃ

  • শুরুতে দুই-এক লাইন বাণী দিয়ে শুরু করতে হবে।
  • বিষয়টিকে প্রথম থেকে শেষ অব্ধি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গুছিয়ে বলতে হবে।
  • থেমে থেমে, স্পষ্ট ভাষায় বলতে হবে। 
  • কথা বলার সময় স্রোতাদের দিকে খেয়াল রেখে কথা বলতে হবে।
  • তারিখ, সাল স্পষ্ট করে বলতে হবে।
  • বেশি সময় নেওয়া যাবে না। (২ থেকে ৫ মিনিট)
  • কি হয়েছে, কেন হয়েছে  আমাদের করনীয় কি তা বুঝ বুঝে উল্লেখ করতে হবে।

২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার প্রথমে করনীয়

আপনি যখন বক্তব্য দিতে শুরু করবেন তখন মহা গ্যানিদের দুই লাইন বানী দিয়ে শুরু করতে পারেন। এরপর মহান আল্লাহ তায়ালার নামে শুরু করতে হবে।

প্রথমেই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদদের। এরপর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া সকলকে।

২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়া শুরু করে আপনাকে প্রথমে শুরু করতে হবে ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দুই থেকে তিন লাইনের মধ্যে বলে আসতে হবে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে।

১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহর পর্যন্ত আপনাকে বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হবে ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর ৬ দফা, ৬৯ এর নির্বাচন।

এরপরে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের কথা।

আরও পড়ুনঃ  ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য । ২৬ শে মার্চ নিয়ে কিছু কথা

এরপর ২৫ মার্চ রাতে অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা উল্লেখ করতে হবে।

ঘটনাক্রমে বঙ্গবন্ধুকে আটক করার কথা উল্লেখ করে বলতে হবে, ‘এরপরে শুরু হয় মুক্তি যুদ্ধ। চলতে থাকে দীর্ঘ নয় মাস। এই যুদ্ধের কথা আমরা সবাই জানি।

এরপরে অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে ৩০ লক্ষ জীবনের বিনিময়ে ২ লক্ষ মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জন করি মহান স্বাধীনতা। পৃথিবীর ভূখণ্ডে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

এই পর্যন্ত বলার পরে স্বাধীনতা দিবসে আমাদের কি শপথ নেওয়া উচিত, কিভাবে আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে পাড়ি তা নিয়ে কয়েক লাইন বলতে হবে।

আর এভাবেই স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য বা ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য সমাপ্ত করতে হবে।

উপরের সম্পূর্ণ লেখাটি যদি আপনি পরে থাকেন তাহলে এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য কিভাব এবং কেমন হওয়া উচিত।

২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্য

শুরু করছি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এর বলা অমূল্য দুটি লাইন দিয়ে,

তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দেব”।

কথাটি বলেছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু।

শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে।

উপস্থিত আমার শিক্ষক, গুরু জনদের প্রতি আমার সালাম এবং স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।

আজ, ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস। আজকের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রান হারানো সকল শহীদদের।

একই সাথে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ভাষা আন্দোলন এবং বিভিন্ন সময়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া সকল বীর শহীদদের প্রতি।

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট যখন পাকিস্তান এবং ভারত আলাদা হয়ে যায় তখন তৎকালীন পাকিস্তানকে দুইটি ভাগে ভাগ করা হয়। তখন পূর্ব পাকিস্তান – ই আজকের বাংলাদেশ।

দেশ স্বাধীনের সুধু শুরু ১৯৮৭ সালের ১৬ আগস্ট থেকেই। এরপর ভাষা আন্দোলন সংগঠিত হয় ১৯৫২ সালে।

এরপর ৬৬ এ ৬ দফা আন্দোলন হয়। ৬৯ এর এর গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০ এর সাধারণ নির্বাচন। এর প্রত্যেকটি ছিলও দেশ স্বাধীনের একেকটি সার্থক পদক্ষেপ।

১৯৬৯ এর নির্বাচনে আওয়ামী মুসলিম লীগ বিজয় অর্জন করলেও পশ্চিম পাকিস্তান সরকার যখন ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করেন তখন বঙ্গবন্ধু সহ সকলে বুঝে যায়।

এরপর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে ১৮ মিনিটের একটি ভাশন দেন জাতির উদ্দেশ্যে।

এরপর-ই মূলত বাংলার আপামর জনসাধারণ মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু অরেন।

এরপর ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ যখন পশ্চিম পাকিস্তান সরকার দেশের ঘুমন্ত নিরীহ মানুষের উপর হামলা চালান তখন রেডিও যোগে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেন।

এরপর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু আটক হলে দেশের জনগন সেই মুহূর্তে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে।

এরপরের ঘটনা আমাদের সবার জানা। নানান বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা মহান বিজয় অর্জন করি।

বাংলাদেশ নামের একটি নতু রাষ্ট্রের জন্ম হয়।

স্বাধীনতা দিবসে আমাদের করনীয়

একটি প্রবাদ আছে যে, স্বাধীনতা অর্জন করা যত কঠিন তা রক্ষা করা তার থেকে বেশি কঠিন।

তাই আজ এই মহান স্বাধীনতা দিবসে আমাদীর সপথ করা উচিত আমরা আমাদের জীবনের বিনিময়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করবো।

আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্ট বক্তব্য

এবং একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে আমাদের যা করনীয় তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো। দেশ ও দশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত রাখবো।

স্বাধীনতা যুদ্ধে মহান শহীদদের আত্মত্যাগ আমরা কোনদিনও ভুলতে পারবো না। ইতিহাসে আপনাদের নাম লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে।

এই বলে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। জয় বাংলা, ধন্যবাদ সবাইকে।

২৬ শে মার্চ বক্তব্য দেওয়া সম্পর্কে সর্বশেষ

আজকের পোষ্টে আমরা জেনেছি ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।

আরও পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৩ (নমুনা রচনা সহ)

এরপর আমরা ২৬ শে মার্চ উপলক্ষে একটি নমুনা বক্তব্য দেখেছি।

আরও পড়ুনঃ ২১ শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাস । ২১ শে ফেব্রুয়ারি স্ট্যাটাস

আশা করছি আজকের পোস্ট থেকে ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম এবং একটি নমুনা বক্তব্য সঠিক ভাবে জেনেছেন।

এরপরেও এই বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।

এবং এই সম্পর্কে আরও পোস্ট পড়তে আমাদের National Category ভিজিট করুন।

সকল আপডেট সবার আগে পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

3 thoughts on “২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম ( নমুনা বক্তব্য সহ)”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.