ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি । islami bank loan details

Last Updated on 5 months by Shaikh Mainul Islam

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণে লোন নেওয়ার প্রয়োজন হয়। আর ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি এই মুহূর্তে সবথেকে সহজ। তাই অনেকেই islami bank loan details জানতে চান।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি । islami bank loan details” এ।

আজকে আমরা, ইসলামী ব্যাংকের লোনের প্রকারভেদ, ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার যোগ্যতা এবং করনীয় সহ কি কি লাগে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।

ইসলামী ব্যাংকের লোনের প্রকারভেদ

বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক ছয় ধরনের লোন দিয়ে থাকে। অর্থাৎ ছয় খাতে Islami Bank loan দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক লোনের প্রকারভেদ জেনে নেওয়া যাকঃ

আরও পড়ুনঃ  নগদ থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম

যেসব কাজে Islami Bank Loan দিয়ে থাকে তা হলোঃ

  • বাড়ি নির্মাণ লোন
  • রিয়েলস্টেট বিজন্যাস লোন।
  • কৃষি উন্নায়ণে লোন
  • ব্যবসায় লোন
  • শীল্পখাতে লোন
  • ফ্রিল্যান্সিং এর জন্যে লোন

ইসলামী ব্যাংক মূলত এই ছয়টি বিষয়কে কেন্দ্র করে সব ধরনের লোন দিয়ে থাকে।  এর প্রত্যেকটি সেক্টরের মধ্যে অসংখ্য বিষয় রয়েছে যেসব বিষয়ে আপনি লোন পাবেন। প্রত্যেকটি বিষয়ে লোন পাওয়ার জন্য যোগ্যতা দেখে নেওয়া যাক।

বাড়ি নির্মাণে ইসলামী ব্যাংক লোন

বাড়ি নির্মাণে বা বাড়ি পুনরসংস্কারে ইসলামী ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নতুন বাড়ি নির্মাণে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ আর বাড়ি পুনরায় সংস্কারে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দেয় ইসলামী ব্যাংক।

বসত বাড়ি করার জন্য লোন নিতে হলে আপনি নিজস্ব মালিকানায় বাড়ি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই দুইজন আপনার পরিচিত বা আত্মীয় এবং দুজনই ইনকামধারীকে লোনে সাক্ষী বানাতে হবে। অর্থাৎ গ্যারান্টর বানাতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাড়ি নির্মাণ করতে ইসলামী ব্যাংক লোন করতে যেসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে।

১) নমজারি রশিদ,ডিসি আর ও খতিয়ান জমা দিতে হবে

২) এনইসি দিতি হবে।

৩) আপনার জমির বায়া দলিল দেখাতে হবে।

৪) এসএ, সিএস, বিএস খতিয়ান জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুনঃ কৃষি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং সহজেই কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার উপায়

উপরের চারটি দলিল প্রদর্শন সহ বাকি চাহিদা পূরণ করতে পারলে যেকোনো ইনকামধারি ব্যাক্তি ইসলামী ব্যাংক থেকে বাড়ি নির্মাণের জন্য লোন পেয়ে যাবেন।

 লোন করতে আবেদনের জন্য আপনাকে আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এর শাখায় কথা বলতে হবে।

রিয়েলস্টেট ব্যবসায় ইসলামী ব্যাংকের লোন

বর্তমান সময়ের অন্যতম একটি বিজনেস রিয়েলস্টেট ব্যবসা। বেশ বড় অংকের টাকা লোন নিয়ে থাকে এই ব্যবসায়ে সম্পৃক্তরা। তাই অন্যান্য ব্যাংকের মতো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ও রিয়েলস্টেট বিজনেসে লোন দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ থেকে রিয়েলস্টেট ব্যবসায় লোন নেওয়ার জন্য করণীয়ঃ

১) লোনকারীর অবশ্যই ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে।

২) ব্যক্তির রিয়েলস্টেট ব্যবসা সংক্রান্ত প্রমাণাদি এবং দরকারি কাগজ পত্র।

৩) নিজ জমির দলিল।

৪) ব্যাংক থেকে অন্যান্য যেসকল ডকুমেন্টস চাইবে তার সবগুলি।

উপরের চারটি দলিল প্রদর্শন সহ ব্যাংকের বাকি চাহিদা পূরণ করতে পারলে যেকোনো রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ী ইসলামী ব্যাংক থেকে নিজের রিয়েলস্টেট ব্যবসায়ের জন্য লোন পেয়ে যাবেন।

কৃষি লোনের জন্য ইসলামী ব্যাংক যেসব ডকুমেন্টস চায়

কৃষি লোনের জন্য একসময় কৃষি ব্যাংক বহুল পরিচিত থাকলেও এখন সব ব্যাঙ্কেই এই ক্যাটাগরিতে লোন দিয়ে থাকে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি খাতে অনেক বেশি লোন দিয়ে থাকে। শিল্পে এগিয়ে গেলেও কৃষি নির্ভর দেশ এখনো চলমান। যেখানে কৃষকদের দরকার হয় অনেক সহযোগিতার।

কৃষকদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চালু রেখেছে ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন। বর্তমানে কৃষকদের খরচের পরিমাণ বাড়ায় তাদের কৃষি ঋণ নেওয়ার দরকার হয়।

এবার দেখে নেওয়া যাক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি লোন দেওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা চায়ঃ

আরও পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২২

১) জাতীয় পরিচয়পত্র।

২) যে জমির উপর লোন নিতে চান সেই জমির দলিল।

৩)  যে জমির উপর কৃষি লোন নিতে চান সেই জমিতে যেসব কৃষি কাজ করছেন তা দেখানো। যেমনঃ মাছ চাষ, খামার করা, মধু চাষ করা, চারা উৎপাদন ইত্যাদি।

উপরের তিনটি বিষয় প্রদর্শন সহ ব্যাংকের বাকি চাহিদা পূরণ করতে পারলে যেকোনো কৃষিজীবী ব্যক্তি ইসলামী ব্যাংক থেকে নিজের কৃষিকাজের জন্য লোন পেয়ে যাবেন।

ইসলামী ব্যাংক থেকে বিজনেস বা ব্যবসায়ীক লোন নেওয়ার পদ্ধতি

দেশে ব্যবসায়ীক কার্যক্রম বাড়তেই সকল ব্যাংকের মতো ইসলামী বাংক লিমিটেড ব্যবসায়ীক বা বিজনেস লোন দিয়ে থাকে। নতুন এবং পূরণ উদ্যোক্তাদের পাশে দাড়াতেই এই লোন প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

ইসলামী ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীক লোন নিতে যেসব যোগ্যতা দরকা তা জেনে নেওয়া যাকঃ

১) ব্যক্তির ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের সকল বৈধ কাগজপত্র।

২) ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স।

৩) অবশ্যই ইসলামী ব্যাংকে ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানের নামে একাউন্ট থাকতে হবে।

৪) লোনের আবেদন কারীর জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা পাসপোর্ট থাকতে হবে।

আরও পড়ুনঃ অগ্রণী ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত

উপরের চারটি বিষয় প্রদর্শন সহ ব্যাংকের বাকি চাহিদা পূরণ করতে পারলে যেকোনো ব্যবসায়ী বা বিজনেস লোন ইসলামী ব্যাংক থেকে নিজের ব্যবসায়ের জন্য লোন পেয়ে যাবেন।

শিল্প লোন পেতে ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড যেসব যোগ্যতা চেয়ে থাকে

দেশকে শিল্পের দিক থেকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন প্রচুর ইনভেস্টমেন্ট। আর এজন্য দরকার শিল্পে ইনভেস্ট করার উদ্দেশ্যেে ইসলামী ব্যাংক লোন দিয়ে থাকে। চলুন, জেনে নেওয়া যাক শিল্প লোনের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ যেসব ডকুমেন্টস চেয়ে থাকেঃ

১)  যে ধরনের শিল্প ব্যক্তি শুরু ক্রতে চান বা করছেন তার ট্রেড লাইসেন্স।

২) লোন আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়্য পত্র।

৩) ব্যক্তির ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট থাকে হবে।

৪) ব্যাংক থেকে অন্যান্য একন কাগজ পত্র চাওয়া হবে সেসব কাগজ পত্র জমা দিতে হবে।

এই চারটি বিষয়ে নিজেকে যোগ্য করতে পারলে ইসলামী ব্যাংক লোন নেওর পদ্ধতি অনুযায়ী একজন ব্যক্তি ইসলামী ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংক শিল্প লোন নিতে আবেদন করতে পারেন।

ইসলামী ব্যাংক থেকে ফ্রিল্যান্সিং লোন নেওয়ার পদ্ধতি

প্রতিদিন ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে ঝুকছে এটি বেশ বড় পরিমাণের মানুষ। যার মধ্যে বেশিরভাগই তরুণ। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজের উপর ভিত্তি করে কম বেশি ইনভেস্টমেন্ট দরকার। এজন্য ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ফ্রিল্যান্সিং ক্যাটাগরিতে প্রয়োজন অনুযায়ী কব বেশি সব রকমের লোন দিয়ে হাকে।

চলুন জেনে নেই ইসলামী ব্যাংক থেকে ফ্রিল্যান্সিং লোন নিয়ে যেসব যোগ্যতা থাকতে হবেঃ

আরও পড়ুনঃ  জীবন বীমা কি কত প্রকার ও কি কি

১) ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ এ একটি একাউন্ট থাকতে হবে।

২) ব্যাংকে একটি জমির দলিল জমা রাখতে হবে। যেই জমির বাজার মূল্য কম্পক্ষে ১ লক্ষ টাকার উপরে আছে।

৩) লোন করতে আবেদন কারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট এর কপি জমা দিতে হবে।

৪) ফ্রিলান্সিং লাইসেন্স, ( আপনি ফ্রিল্যান্সিং কাজ করেন এই তার প্রমান পত্র)।

৫) ব্যাংক চাইলে আরও অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

এই পাঁচটি বিষয়ে আপনি যোগ্য থাকলে আপনিও আপনার নিকটতম ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে ফ্রিল্যান্সিন্স এর জন্য লোন নিতে পারেন।

সব ধরনের লোনের জন্য যেসব বিষয়ে যোগ্য থাকতে হবে

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে উপরে আলোচনা করা যেকোনো একটি লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে নিম্মক্ত বিসয়েজজ্ঞ থাকতে হবে।

১) বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

২) ১৮ বছর বা তার উপরে বয়স হতে হবে।

৩) জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট এর কপি থাকতে হবে।

৪) লোন পরিশোধ করার জন্য ব্যাংককে যৌক্তিক ইনকাম সোর্স দেখাতে হবে।

আরও পড়ুনঃ জেনে নিন সঞ্চয়পত্র কোন কোন ব্যাংকে করা যায়

উপরোক্ত সকল বিষয়ে যদি আপনি যোগ্য থাকেন তাহলে ইসলামী ব্যাংকের লোনের জন্য আপনি আপনার নিকটতম ইসলামী ব্যাংক এর শাখায় যোগাযোগ করলেই বিস্তারিত প্রসেসিং সম্পর্কে জানতে পারবেন।

এবার ইসলামী ব্যাংক সম্পর্কে অধিক জিজ্ঞেসিত কিছু প্রশ্ন উত্তর অর্থাৎ FAQS জেনে নেওয়া যাক।

ইসলামী ব্যাংক লোন সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর । FAQS

কয় ক্যাটাগরিতে লোন দেয় ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ?

প্রধানত ছয় ক্যাটাগরিতে লোন দেয় ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বাংলাদেশ

ইসলামী ব্যাংক থেকে কৃষি লোন পাওয়া যায়?

হ্যাঁ। ইসলামী ব্যাংক থেকে কৃষি লোন পাওয়া যায়।

কিভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পাওয়া যায়?

সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লেই বুঝতে পারবেন কিভাবে আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পেতে পারেন। 

ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন সম্পর্কিত সর্বশেষ কথা

ব্যাংক কখনোই শুধু মাত্র কাগজ পত্র বা ডকুমেন্ট অনুযায়ী আপনাকে লোন দিয়ে দিবে না।

আপনাকে যৌক্তিক বিষয়ে তাদেরকে বোঝাতে সক্ষম হতে হবে। তাই সঠিক কাজে সঠিক দরকারে আপনি লোন করুন।

ব্যাংক থেকেই আপনার যৌক্তিক কারণে লোনের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকবেন।

আজকে আমরা জানতে পেরেছি ইসলামী ব্যাংক লোণ নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে। অর্থাৎ আপনি কত ধরনের লোন পাবেন ইসলামী ব্যাংক থেকে সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনেছেন।

বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত আর্টিকেল পড়তে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট।

20 thoughts on “ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি । islami bank loan details”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.