“সালাতুল হাজত” সালাত আদায়ের উপকার ও নিয়ম

সালাতুল হাজতকে প্রয়োজনের সালাত / বলা হয়। সালাতুল হাজত একটি বিশেষ ইবাদত, যা নফল ইবাদতের শামিল।

মানুষ যখন অতিরিক্ত চিন্তা, শারীরিক-মানসিক ভাবে অসুস্থ থাকলে, বিশেষ কিছুর প্রয়োজন হলে দুই বা চার রাকাত ‘সালাতুল হাজত’ নামাজ পড়ে। সাধারণ নফল ইবাদতের শামিল এই ইবাদতটি।

এই ইবাদত পালনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো বাধা নেই। এটি প্রয়োজনের যেকোনো সময়ে পড়া যায়। সারাজীবন পর্যন্ত সালাতুল হাজত নিয়মিত পড়া যায়।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ১৫৩ নং আয়াতে বলেন,

“সঙ্গত যে-কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য বান্দা নিজ প্রভুর কাঋে ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চেয়ে থাকবে”। -( সুরা বাকারূঃ আয়াত- ১৫৩)

সালাতুল হাজতের নিয়ম সাধারণ নামাজ আদায়ের মতোই। অজু করার নিয়মে অজু করে স্বাভাবিকভাবে দুই রাকাত নফল সালাত /নামাজ পড়তে হয়।

এ নামাজ সাধারণত দুই রাকাত পড়া হয়, তবপ চার রাকাত ও পড়া যায়।

নফল এই সালাত শেষে আল্লাহ তায়ালার প্রসংশায় হামদ ছানা এবং নবীজি মুহাম্মদ সাঃ এর ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করে মনের সকল চাওয়া, আশা আল্লাহর নিকট বলতে হয়।

সলাতুল হাজত আদায় করে আল্লাহর কাছে সব চাওয়া পূর্ণ করা যায়

হাদিসে এই নফল নামাজ সম্পর্কে এসেছে-

আবদুল্লাহ্ ইবনু আবি আওফা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে,

আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, “আল্লাহ-র কাছে বা কোনো আদম-সন্তানের কাছে যদি কারও কোনো প্রয়োজন হয়—

তবে সে যেন অজু করে এবং খুব সুন্দরভাবে যেন তা (সালাতুল হাজত) করে।

আরও পড়ুনঃ যেভাবে শরীরের যৌবন ধরে রাখবেন।

এরপর সে যেন দুই রাকআত নফল সালাতুল হাজত সালাত /নামাজ আদায় করে। এরপর যেন আল্লাহর হামদ করে ও রাসুল (সা.)-এর উপর দরূদ সালামের পর নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়বেন-

বাংলা উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লহুল হালিমুল করিম্, সুবহানাল্লহি রব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লহি রব্বিল আলামিন্, আছআলুকা মুজিবাতি রহমাতিকা ওয়া আজা-ইমা মাগফরতিক।

ওয়াল গণি-মাতা মিন কুল্লি বিররিউ ওয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইছমিন। লা তাদঅলি জাবান।

ইলা গফরতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররজতাহু ওয়ালা হা জাতান হিয়া লাকা রিজান ইল্লা কালা-ইতাহা ইয়া আর হামার রহিমীন।
দোয়াটির অর্থঃ আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য বা মালিক নেই। আল্লাহ অতি দয়ালু, সহিষ্ণু। সকল দোষ-ত্রুটি থেকে পবিত্র তিনি।
আল্লাহ আসমান হমিনের একমাত্র অধিপতি। সকল প্রশংসা শুধু তারই জন্য। তার (আলাহর) কাছেই আমি মাথা নত করি।

আল্লাহ,  আপনার রহমত আকর্ষণকারী সকল পূণ্যকর্মের অসিলায়। আপনার ক্ষমা ও মাগফিরাত আকর্ষণকারী সকল কাজের বরকত, সকল নেক আমলে সাফল্য লাভের এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে নিরাপত্তা লাভের।

আমার কোনো গুনাহ (পাপ) যেন মাফ ছাড়া না থাকে, আল্লাহ। কোনো সমস্যা যেন সমাধান ছাড়া না রয়ে যায়, হে মালিক।

আর আমার এমন প্রয়োজন— যাতে রয়েছে আপনার সন্তুষ্টি, তা যেন অপূরণ না থাকে, হে মাওলা। হে সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু মহান আল্লাহ।

-(তিরমিজিঃ হাদিসঃ৪৭৯, ইবনু মাজাহ-হাদিসঃ ১৩৮৪)

আরও পড়ুনঃ যে আমল করলে জান্নাত সুনিশ্চিত

সুতরাং দোয়ার ক্ষেত্রে হাদিস শরিফে বর্ণিত উপরোক্ত দোয়াটি সবসময় সব ধরনের নামাজ শেষেও পাঠ করা যায়।

আল্লাহ আমাদের সকলকে সঠিক পথে থাকার তৌফিক দান করুন, আমিন।

আরও পড়ুনঃ মানব দেহে জিরার ভূমিকা

দৈনন্দিন জীবনের সকল বিষয়ে বিজ্ঞান ও ধর্ম ভিত্তিক তথ্য নির্ভর লেখা পেতে চোখ রাখুন দৈনিক কন্ঠ এর ফেসবুক ব্লগ পেজ এ

13 thoughts on ““সালাতুল হাজত” সালাত আদায়ের উপকার ও নিয়ম”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.