জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ বিস্তারিত

দেশের ছয়টি সরকারি ব্যাংকের মধ্যে জনতা ব্যাংক অন্যতম একটি সরকারি ব্যাংক। দেশের স্থান ভেদে জনতা ব্যাংকের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। আজকে আমরা জানবো জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ জনতা ব্যাংক সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।

আধুনিকতার এই যুগে ব্যাংক একাউন্ট লাগে যেন প্রতি মুহূর্তে। সব ব্যাংক মিলিয়ে দেশে প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার ব্যাংক একাউন্ট তৈরি হয়। এবং এই সব একাউন্তের বড় একটি সংখ্যা জনতা ব্যাংক একাউন্টের হয়ে থাকে।

সকল ব্যাংকের মতো জনতা ব্যাংকে লেনদেন কিংবা ডিপোজিট করার আগে অবশ্যই একাউন্ট খুলতে হয়। তাই আজকে আমরা জানবো জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম, অনলাইনে জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার উপায়, জনতা ব্যাংকের একাউন্ট ধরন সহ বিস্তারিত সকল তথ্য।

Janata Bank Account Type

জনতা ব্যাংকে সাধারণত ৪ ধরনের একাউন্ট খোলা যায়। আর এই চার ধরনের একাউন্ট খুলতেই প্রায় সেম ডকুমেন্টস লাগে। শুধু মাত্র দুই একটি ডকুমেন্টস ছাড়া। দেখে নেওয়া যাক জনতা ব্যাংক একাউন্ট কয় ধরনের হয়ে থাকেঃ

১) জনতা ব্যাংক ব্যক্তি হিসাব খোলা একাউন্ট

২) জনতা ব্যাংক অ- ব্যক্তিক হিসাব বা একাউন্ট

৩) সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাব

৪) স্থায়ী আমানত, FDR সঞ্চয়ী এবং বিশেষ স্কিম একাউন্ট বা হিসাব।

জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য করণীয়

অন্যান্য ব্যাকের মতো জনতা ব্যাংকেও একাউন্ট খোলার জন্য একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়। ফর্মে যেসকল তথ্য চাওয়া হয় সেসকল তথ্য পূরণ করতে হয়। একই সাথে ফর্মের সাথে যেসকল ডকুমেন্ট বলা হয় তা জমা দিতে হয়।

আপনি জনতা ব্যাংকের যে শাখায় একাউন্ট খুলবেন সেই শাখা থেকে আপনাকে একাউন্ট খোলার জন্য ফর্ম গ্রহণ করতে হবে। সেই ব্যাংকের শাখায় গিয়ে একাউন্ট খোলার কহতা বললে ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে একটি ফর্ম প্রদান করবে। এবং ফর্ম পূরণ সম্পর্কিত দিক নির্দেশনা দিবেন।

জেনে নিন সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায়

আপনি চাইলে একবারেই যদি যাবতিওকাগজ পত্র সাথে নিয়ে যান তাহলে একবারেই আপনি একাউন্ট খুলে আসতে পারবেন। তাই জেনে নেওয়া যাক জনতা ব্যাংকের একটি একাউন্ট খুলতে সাধারণত কি কি দরকার হয়।

জীবন বীমা কি কত প্রকার ও কি কি

১) ব্যক্তির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

২) সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

৩) স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা।

৪) নমিনীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

৫) নমিনীর স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা।

৬) বাসা বাড়ির বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের কাগজ। ( বিশেষ ক্ষেত্রে)।

৭) সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একাউন্ট হলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সকল তথ্য ডকুমেন্ট।

৮) বেসরকারি কিংবা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের হলে ট্রেড লাইসেন্সের কপি, টিন সার্টিফিকেট সহ যাবতীয় সকল কাগজ পত্র।

ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি

যেভাবে খুলবেন জনতা ব্যাংক একাউন্ট

আপনার একাউন্টের ধরন বুঝে যাবতীয় কাগজ পত্র সাথে নিয়ে ব্যাংকে গেলে একজন ব্যাংক কর্মকর্তা আপনার ফর্ম পূরণ করে দিবেন। তবে সকল তথ্য মুখে বলেও আপনাকে সাহায্য করতে হবে।

এছাড়াও মনে রাখতে হবে নতুন একাউন্ট খোলার সময়ে অন্যান্য ব্যাংকের মতো জনতা ব্যাংকেও ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত লেগে থাকে। এই টাকা আপনার নতুন খোলা ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়ে যাবে। তাই সাথে কিছু তাকে নিয়ে ব্যাংকে যাবেন ব্যাংক একাউন্ট খোলার উদ্দেশ্যে।

 প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব ?

তবে মনে রাখবেন সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি কার্ড। আর আপনি যদি কিছুদিন আগে এনআইডি কার্ডের জন্য ফর্ম পূরণ করছেন এবং ছবি তুলে থাকেন তাহলে আপনার ফর্ম নাম্ব্র দিয়ে অনলাইন থেকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র উঠিয়ে নিতে পারবেন।

 অগ্রণী ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত

এবং অনলাইন থেকে তোলা জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়েও ব্যাংক একাউন্ট খোলা যায়। অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রবা এনআইডি বের করতে এখানে ক্লিক করুন।

আর যদি আপনার বয়স ১৮ বছর হয়ে থাকে কিন্তু ভোটার হতে পারেননি। এমন হলে আজই অনলাইন থেকে নতুন ভোটার হয়তে নিতে পারেন।  সামান কিক্সছুদিনের মধ্যে অনলাইন কপি হাতে পাবেন এবপ্নগ তার কিছুদিনের মধ্যে অরজিনাল কপি হাতে পাবেন।

সরাসরি জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে পারলাম। অনেকে আবার অনলাইনে জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চান। তাই চলুন এখন অনলাইনে জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং উয়ায় জেনে নেয়া যাক।

একাউন্ট খোলা হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে তখনই অথবা এক দুই দিনের মধ্যে চেক বই প্রদান করা হবে। চেকে উল্লেখিত নাম্বার আপনার একাউন্ট নাম্বার। জনতা ব্যাংক চেক লেখার নিয়ম এখান থেকে জেনে নিন।

জনতা ব্যাংক চেল লেখার নিয়ম

অনলাইনে জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার উপায় এবং নিয়ম

বর্তমানে অনলাইনে প্রায় সব ব্যাংকের একাউন্টই খোলা যায়। জনতা ব্যাংক ও তার মধ্যে অন্তর্গত। জনতা ব্যাংকের একাউন্ট অনলাইনের মাধ্যমে খোলার জন্য জনতা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে খুলতে হবে। তার আগে জেনে  নেওয়া যাক অনলাইনে জনতা ব্যাংক খোলার উপায় সম্পর্কে।

বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক কয়টি?

সরাসরি জনতা ব্যাংক একাউন্ট খুললে যেসব ডকুমেন্ট লাগবে অনলাইনেও একই ডকুমেন্ট লাগবে। অনলাইনে একাউন্ট খোলার আবেদন করার পূর্বে আপনাকে সকল ডকুমেন্ট স্কান করে যে ডিভাইসে থেকে একাউন্ট খুলবেন সেই ডিভাইসে রাখতে হবে।

এরপর জনতা ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে একাউন্ট খুলুনে রবেশ করে পর্যায়ক্রমে সকল স্টেপ পূরণ করতে হবে। এবং আপনাকে একটি নতিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে নির্ধারিত একটি সময়ের মধ্যে ব্যাকে গিয়ে সিগনেচার করতে হবে এবং ছবি জমা দিতে হবে। আর চেক বই নিজ দায়িত্বে সংগ্রহ করতে হবে।

কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম । কৃষি ব্যাংক লোন

নতুন একাউন্ট খোলার সময় যে টাকা প্রদান করতে হয় সেই টাকা প্রদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

প্রয়োজনে জনতা ব্যাংকের সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করে জেনে নিতে পারবেন।

অনলাইনে জনতা ব্যাংক একাউন্ট খুলতে এখানে ক্লিক করুনঃ Janata Bank Account Open 

জনতা ব্যাংকের সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার নাম্বারঃ 

+88 02-223380029, +88 02-223380042, +88 02-223385042, +88 02-223386142, +88 02-223350193

এর যেকোনো একটি নাম্বারে কথা বলে সকল বিষয়ে আপডেট জেনে নিতে পারবেন। ব্যাংক খোলা থাকার মুহূর্তে কল দিয়ে জেনে নিবেন।

সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম 

জনতা ব্যাংক ডিপিএস সিস্টেম

অন্যান্য ব্যাংকের মতো জনতা ব্যাংকও ৫ ধরনের ডিপিএস সিস্টেম চালু রেখেছে। দেশের যেকোনো নাগরিক চাইলেই জনতা ব্যাংক একাউন্ট খলার নিয়ম অনুযায়ী একাউন্ট খোলার পর ৫ ধরনের ডিপিএস এর যেকোনো একটি করতে পারেন।

জেনে নেওয়া যাক জনতা ব্যাংক ডিপিএস সমূহঃ

১) অনিবাসী পেনশন স্কিম ডিপিএস

২) জনতা হজ্ব ডিপোজিট স্কিম ডিপিএস

৩) জনতা ডিপোজিট স্কিম ডিপিএস

৪) জনতা ব্যাংক স্কুল ব্যাকিং ডিপিএস

৫) জনতা ব্যাংক নারী প্রকল্প ডিপিএস

উপরের পাঁচটি ডিপিএস করলে ভিন্ন মেয়াদের করতে পারেন। তবে সবগুলো ডিপিএস সরবচ্চ ৫ বভহর মেয়াদের করতে পারবেন। ৫০০ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মাসিক জমা অনুযায়ী এই সবগুলো ডিপিএস করতে পারেন।

অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২২

এই ডিপিএস এ সুদের হার দেওয়া হয়ে থাকে সাড়ে ৮% বা ৮.৫ % সুদ দেওয়া হয়ে থাকে। এই ব্যাংকে ডিপিএস করার একটা বড় সুবিধা হচ্ছে মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিনের মধ্যে যেকোনো সময়ে ডিপিএস এর টাকা জমা দেওয়া যায়।

জনতা ব্যাংক সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর

জনতা ব্যাংক কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৯৭২ সালে জনতা ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় হয়।

অনলাইনে জনতা ব্যাংকের একাউন্ট করা যায়?

হ্যাঁ অনলাইনে সরাসরি ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে শর্ত এবং নিয়ম অনুযায়ী একাউন্ট খোলা যায়।

জনতা ব্যাংক কি সরকারি ব্যাংক?

হ্যাঁ, জনতা ব্যাংক সরকারি এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সরকারি ব্যাংক।

জনতা ব্যাংকের মোট কয়টি শাখা আছে?

সারা দেশে ৯৪০ টির মতো শাখা আছে এবং দেশের বাহিরে হচ্ছে আরব আমিরাতে এই ব্যাংকের ৪ টি  শাখা আছে।

জনতা ব্যাংকের সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার নাম্বার কি?

জনতা ব্যাংকের সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করার নাম্বারঃ 

+88 02-223380029, +88 02-223380042, +88 02-223385042, +88 02-223386142, +88 02-223350193

এর যেকোনো একটি নাম্বারে কথা বলে সকল বিষয়ে আপডেট জেনে নিতে পারবেন। ব্যাংক খোলা থাকার মুহূর্তে কল দিয়ে জেনে নিবেন।

কিভাবে দেশের অর্থ বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখছে জনতা ব্যাংক?

জনতা ব্যাংক একটি সরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক।

তাই সাধারণ ভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সিস্টেম অনুযায়ী ব্যাংকটি দেশের অর্থ বৃদ্ধি কিংবা অর্থনীতিতে ভুমিকা রাখছে।

এজেন্ট ব্যাংকিং কি ? কিভাবে করবেন এজেন্ট ব্যবসা

জনতা ব্যাংক নিয়ে সর্বশেষ

সেই ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জনতা ব্যাংক গ্রাহিউকদের জন্য একের পর এক সেবা দিয়ে যাচ্ছি বিরতিহিন ভাবে।

একই সাথে নিয়মিত বাড়িয়ে চলছে তাদের সেবা কার্যক্রম।

অনলাইন অফ্লাইন কিংবা সরাসরি সকল সেবা নিশ্চিত করছেন গ্রাহকদের।

দেশের বৃহত্তম ২য় সরকারি ব্যাংক জনতা ব্যাংক লিমিটেড। দেশ ও জনগনের আস্থার প্রতিদান দিয়ে আসছে প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত।

বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট। চোখ রাখুন আমাদের ব্লগ শেয়ারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে। 

3 thoughts on “জনতা ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ বিস্তারিত”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.