রহমত মাগফিরাত নাজাত এর দোয়া ও করনীয়

Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam

প্রিয় পাঠক, স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের পোস্ট “ রহমত মাগফিরাত নাজাত এর দোয়া সহ সকল আমল ” এই পোষ্টে। এই পোষ্টে রমজানের তিন দশক রহমত মাগফিরাত এবং নাজাত এর বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।

মুসলিমদের ইবাদতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। ৩০ টি রোজার এই মাসের ইবাদত হাজার মাস ইবাদতের চেয়ে উত্তম।

তাই রহমত মাগফিরাত নাজাতের মাস রমজান রোজার এই তিনটি ভাগ সম্পর্কে আমাদের জানা একান্ত জরুরি।

আজকের পোষ্টে আমরা জানবো রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কিত সকল তথ্য। যেমন রমজানে রহমতের ১০ দিনের আমল, রহমতের ১০ দিন কোন দোয়া পড়তে হয়, মাগফিরাতের ১০ দিনের দোয়া, মাগফিরাতের দশকের রোজাদারের করণীয়, নাজাতের ১০ দিনের দোয়া সহ এই বিষয়ে বিস্তারিত।

রহমতের ১০ দিন

রহমত শব্দের অর্থ দয়া। রোজার প্রথম দশ দিন হচ্ছে রহমতের দশ দিন। অর্থাৎ এই দশ দিন আল্লাহ তার বান্দাদের উপর দয়া ও অনুগ্রহ প্রকাশ করতে থাকে।

এখন মনে হতে পারে আল্লাহ দয়া করতে চাইলে যেকোনো সময়ে করতে পারেন তাহলে এই নির্দিষ্ট ১০ দিন কেন?

মূলত রমজান মাস হচ্ছে শেখার মাস। দয়া প্রসঙ্গে আল্লাহ চান তার গুণে তার বান্দারা গুনান্নিত হয়ে সারা জীবন সেই সব গুণ বয়ে চলুক।

এই প্রসঙ্গে নবীজি বলেন…

“তোমরা আল্লাহর গুণে নিজেকে গুনান্নিত করো। যারা করতে পারবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে”। -(হাদিস)

এবার প্রশ্ন হতে পারে আল্লাহর গুনাবলি কিভাবে খুঁজে পাবো? আল্লাহর ৯৯ টি নাম আছে।

এই ৯৯ টি নামের অর্থ ই হচ্ছে একেকটি গুন।

রমজানের প্রথম দশ দিনে আমাদের উচিত আল্লাহর গুনাবলি নিজেদের মধ্যে আয়ত্ত করে তা সবসময় বাস্তবায়ন রাখত।

আল্লাহর ৯৯ টি নামের মধ্যে বেশ কয়েকটি নাম উল্লেখ করছিঃ

  • আর রাহমানঃ আল্লাহ অসীম দয়ালু।
  • আর রাহিমঃ আল্লাহ পরম করুণাময়।
  • আল ওয়াদুদঃ আল্লাহ অন্তত প্রেমময়।
  • আর রউফঃ আল্লাহ স্নেহশীল।
  • আল আজিজঃ আল্লাহ অতি মমতাময়।
  • আল কারিমঃ আল্লাহ অতি অনুগ্রহকারী।
  • আস সালামঃ আল্লাহ অতি শান্তিদাতা।
  • আল মুমিনঃ আল্লাহ অতিনিরাপত্তাদাতা।
  • আল মুহাইমিনঃ আল্লাহ সর্বোচ্চ রক্ষাকর্তা।
  • আল বাসিতঃ আল্লাহ করুণা বিস্তার কারী।
  • আল মুইজজুঃ আল্লাহ সম্মানদাতা।
  • আল লাতিফুঃ আল্লাহ করুণাকারী।
  • আল মুজিবঃ আল্লাহ প্রার্থনা কবুলকারী।
  • আর রাজ্জাকঃ আল্লাহ রিজিক দানকারী।
  • আল ওয়াসিউঃ আল্লাহ দয়া প্রসারকারী।
  • আল ওয়ালিয়্ঃ আল্লাহ অতি পরম বন্ধু।
  • আন নাফিউঃআল্লাহ কল্যাণকারী।
  • আল হাদিঃ আল্লাহ পরম পথের দিশারি।
  • আন নাসিরঃ আল্লাহ সাহায্যকারী।
  • আল হান্নানঃ আল্লাহ অতি করুণাশীল।
  • আল মান্নানঃ আল্লাহ অতি দয়ার্দ্র।

প্রিয় পাঠক, রমজানের রহমতের ১০ দিনের প্রধান আমল হচ্ছে উপরে উল্লেখিত আল্লাহর গুনাবলি সহ আল্লাহর আরও গুন নিজের মধ্যে আয়ত্ত করা।

আল্লাহ রমজানের দশ দিন তার বান্দাদের প্রতি অতি দয়া এবং অতি করুণা বর্ষণ করতে থাকেন।

এই দশ দিনে আল্লাহর একটি গুনও যদি আপনি আয়ত্ত করে গুণটি আপনার বাকি জীবনে নিজের মধ্যে ধরে রাখতে পারেন তবেই আপনি সফল কাম।

রহমতের দশ দিনের দোয়া । রহমত মাগফিরাত নাজাত

রহমতের দশ দিনের দোয়া হিসেবে আপনি সব রকমের ইবাদত বন্দেগি, তাওবা পড়া, কোরআন তিলাওয়াত করতে পারেন।

রমজানের রহমতের ১০ দিনের দোয়া বলতে আলাদা ভাবে কিছু নেই বললেই চলে।

আল্লাহর কাছে করুণা চাইতে হবে। দোয়া চাইতে হবে।

তবে অনেক অনেক দোয়ার মধ্য থেকে একটি দোয়া জেনে নেওয়া যাক, যেই দোয়াটি রহমতের ১০ দিন কোন দোয়া পড়তে হবে এমন প্রশ্নের উত্তর কিছুতে হলেও দিতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ যে আমল গুলো সহজে ইমানদারকে জান্নাতে নিয়ে যাবে

রমজানের রহমতের দশ দিনের দোয়া পড়তে গিয়ে অন্য সব দোয়ার সাথে নিচে উল্লেখিত দোয়াটি খুব বেশি বেশি পড়বেন।

দোয়াটির বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ সহ লিখে দেওয়া হলও।

রহমতের ১০ দিনের দোয়াঃ আল্লাহুম্মাঝ আলনি ফি-হি মিনাল মুতাওয়া-ক্কিলিন আলাইকা, ওয়াঝআলনি ফি-হি মিনাল ফাই-যিনা লাদাইক। ওয়াঝ আলনি ফিহি মিনাল মুক্বাররবিন ইলা ইকা; বিইহ সনিকা ইয়া গাইয়াতিত-ত্বালিবিন।

দোয়াটির অর্থঃ হে আল্লাহ, আমাকে তোমার প্রতি যারা ভরসা করেছে সেই ভরসাকারীদের দলে অন্তর্ভূক্ত করে নাও। আল্লাহ, তোমার অনুগ্রহের মধ্য দিয়ে আমাকে শামিল করো সফলকামদের সাথে। এবং আমাকে তোমার নৈকট্য লাভকারী বান্দাদের অন্তর্ভূক্ত করে নাও। হে অনুসন্ধানকারীদের শেষ গন্তব্য মহা রব্বুল আলামিন।

আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, যখন রাখা লাগবে না

এছাড়া আপনি রহমতের দশ দিনের দোয়া হিসেবে বেশী বেশী ইস্তেগফার করতে পারেন। কোরআন তিলাওয়াত করতে পারেন। নিষিদ্ধ সময় ব্যতিত যেকোনো সময়ে নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।

আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে মোনাজাতে আপনার আপান্র পরিবার আপনার বাবা মা নিজের সন্তান স্ত্রীদের জন্য দোয়া চেয়ে তাদের উপর আল্লাহর  রহমত নাজিলের জন্য আল্লাহ কাছে কান্না করে দোয়া করেন।

নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ব বিষয়ে অবগত।

মাগফিরাতের দশ দিন । রহমত মাগফিরাত নাজাত

রোজার দ্বিতীয় দশ দিন বা মাগফিরাতের দশ দিন। মাগফিরাত অর্থ হচ্ছে অত্যন্ত ক্ষমাশীল।

রমজানের দ্বিতীয় দশ দিন তথা মাগফেরাতের দশ দিন আল্লাহ তার বান্দাদের বিশেষ বিশেষ ভাবে অনেক বেশী পরিমাণ ক্ষমা করে থাকেন।

হাদিসে এসেছেযে নবীজি মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন,

আল্লাহ ক্ষমা পাওয়ার জন্য আল্লাহ রোজাকে ফরজ করেছেন, এবং আমি তারাবিকে সুন্নত ঘোষণা করছি। যে ব্যক্তি রোজা রাখবে এবং তারাবির নামাজ পড়বেন সে আল্লাহর কাছে ক্ষমাশীল ব্যক্তি হিসেবে খুব নিকটে থাকবেন”। – হাদিস।

অতএব, মাগফিরাতের মাস রমজান। এই রমজানে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা পেতে হলে রোজা রাখতে হবে তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে। এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে, ক্ষমা চাইতে হবে।

আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ)

আল্লাহ বলেন,

“অতপর তোমরা কে আছো যাদের ক্ষমা প্রয়জন? আমি আল্লাহ ক্ষমা করতে প্রস্তুত। তোমরা আমার কাছে খমা চাও”। – আল কোরআন।

মাগফেরাত মানে হচ্ছে অত্যন্ত ক্ষমাশীল। এখানে আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল তাই বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ চাইলে যেকোনো সময়ে তার বান্দাকে মাফ করতে পারেন। কিন্তু রমজান মাস শেখার মাস। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া আমাদের জানতে হবে শিখতে হবে।

সূরা আল ইমরানের ১৭ নম্বর আয়াতে উল্লেখ আছে যে,

আল্লাহ তায়ালা সেই সব লোকের প্রতি করুনার দৃষ্টি দেন, যারা বরাতের শেষ অংশে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রত্থনা করেন। আর এটা সু নিশ্চিত যে, যে ব্যক্তির প্রতি আল্লাহর করুণার দৃষ্টি পরবে নিঃসন্দেহে সে সর্বাধিক সৌভাগ্যবান। নিশ্চয়ই ঐ ব্যক্তি ক্ষমা পাওয়া লোকদের মধ্যে একজন।

এই আয়াতে আল্লাহ আরও বলেন,

ক্ষমা পারত্থনাকারিরা নিঃসন্দেহে ধৈর্য ধারণকারী, সত্যবাদী, নিরদেশ সম্পাদনকারী এবং সৎপথে ব্যায়কারি এবং শেষ রাতে ক্ষমা চাওয়া ব্যক্তি। – (সূরা আল ইমরান, আয়াত নাম্বার ১৭)

উপরের আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে, মাগফিরাতের দশকের রোজাদারদের করনীয় হচ্ছে, অবশ্যই রোজার সাথে সকল নামাজ এবং তারাবির নামাজ আদায় করতে হবে।

এবং শেষ রাতে নফল নামাজ বা অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ কাছে দুই হাত তুলে কান্না করে মোনাজাতে ক্ষমা চাইতে হবে।

আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল।

রমজানের মাগফিরাতের ১০ দিন । রহমত মাগফিরাত নাজাত

প্রিয় পাঠক, আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা। আমরা তার গোলাম। গোলাম তার দয়াময় সৃষ্টিকর্তার কাছে কিছু চাইবে এটাই স্বাভাবিক।

আর চাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনও দোয়া বা ভাষারও দরকার নাই।

আল্লাহর কাছে বাংলাতে নিজের মনের কথা বলে দোয়া চাইলে মাফ চাইলেই সেটা আল্লাহ তায়লা বুঝবেন।

তবে সব কিছুর মতো রমজানের মাগফিরাতের দোয়া হিসেবেও কিছু দোয়া অধিক প্রচলিত আছে।

তবে এই দোয়ার বাহিরে অন্য কোনও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ক্ষমা এবং তার করুণা চাওয়া যাবে না, বিষয়টা একদমই এমন টা নাহ।

আরও পড়ুনঃ  রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি । কি কি কারণে রোজা মাকরুহ হয়

মাগফিরাতের দশ দিনের আমল হিসেবে আমরা বেশ কিছু দোয়া পাঠ করে থাকি।

চলুন এই দোয়ার মধ্য থেকে কয়েকটি দোয়া জেনে নেওয়া যাক বাংলা অর্থ সহ।

অন্য দোয়ার মতো এই দোয়াগুলিও বাংলায় কিংবা আরবিতে করতে পারবেন।

মাগফিরাতের দোয়া

মাগফেরাতের দোয়া থেকে কয়েকটি দোয়া জেনে নেওয়া যাক যা মাগফিরাতের দশ দিনে বেশী বেশী পাঠ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়।

মাগফিরাতের দশ দিনে পাঠ করা দোয়া : الیوم الحادی عشر- اَللّـهُمَّ حَبِّبْ اِلَیَّ فیهِ الاِْحْسانَ، وَکَرِّهْ اِلَیَّ فیهِ.. الْفُسُوقَ وَالْعِصْیانَ، وَحَرِّمْ عَلَیَّ فیهِ السَّخَطَ وَالنّیرانَ..  بِعَوْنِکَ یا -غِیاثَ الْمُسْتَغیثینَ ..

মাগফিরাতের দোয়ার বাংলা উচ্চারণঃ আল্লহুম্মা- হাবিব ইলাইয়া ফিহিল ইহসান, ওয়া কার- রিহ ইলাইয়া ফিহিল ফুসুক্, ওয়াল ই’সইয়ানা ওয়া হাররিম আলাইয়া ফিহিস সাখা-ত্বা ওয়ান নিরানা বিআ – ওনিক, ইয়া গিয়া-ছাল মুসতা গিছিন।

মাগফিরাতের দোয়ার বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ তায়ালা,  এই দিনে সকল সৎ কাজকে আমার কাছে তুমি প্রিয় করে দাও। এবং অন্যায় ও নাফরমানী কাজকে অপছন্দনীয় এবং ঘৃণিত করে দাও। আমাকে তোমার অনুগ্রহের উসিলার তালিকায় অন্তরভুক্ত করো। আমার জন্য তোমার ক্রোধ ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তুমি হারাম করে দাও হে আমার প্রতিপালক। হে আবেদনকারীদের আবেদন শ্রবণকারী অত্যন্ত ক্ষমাশীল মহান আল্লাহ।

আরও পড়ুনঃ তারাবি নামাজের নিয়ত । তারাবির নামাজের নিয়ম কানুন জেনে নিন

রমজানের মাগফিরাতের আরও একটি দোয়াঃ رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ .

মাগফিরাতের দোয়ার বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ তায়লা, আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দিন, আখেরাতেও কল্যাণ দিন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদেরকে রক্ষা করুন।-(সূরা বাকারা এর আয়াত নাম্বার ২০১]

আরবিতে মাগফিরাতের দোয়াঃرَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

মাগফিরাতের দোয়ার বাংলা অর্থঃ আর যারা প্রার্থনা করে হে আমাদের আল্লাহ তায়লা, আমাকে এমন একজন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয়। আর আমাদেরকে আপনার মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন। -(সূরা ফুরক্বান, আয়াত: ৭৪)

নাজাতের দশ দিন

নাজাত শব্দের অর্থ সফল বা বিজয়ী। রমজান মাসের শেষ দশ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জীবনের জন্য।

রমজান মাসের শেষ দশ দিনের যেকোনো বিজোড় একটি রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে।

এই দশ দিন আল্লাহর কাছে নাজাত অর্থাৎ সফলতা বা বিজয় চাইতে হবে।

তবে হ্যাঁ, এই বিজয় বা এই সফল সেই সফল না।

এই সফল বলতে বলে হয়েছে, জানান্ত লাভ, জাহান্নাম আমাদের জন্য হারাম করে সবাইকে জান্নাত দান করবেন।

সফলতা বলতে মূলত বলা হয়, কিয়ামতের ময়দানে বিনা হিসাবে জান্নাত লাভ করা।

তাই, নাজাতের ১০ দিনের দোয়া হিসেবে আপনাকে অনেক বেশী বেশী দোয়া করতে হবে। রমজান নাজাতের ১০ দিন এর আমল হিসেবে বেশী বেশী কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ, আল্লাহর কাছে কেঁদে কেঁদে মাফ চাইতে হবে।

আরও পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ম । শবে কদরের নামাজের নিয়ত (বিস্তারিত)

এর মধ্যে বিশেষ করে, বিজোড় রাতগুলোতে সারা রাত করে ইবাদত করা উচিত। কারণ কবে যেন শবে কদরের রাত চলে যায়।

তবে সম্ভাবনা থাকে ২৭ শে তারাবির রাত।

নাজাতের ১০ দিনের দোয়া

রমজান মাসের নাজাতের অর্থাৎ শেষ দশ দিনে দোয়া করার মতো বিশেষ কোনও নির্ধারিত দোয়া না থকাক্লে বিশ্বনবী আমাদের কয়েকটি দোয়ার কথা বলেছেন। যা কদরের রাত সহ নাজাতের যেকোনো রাতে পড়া উত্তম। চলুন দেখে নেওয়া যাক।

লাইলাতুল কদর জানতে পারলে এই দোয়া পড়বেনঃ  “আল্লাহুম্মা ইন্না-কা আফুয়ুন, তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নিহ”

লাইলাতুল কদর জানতে পারলে বাংলায় যে দোয়া পড়বেনঃ “হে আল্লাহ তায়লা, আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করতে প্রচন্ড ভালোবাসেন। তাই, আমাকে আপনি ক্ষমা করে দিন”। (তিরমিজি ও মিশকাত থেকে)

আরও পড়ুনঃ  লাইলাতুল কদর সূরা (বাংলা উচ্চারণ ও অর্থ, ফজিলত সহ বিস্তারিত)

নাজাতের দশকে এই দোয়া পাঠ করা উত্তমঃ “রব্বানা মা খালকতা হাযা বাতিলান সুবহানাকা ফাকিনা আযা – বান্নার”।

নাজাতের দশকের এই দোয়ার অর্থঃ “হে আল্লাহ তায়লা আপনি আমাদের প্রভু। আপনি এই পৃথিবীকে শুধু শুধু সৃষ্টি করেন নাই। আপনি মহা পবিত্র। তাই আপনি আমাদেরকে জাহান্নামের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন।

  • (সুরা আল ইমরান এর আয়াত ১৯১ থেকে)

তবে আমাদের উচিত প্রত্যেক বিজোড় রাতে শবে কদর হিসেবে বেশী বেশী ইবাদত করতে হবে।

রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কিত কিছু কথা

প্রিয় পাঠক,

রমজানে রহমত, মাগফেরাত কিংবা নাজাতের দিনগুলোতে নির্ধারিত কিংবা নির্দিষ্ট কোনও দোয়া নাই।

এই দিনগুলোতে আলাহর রহমত লাভের আশায়, ক্ষমার আশায়, কনাজাতের আশায় আপনি আপনার আমার রব আল্লাহ এর কাছে যেকোনো দোয়া করতে পারেন। যেকোনো ভাবেই দোয়া করতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ  তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ ( চার রাকাতের দোয়া সহ)

তবে এই পোষ্টে উল্লেখিত সবগুলো দোয়াও আপনি রহমত মাগফিরাত নাজাত এর সময় পড়তে পারেন।

আশা করছি বুঝতে পারছেন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে জানার এবং মানার তৌফিক দিন।

রহমত মাগফিরাত নাজাত এর দোয়া নিয়ে সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা রহমত মাগফিরাত নাজাত এই তিন বিষয়ে বিস্তারিত জেনেছি।

জেনেছি রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত, রহমতের ১০ দিনের আমল, মাগফিরাতের ১০ দিনের দোয়া এবং নাজাতের ১০ দিনের দোয়া সম্পর্কিত অসবকিছু জেনেছি।

আরও পড়ুনঃ সূরা তারাবি পড়ার নিয়ম । সূরা তারাবির নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত

আশা করছি, এই পোস্ট থেকে রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কিত সবকিছু জানতে পেরেছেন।

এবং রমজান ও ইসলাম সম্পর্কিত সকল বিষয়ে জানতে আমাদের Islamic info Category ভিজিট করুন।

সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

1 thought on “রহমত মাগফিরাত নাজাত এর দোয়া ও করনীয়”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.