ডোমেইন হোস্টিং কি । ডোমেইন হোস্টিং কেন প্রয়োজন

ওয়েবসাইটের অন্যতম দুইটি উপাদান হচ্ছে ডোমেইন এবং হোস্টিং। আরও সহজভাবে বললে ডোমেইন হচ্ছে ওয়েবসাইট এর নাম এবং হোস্টিং হচ্ছে ওয়েবসাইট এর ফাইল রাখার মেমরি বা স্টোরেজ। এই ডোমেইন হোস্টিং কি এসব বিষয়ে অনেকেই জানতে চান।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “ডোমেইন হোস্টিং কি । ডোমেইন হোস্টিং কেন প্রয়োজন” এ।

আজকের পোষ্টে আমরা ডোমেইন কি, ডোমেইন কত প্রকার ও কি কি, হোস্টিং কি, হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি সহ ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।  

ডোমেইন কি

Domain ইংরেজি শব্দ। এর অর্থ ঠিকানা বা স্থান। সাধারণ ভাবে ডোমেইন বলতে ওয়েবসাইটের নাম বোঝায়। প্রত্যেক ওয়েবসাইটের আলাদা একটি আইপি এড্রেস থাকে।

কিন্তু আইপি এড্রেস মনে রাখা সহজ না হওয়ায় ওয়েবসাইটের একটি নাম নির্ধারণ করা হয়। সেই নামকেই ওয়েবসাইটের ডোমেইন বা নাম বলা হয়।

আরও পড়ুনঃ  গুগল একাউন্টের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে করণীয়

যেমন আপনি Dainikkantha ওয়েবসাইট থেকে এই ব্লগটি পড়ছেন যেখানে ওয়েবসাইটের ডোমেইন বা নাম হচ্ছে dainikkantha.com এটুকু।

এক নাম পৃথিবীতে একবার ই ওয়েবসাইটের নাম হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করা যায়। অর্থাৎ, সারা বিশ্বে লাখ লাখ ওয়েবসাইট থাকলেও একটির ডোমেইন এর সাথে অন্যটির কোনো মিল নেই।

ডোমেইন কত প্রকার ও কি কি

সার্বিক বিবেচনায় ডোমেইন সাধারণত ৫ প্রকারের হয়ে থাকে। ৫ প্রকার ডোমেইন হচ্ছেঃ

  • Top-Level Domains – টপ লেভেল ডোমেইন
  • Country Code Top Level Domains – দেশের কোড যুক্ত ডোমেইন
  • Generic Top-Level Domains – জেনেরিক লেভেল ডোমেইন
  • Second-Level Domains – দ্বিতীয় লেভেল ডোমেইন
  • Third Level Domains – তৃতীয় লেভেল ডোমেইন

Top Level Domain

যেই ডোমেইন Extention গুলো সব থেকে উপরে রয়েছে বা বেশি ব্যবহৃত হয় সেগুলোই হল TLD বা টপ লেভেল ডোমেইন। টপ লেভেল ডোমেইন এর উদাহরণ হচ্ছে  .com, .net, .org ইত্যাদি।

Country Code Top Level Domain

যে ডোমেইনের মাধ্যমে একটি নিদির্ষ্ট দেশের ওয়েবসাইট কে বুঝানো হয় তাকে Country Code Top Level Domain বলে।

টপ লেভেল কান্ট্রি কোড ডোমেইন এর অন্যতম উদাহরণ হচ্ছেঃ

  • .bd দিয়ে বাংলাদেশ,
  • .in দিয়ে ইন্ডিয়া,
  • .us দিয়ে আমেরিকা,
  • .ca দিয়ে ক্যানাডা

এভাবে ডোমেইন এর মধ্যে যেকোনো দেশের কোড ব্যবহার হয় সেইসব ডোমেইনকে কান্ট্রি কোড ডোমেইন বলে।

Generic Top-Level Domains

যে সব ডোমেইন সাধারণ ডোমেইন এর মতো, কিন্তু বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এর ব্যবহার অনেক সিমিত তাকে Generic Top Level Domain বলে।

অন্য সব ডোমেইন সবাই ব্যবহার করতে পারলেও এই ডোমেইন গুলো সবাই ব্যবহার করতে পারেনা।

উদাহরণ হিসেবেঃ .edu.bd বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কেউ এই ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবে না। আবার .mil.bd সামরিক সংস্থা ছাড়া সাধারণ কেউ/ কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে পারবে না।

Second Level Domains

যেসব ডোমেইন এর নাম একই কিন্তু এক্সতেশন আলাদা এবং টপ লেভেল ডোমেইন এর এক্সটেনশন না সেসব ডোমেইন ই হচ্ছে সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন।

আর সহজ ভাবে বললে, এই পোষ্টটি পড়ছেন dainikkantha.com এ। কিন্তু dainikkantha.info কিন্তু আলাদা একটি ডোমেইন। অথচ তা dainikkantha.com কেই বোঝায়।

সাধারণত অসাধু প্রতারক চক্র এই ধরনের ডোমেইন নিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে টাকা আত্মসাৎ করে নেয়।

Third Level Domains

Third Level Domain এমন একটি ডোমেইন নাম বা ওয়েবসাইট নাম যা Second Level Domains এর নামের আগে হয়ে থাকে।

যেকোনো থার্ড লেভেল ডোমেইন কে “সাব-ডোমেইন”ও বলা হয়। এর কারণ কখনো থার্ড লেভেল ডোমেইন দ্বারা একটি ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট বিভাগ বা পেজকে বোঝানো হয়।

হোস্টিং কি

সাধারণত হোস্টিং বলতে মেমরি বা স্টোরেজ কে বোঝানো হয়। যেখানে কোনো ফাইল আপলোড করলে সারা বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে অ্যাক্সেস বা ভিজিট করা যায় তাকে হোস্টিং বলে।

আরও পড়ুনঃ ডোমেইন হোস্টিং কি । ওয়েব হোস্টিং কেন প্রয়োজন

সাধারণত সকল ওয়েবসাইট এর সকল ডাটা আপলোড করে রাখা হয় হোস্টিং এ । অর্থাৎ ইন্টারনেট জগতের সবকিছুই বিশ্বের কোনো না কোনো হোস্টিং সার্ভারে আপলোড করে রাখা রয়েছে।

হোস্টিং সার্ভার ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে রাখতে হয়। কারণ হাজার হাজার ওয়েবসাইটের সকল ডাটা হোস্টিং সার্ভারেই থাকে। এক্ষেত্রে অনেক লোককে নিরলস পরিশ্রম করতে হয়।

হোস্টিং কত প্রকার ও কি কি

সার্বিক বিবেচনায় সাধারণত হোস্টিং ৪ প্রকার। ৪ প্রকার হোস্টিং গুলো হচ্ছেঃ

  • Shared Hosting – শেয়ারর্ড হোস্টিং
  • VPS = Virtual Private Server – ভিপিএস হোস্টিং
  • Dedicated Server – ডেডিকেটেড সার্ভার
  • Reseller Hosting – রিসেলার হোস্টিং

Shared Hosting – শেয়ারর্ড হোস্টিং

যে সার্ভারের মেমরি বা হোস্টিং একাধিক ইউজার শেয়ার করে ব্যবহার করে তাকে শেয়ার হোস্টিং বলে। একসাথে একাধিক ইউজার হওয়ায় শেয়ারর্ড হোস্টিং এর দাম অনেক কম হয়ে থাকে।

সাধারণত যারা নতুন ব্লগিং, ওয়েবসাইট বা নিজের ছোট খাটো ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট তৈরিতে শেয়ারর্ড হোস্টিং বেস্ট অপশন।

অনেক সময় কোম্পানির প্রচারের জন্য অনেক সময় ডোমেইন কিনলে হোস্টিং ফ্রি পর্যন্ত দিয়ে থাকে।

VPS Hosting – ভিপিএস হোস্টিং

শেয়ারর্ড হোস্টিং এর থেকে বেশি স্পিড (লোডিং স্পিড)পায় ভিপিএস হোস্টিং এ। VPS এর ফুল মিনিং হচ্ছে Virtual Private Server) এর স্পীড।

VPS হোস্টিং এর জন্য আলাদা ভাবে সার্ভারে Ram,Cpu,Storage ভাগ করা থাকে। অর্থাৎ একেকজন ইউজারের জন্য সার্ভারে Ram,Cpu,Storage আলাদা থাকে।

Dedicated Server – ডেডিকেটেড সার্ভার

সম্পূর্ণ একটি সার্ভার যখন কারো সাথে শেয়ার না করে শুধু মাত্র একজন ইউজার ব্যবহার করে তখন তাকে ডেডিকেটেড হোস্টিং বলা হয়।

আরও সহজ ভাবে বললে একটি কম্পিউটারকে server হিসাবে যখন শুধু মাত্র একজন ইউজার ব্যবহার করে তখন তাকে ডেডিকেটেড হোস্টিং বলে।

Reseller Hosting – রিসেলার হোস্টিং

একটি কোম্পানি থেকে যখন অন্য কোন কোম্পানি বা ব্যক্তি একটি হোস্টিং সংগ্রহ করে নিজেই প্যাকেজ কাস্টমাইজ করে অন্য দের কাছে পুনরায় বিক্রি বা ReSell করে তখন তাকে রিসেলার হোস্টিং বলে।

ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য

যারা hosting and domain সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে জানেন না তারা ডোমেইন ও হোস্টিং এর মদ্ধে পার্থক্য জানতে চান। প্রকৃত অর্থে, ডোমেইন এবং হোস্টিং একে অপরের পরিপূরক।

আরও পড়ুনঃ মাউস কোন ধরনের ডিভাইস

অর্থাৎ একটি ওয়েবসাইট পাবলিশ করার জন্য একটি ডোমেইন এবং হোস্টিং আবশ্যক। এই ডোমেইন এবং হোস্টিং ই একটি ওয়েবসাইটের অন্যতম দুইটি উপাদান।

অর্থাৎ hosting and domain দুইটি সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি বিষয়। এবং আর কাজও ভিন্ন। তাই ডোমেইন ও হোস্টিং এর মধ্যে পার্থক্য খোজার কোনো যৌক্তিকতা নাই। শুধু মনে রাখা জরুরি যে, hosting and domain একটি ছাড়া আরেকটি মূল্যহীন।

ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কিত আরও তথ্য

আপনি যদি ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই জানা উচিত যে, একটি ওয়েবসাইটের জন্য ডোমেইন একবার ই নির্ধারণ করতে পারবেন।

অর্থাৎ, একবার ডোমেইন হোস্টিং নিলে পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুজাই হোস্টিং পরিবর্তন করতে পারলেও ডোমেইন নাম কোনো ভাবেই পরিবর্তন করতে পারবেন না।

আরও সহজ ভাবে বললে, আপনার একটি দোকান আছে। দোকানের  একটি নাম নির্ধারণ করলেন। পরবর্তীতে প্রয়োজনে দোকান স্পেস বা ঘর অর্থাৎ হোস্টিং চেঞ্জ করতে পারবেন। কিন্তু দোকান নাম বা ডোমেইন চেঞ্জ করতে পারবেন না।

সুতরাং, একটি ওয়েবসাইট নেওয়ার আগে ডোমেইন অর্থাৎ ওয়েবসাইট নাম নির্ধারণের আগে সু স্পষ্ট পরিকল্পনা করা জরুরি।

Domain Hosting সম্পর্কিত কিছু টুলস

ধরেন, আপনি একটি নাম নির্ধারণ করলেন। এবার সেই ডোমেইনটি ইতিমধ্যে কেউ কিনছে কি না কিভাবে দেখবেন? অর্থাৎ domain এভেইলেবেল কি না তার জন্য domain name check করতে হবে।

আবার, ডোমেইন টি এভেইলেবেল থাকলে ইন্টারন্যাশনালি কিংবা দেশিয় কোম্পানিতে কত তাকা দিয়ে কিনতে পারবেন সেই মূল্য কিভাবে দেখবেন?

আবার প্রয়োজন অনুযায়ী domain age checker, domain authority checker, domain expired check করার প্রয়োজন হয়।

আর ডোমেইন হোস্টিং এর এই age, authority and expired check করার জন্য ফ্রিতে শত শত টুলস পেয়ে যাবেন। যেসব টুলস দিয়ে ফ্রিতেই আপনি ডোমেইন হোস্টিং এর এইসব জিনিস চেক করতে পারবেন।

আপনার জানার সুবিধার্থে নিচে একেক করে প্রত্যেকটি বিষয় চেক করার জন্য একাধিক কিছু জনপ্রিয় টুলস এর নাম উল্লেখ করছিঃ

Domain age checker Tools:

  • Duplichecker
  • Websiteseochecker
  • Whois Lookup. 
  • SEMRush Tool
  • DomainTools
  • MXToolBox
  • UltraTools
  • ICANN Lookup
  • DNS Checker Lookup

ডোমেইন authority checker Tools:

  • Moz
  • SEMrush
  • Ahrefs
  • SEO Review Tools
  • Small SEO Tools
  • websiteseochecker

Domain expired check Tools:

websiteseochecker.com

Domain name availability check Tools:

  • namecheap.com

Domain Price checker Tools:

  • namecheap.com (international)
  • fastcoderhost.com Inational)

এছাড়াও আরও অনেক টুলস আছে যা গুগলে সার্চ করলেই পেয়ে যাব্বেন। সবথেকে বড় বিষয় হচ্ছে এইসব টুলস এর বেশিরভাগ টুলস পাবেন ফ্রিতে।

Domain Hosting সম্পর্কিত FAQS

ডোমেইন কি কত প্রকার?

ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট আইপির পরিবর্তে নামকেই ডোমেইন বলে। সার্বিক বিবেচনায় ডোমেইন সাধারণত ৫ প্রকারের হয়ে থাকে। ৫ প্রকার ডোমেইন হচ্ছেঃ

Top-Level Domains – টপ লেভেল ডোমেইন
Country Code Top Level Domains – দেশের কোড যুক্ত ডোমেইন
Generic Top-Level Domains – জেনেরিক লেভেল ডোমেইন
Second-Level Domains – দ্বিতীয় লেভেল ডোমেইন
Third Level Domains – তৃতীয় লেভেল ডোমেইন 

ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন করতে হয় কেন?

একেকটি ওয়েবসাইটের স্থায়ী ঠিকানা হচ্ছে একেকটি নির্দিষ্ট আইপি এড্রেস। আইপি এড্রেস মনে রাখা জটিল তাই ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।

ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করার পরে ওই ডোমেইনের বিন্দু মাত্র পরিবর্তন করা সম্ভব না।

হোস্টিং কি?

হোস্টিং হচ্ছে ওয়েবসাইটের সকল তথ্য স্টোর করে রাখার জন্য নির্ধারিত স্টোরেজ বা জায়গা। হোস্টিং কেন প্রয়োজন তাও স্পষ্ট।

Domain Hosting সম্পর্কিত সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক, আজকের পোস্টে আমরা what is domain and hosting in bangla, ডোমেইন কত প্রকার ও কি কি, এবং হোস্টিং কি কত প্রকার এসব বিষয়ে বিস্তারিত জেনেছি।

আশা করছি এই পোস্ট থেকে Domain and hosting সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

hosting and domain সহ অনলাইন সম্পর্কিত আরও কিছু জানতে আমাদের Online tips and tricks ভিজিট করুন।

নিয়মিত সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.