স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৩ (নমুনা রচনা সহ)

প্রিয় পাঠক, স্বাগত জানাচ্ছি “স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা লেখার নিয়ম ও একটি নমুনা রচনা” প্রকাশিত আজকের এই পোষ্টে।

২৬ শে মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস। এই দিবস উপলক্ষে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।

এর মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতা অন্যতম একটি ইভেন্ট হিসেবে গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

আজকের পোষ্টে আমরা স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা লেখার নিয়ম জানবো। এবং শেষ একটি নমুনা রচনা দেখবো।

চলুন, জেনে নেওয়া যাক মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা -য় লক্ষণীয় এবং করনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত।

স্বাধীনতা দিবসে রচনা লেখার নিয়ম

প্রিয় পাঠক, আপনি যদি স্বাধীনতা দিবসে প্রতিযোগিতা মুলক রচনায় অংশ গ্রহণ করেন তাহলে রচনা লেখার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিশেষ টেকনিক অবলম্বন করতে হবে।

যেমন, রচনায় যতটা সম্ভব নির্দিষ্ট সীমারমদ্ধ রেখে সব ইসয়কে ফুতিয়ে তুলতে হবে তারিখ এবং সাল সহ।

প্রতিযোগিতার রচনায় রচনা লেখার জন্য  নির্দিষ্ট সময় দেওয়া থাকে তাই আপনাকে সেই সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য ( নমুনা বক্তব্য সহ)

হাতের লেখা খুব সুন্দর হতে হবে বিষয়টা এমন না। তবে হাতের লেখা স্পষ্ট হতে হবে।

শুরু থেকে শেষ সম্পূর্ণ লেখাটি আপনাকে অবশ্যই তত্থবহুল রচনা লিখতে হবে।

আমরা অনেকে রচনা লেখার ক্ষেত্রে অনেক সুন্দর করে শুরু করলেও সময়ের জন্য শেষ দিকে গিয়ে চাপিয়ে দেই। অর্থাৎ গোঁজামিল দিয়ে লিখে আসি।

এটা করা যাবে না। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একই ধাছে লিখতে হবে।

রচনাটি কত শব্দের হবে তা যদি নির্ধারিত করে দেওয়া হয় তার পরেও তার থেকে কিছু শব্দ হলেও আপনাকে বেশী লিখতে হবে।

রচনা লেখার সময়ে কোনও বিষয়ের সাল বা তারিখ ভুলে গেলে ঐ বিষয়টি লেখার থেকে না লেখাই ভালো। কারণ, আপনার সম্পূর্ণ রচনাটি হতে হবে তথ্যবহুল।

আপনার রচনা লেখার শুরু থেকে ভুমিকা থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি হেডিং এ ভাগ হবে।

অর্থাৎ সম্পূর্ণ রচনাতি লিখতে আপনাকে বেশ কয়েকটি শিরোনামে উল্লেখ থাকতে হবে।

এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা ২০২৩ এ রচনা লেখার ক্ষেত্রে কি কি লক্ষ্য রাখতে হবে।

বার চলুন, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা -য় রচনা লেখার মতো একটি নমুনা রচনা দেখে নেওয়া যাক।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতার নমুনা রচনা

ভুমিকা থেকে শুরু করে রচনাটি শেষ করার ক্ষেত্রে আপনাকে কয়েকটি শিরোনামে ভাগ করে লিখতে হবে।

আপনাকে শুধু মাত্র একটি ধারণা দেওয়ার জন্য একটি রচনা লিখছি।

তবে, আপনাকে অবশ্যই প্রতিযোগিতার  জায়গায় এর থেকে আরও অনেক তথ্যবহুল এবং দীর্ঘ রচনা লিখতে হবে। এই রচনা শুধু মাত্র আপনাকে একটি ধারণা দেওয়ার জন্য লেখা।

আরও পড়ুনঃ  ২৬ শে মার্চ এর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য । ২৬ শে মার্চ নিয়ে কিছু কথা

এই রচনার প্রত্যেকটি প্যারার সাথে আপনি আরও বেশী বেশী তথ্য যুক্ত করে আপনার রচনাটি লিখবেন। চলুন তাহলে একটি নমুনা রচনা দেখে নেওয়া যাক।

বলে রাখা ভালো যে, এই রচনাটি যদি (মহান স্বাধীনতা দিবস) শিরোনাম ব্যতিত অন্য কোনও শিরোনামে আসে তাহলেও নাম পরিবর্তন করে এই রচনা থেকে আপনি সম্পূর্ণ লেখাটুকু নিতে পারবেন।

চলুন নমুনা রচন্তা দেখে নেওয়া যাক।

মহান স্বাধীনতা দিবস

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বজ্র কণ্ঠে ভেসে আসলো স্বাধীনতার ঘোষণা। নেতা মুজিব হলেন গ্রেপ্তার। এরপর দীর্ঘ নয়টি মাস গেলো। গেলো ৩০ লক্ষ প্রাণ। এই কি মহান স্বাধীনতার গল্প ?

না। মহান স্বাধীনতা এসেছে বহু বছরের শোষণ ও নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তি পেতে করা প্রতিবাদ থেকে।

আরও পড়ুনঃ  ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস কেন ? ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন

স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ শুরু ১৯৪৭ সাল থেকে। যার জয়ী সমাপ্তি হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে। ২৩ বছরের ইতিহাস ই গোটা বাঙ্গালী জাতির জীবনে স্বাধীনতার এক অনবদ্দ বাস্তব কাহিনি।

স্বাধীনতার সূচনা

১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ আলাদা হওয়ার পর পাকিস্তান দুটি অংশে ভাগ হ্য়। পশ্চিম পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তান। আজকের বাংলাদশ তখন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত ছিলও।

তখন থেকেই পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলার জনগনের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের জনগনের সাথে বৈষম্য শুরু করেন। পূর্ব পাকিস্তানের জনগন হয় ত্যাগের শিকার যা ভোগ করতে শুরু করে পসিম পাকিস্তান।

শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকুরি, শিল্প প্রতিষ্ঠান, কৃষি থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বৈষম্য গড়ে তোলে।

এমন সব বৈষম্যের শিকার হতে থাকে পূর্ব বাংলার জনগণ। কিন্তু দিন যত যাচ্ছিল পশ্চিম পাকিস্তান সরকার তত বেশি বেপরোয়া হতে থাকে। এভাবে দিন যেতে থাকে।

এরপর বিভিন্ন ভাবে পূর্ব বাংলার জনগন প্রতিবাদ করতে চাইলেও পাকিস্তান সরকার তার স্থানীয় সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে টা বন্ধ করে দেন।

কিন্তু এরপর ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনে বাঙ্গালী চরম ভাবে প্রতিবাদে নেমে পরে।

স্বাধীনতা দিবসে ১৯৫২ সালের অবদান

১৯৪৭-৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলা সফরে এসে একটি বক্তব্যে বলেন উর্দুই হবে এদেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। তৎক্ষণাৎ সেখানে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।

প্রতিবাদের অংশ হিসেবে শভা ত্যাগ এবং স্তেজ ভাংচুর করে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা।

এর পরে ১৯৫৪১ এর পফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সরকারের আরেক ব্যক্তি পূর্ব বাংলা সফরে এসে একই কথা বলেন।

এরপর তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ঢাকর রাজপথে নামে সর্বস্তরের জনগণ।

ছাত্রদের এই শভা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তখনই পুলিশের গুলিতে যখন কয়েকজন ছাত্র নিহত হন তখন সবার মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়।

বাংলার আপামর জন সাধারণ সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথে নেমে আসে।

তখন সরকারি বেসরকার সব অফিস আদালত বন্ধ করে দেওয়া হয়।

প্রকৃত অর্থ স্বাধীনতা পাওয়ার আগে যতগুলো আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে ঠিক সবগুলোই স্বাধীনতা দিবসের পিছনে ভুমিকে রেখেছে।

এর অন্যতম কারণ হচ্ছে একটি যুদ্ধ কহকন একবার শুরূ হতে পারে না।

স্বাধীনতায় ১৯৬৬ এর অবদান

যখন একের পর এক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে পূর্ব বাংলার জনগ্ন তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলার আপামর জন সাধারণ ৬ দফা দাবী করেন।

কিন্তু পাকিস্তান সরকার এর কোনও পরয়া না করে গণহারে নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে সাধারণ মানুষদের আতংকে রাখতে শুরু করলেন।

বাংলার আপামর জন সাধারণকে সাথে নিয়ে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের  নেতারা একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন দেশকে স্বাধীন করতে।

কিন্তু বারবার পাকিস্তান সরক্রের পৃষ্ঠপোষক পুলিশ প্রসাশনের দ্বারা গ্রেপ্তার, গুলিবর্ষণ, ক্যাদানে গ্যাসে আক্রমনিত হতেই থাকে।

পাকিস্তান সরকার জেল, জুলুম সহ সব রকমের অত্যাচার, বৈষম্য আরও বাড়িয়ে দেন। এভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে আরও একধাপ এগিয়ে যায় পূর্ব বাংলা।

স্বাধীনতায় ১৯৬৯ ও ৭০ এর অবদান

দেশ যখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পৌঁছে যায় তখন শেখ মুজিবের নেতৃত্বে দেশের আপামর জনগন গভর্নরের কারজালয় ঘেরাও করেন।

সেখানে পুলিশের সাথে জনগনের মারাত্মক রকম হাতাহাতি এবং গুলিবর্ষণ করে পুলিশ।

এটা তীব্র আকারে খেপে যায় বাঙ্গালী জনগন। এর প্রেক্ষিতে ১৯৭০ এর নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসে।

যেখানে ৭০ এর নিরবাচইনে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের শেখ মুজিবুরর রহমান আওয়ামী মুসলিম লীগ নিরিঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে।

কিন্তু ১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী মুসলিম লীগ বিজয় অর্জন করলেও পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করেননি। বরং ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে শুরু করেন টালবাহনা।

আরও পড়ুনঃ  ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

শেখ মুজিব বুঝতে পারেন যে পশ্চিম পাকিসান সরকার এভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না।

তাই তিনি কোনও পূর্ব পরিকলনা ছাড়াই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন।

এই ভাষণ ই জনসম্মুখে যুদ্ধ শুউর আগে শেষ বক্তব্য ছিলও শেখ মুজিবুর রহমানের। যেখানে তিনি সবকিছু উল্লেখক করে সবাইকে এক হয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।

এই ভাষণের মধ্য দিয়ে নেতা শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সকল মানুষকে অইক্কবদ্ধ করে যুদ্ধ পূর্ববর্তী দিক নির্দেশনা দেন।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ

চারিদিকে ভয়াবহ থম্থমে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আশপাশ শনা যাচ্ছে অল্পতেই দেশে পাকিস্তানিরা হামলা চালাবে।

ঠিক রাত ১২ টার আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেই রেডিও জগে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর কিছুক্ষনের মধ্যে তিনি আটক হন।

শুরু হয় মুক্তি যুদ্ধ। বাঙ্গাল দামাল ছেলেরা খুব শক্ত হাতে প্রতিবাদ রুখে দিতে সক্ষম হন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনিদের।

বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীনতা ঘোষণা দেন তখন গভীর রাত অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ এর প্রথম প্রহর ছিলও। তাই সেই থেকেই সধিনতা দিবস ২৬ শে মার্চ পালন করা হয়।

জাতীয় ভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ২৬ শে মার্চ হিসেবে ঘোষিত হয়।

এভাবেই স্বাধীনতা দিবস আসে। তবে স্বাধীনতা দিবসের প দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুধ হয়।

যে যুদ্ধে বাংলার আপামর জনগনের অংশগ্রহণ এবং প্রানের বিনিময়ে ১৯৭১ আলের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি।

উপসংহার । স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা

স্বাধীনতা দিবসের পিছনের ঘটনা আমাদের সবার জানা।কিন্তু আমাদের উচিত অর্জিত স্বাধীনতা কিভাবে রক্ষা করা যায় সেই বিষয়ে কাজ করে। সেই ভাবে নিজেদের প্রস্তুত করে তোলা।

আরও পড়ুনঃ ১৭ ই মার্চ জাতীয় শিশু দিবস রচনা (লেখার নিয়ম, নমুনা রচনা সহ)

আমাদের মনে রাখা উচিত যে, “স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা তিকিয়ে রাখা বড্ড কঠিন”।

তাই আমাদের উচিত দেশে স্বাধীনতা রক্ষায় নিজেদের দক্ষ এবং শক্তিশালি জনসম্পদে নিজেদের পরিণত করা। তবেই স্বাধীনতা দিবসের মর্যাদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা নিয়ে সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক, আশা করছি আমাদের আজকের পোস্ট থেকে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা -য় রচনা লেখার নিয়ম এবং একটি নমুনা রচনা দেখলাম।

আশা করছি, স্বাধীনতা দিবস রচনা লেখার নিয়ম সম্পর্কে এই পোস্ট থেকে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এছাড়া এই পোস্ট থেকে মহান স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক বিষয়ে জানটে পেরেছেন।

এই বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানান।

আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা । মহান বিজয় দিবস রচনা লেখার নিয়ম

স্বাধীনতা এবং এই সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়তে আমাদের জাতীয় ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে আমাদেরর ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.