বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক ?

অনেকেই জানতে চান বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সেই সম্পর্কে। এর অন্যতম কারণ আমাদের দেশের পরিচিত ব্যাংকগুলো ঋণ দেয় ঠিকই তবে তার জন্য চাকরিজীবী কিংবা ব্যবসায়ী হতে হয়। অথবা বাড়ির কাগজ জমা দিতে হয়।

কিন্তু দেশের বড় একটি অংশ বেকার যুবক। এই যুবকরা কিভাবে লোণ নিবে সেই চিন্তা করেও এদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থা রাখেনি মূল ধারার ব্যাংকগুলো। কিন্তু তাই বলে কি বেকার আজীবন বেকারই থেকে যাবে?

না। বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক বিনা জামানতে ঋণ ব্যবস্থা রেখেছে। তবে এখানেও কিছু শর্ত আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে। আর একজন যুবক বা প্রাপ্ত বয়স্ক হিসেবে এই শর্ত আপনার জন্য একদম সহজ।

চলুন, কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে জামানত বিহীন ঋণ নেওয়ার শর্ত সমূহ জেনে নেওয়া যাক।

বিনা জামানত কি । জামানত মানে কি

বিনা জামানত অর্থ জামানত ছাড়া বোঝায়। আর জামানত হচ্ছে ব্যাংক থেকে লোণ বা ঋণ নেওয়ার সময় বিভিন্ন বিষয় গচ্ছিত রাখতে হয়। যাকে জামানত বলে।

আরও সহজভাবে বলতে গেলে বোঝায় যে আপনি যদি ঋণ নেওয়া টাকা শোধ না করতে পারেন তখন আপনার জমা দেওয়া জিনিস বিক্রি করে ব্যাংক তাদের টাকা উঠিয়ে নিবে।

আরও পড়ুনঃ  ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি

অনেক ক্ষেত্রে আবার জামানত নেওয়া হয় আপনি ঋণ শোধ করতে পারবেন কি না।

অর্থাৎ আপনার ইনকামের উৎস জামানত হিসেবে প্রমান চায়।

উপরের কোনোটাই বেকার যুবকদের কাছে সম্ভব না।

তাই বেকার যুবকদের কথা চিন্তা করে কর্মসংস্থান ব্যাংক বিনা জামানতে অর্থাৎ জামানত ছাড়া ব্যাংক লোণ দিয়ে থাকে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ব্যাক থেকে ঋণ পেতে শর্ত সমূহ।

আরও পড়ুনঃ কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন পদ্ধতি কেমন ?

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার আগে আরও একটি কথা জেনে নেই।

তা হচ্ছে কর্মসংস্থান ব্যাংক শুধু বেকার যুবকদেরই ঋণ দেয় তা নয়। কর্মসংস্থান ব্যাংক যুব মহিলাদেরও ঋণ দেয়।

বিনা জামানতে ঋণ পাওয়ার শর্ত

বিনা জামানতে ঋণ দেয় কর্মসংস্থান ব্যাংক। তবে এক্ষেত্রে ঋণ পাওয়ার জন্য তাদের কিছু সহজ শর্ত আছে।

এই শর্তগুলো আপনি মানতে পারলেই কর্মসংস্থান ব্যাংক আপনাকে বিনা জামানতে ঋণ দিবে। শর্তগুলো হচ্ছেঃ

১) বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। (তবে ৪০ বছর পর্যন্ত শিথিল যোগ্য)

২) অন্তত ৫ম শ্রেনি পর্যন্ত পড়াশোনা করা হতে হবে।

কিছু দিন আগেও ৮ম পাশের সার্টিফিকেট দেখাতে হত। এখন ৫ম শ্রেনিতেই হয়।

৩) যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বিসিক, বিডা, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন সহ অন্য যেকোনো সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হতে হবে। (সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে)।

আরও পড়ুনঃ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নিব ?

উপরের ৩ টি বিষয়ে আপনি সম্পন্ন হলেই সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। তবে আপনাকে এই টাকার উপর ৭ থেকে ৮% সুদ দিতে হবে।

আর যদি আপনি কিস্তি নিয়ে সমস্যা করেন তাহলে তা বেড়ে ১০% পর্যন্ত হতে পারে।

ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ পেতে করণীয়

কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ পেতে চাইলে আপনাকে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে।

সেই ফর্ম পূরণ করে আপনার নিকটস্থ কর্মসংস্থান ব্যাংকে জমা দিতে হবে।

তবে এর আগে আপনার উচিত কর্মসংস্থান ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে জেনে নেওয়া উচিত। আপনার সুবিধার্থে নিচে কর্মসংস্থান ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তাদের মেইন কন্টাক্ট নাম্বার দিয়ে দেওয়া হলো।

কর্মসংস্থান ব্যাংকঃ

টেলিফোন নম্বারঃ ০২৪৭১১১১৪১

ফ্যাক্সঃ ৮৮-২-৯৫৫৭৫৯৪

Website: http://www.kb.gov.bd/ 

Email: [email protected]

তবে এখানে যোগাযোগ করার থেকে আপনার সবথেকে ভালো হবে আপনার নিকটস্থ কর্মসংস্থান ব্যাংকের শাখায়  স্ব শরীরে গিয়ে ম্যানেজারের সাথে কথা বললে। এর কারণ আপনার ঋণের জন্য চুরান্ত সিদ্ধান্ত ব্রান্স ম্যানেজার নিয়ে থাকেন।

আআর আপনি যদি আপনার নিকটস্থ কর্মসংস্থান ব্যাংকের ঠিকানা না জানেন সেক্ষেত্রে গুগলে সার্চ করলে কিংবা উপরের নাম্বারে যোগাযোগ করে জিগ্যেস করলেই আপনি তথ্য পেয়ে যাবেন।

আশা করছি এই এতক্ষণে আপনি জেনেছেন বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সেই বিষয়ে।

ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে সতর্কতা

ঋণ ছারা একজন বেকার যুবক নিজ পায়ে স্বাবলম্বী হতে পারে না বললেই চলে। তবে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিপদে পরতে হতে পারে।

যেমন  আপনার প্লান সাকসেস হলো না। আয় হচ্ছে না। কিন্তু ব্যাংকের কিস্তি আপনাকে দিতেই হবে।

তাই ঋণ নিয়ে ৫০% টাকা রেখে দেওয়া উচিত। এবং ৫০% টাকা দিয়ে ব্যবসার আইডিয়া বাস্তবে রুপ দেওয়া উচিত।

আজ ব্যবসা শুরু করলে কালকেই আপনি লভ্যাংশ পাবেন না।তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।

ব্যবসা বা যা করার চিন্তা করেন না কেন সেটি যেন সঠিক পন্থায় হয় এবং সেই বিষয়ে আপনি ট্রেনিং এবং এক্সপার্ট প্রাপ্ত হন।

এবং তুলনামূলক সারা বছর যেন আপনার ব্যবসা চলে এমন কিছু সিলেক্ট করুন।

এই বিষয় দুটি লক্ষ্য রাখলেই আপনি বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে সফল হতে পারবেন।

একইসাথে আপনার হিসাব থাকতে হবে সঠিক এবং সাবলীল।

মনে রাখবেন ঋণ নিয়ে কখনো ঋণের টাকা উড়িয়ে কিংবা কাউকে এডভান্স দিয়ে রাখবেন না।

টাকা যার হাতে যায় তার কথা বলে।

বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে সর্বশেষ

আজকে আমরা বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক সেই বিষয়ে জেনেছি।

জেনেছি জামান বিহীন কাকে বলে। এবং বাংলাদেশে কোন ব্যাংক কি শর্তে বিনা জামানতে ঋণ দিয়ে থাকে।

আশা করছি এই বিষয়ে আপনি সকল তথ্য পেয়েছেন। এরপরে আরও কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করে জানান।

আমাদের সাথে কানেক্ট থাকতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজ Daainikkantha এ।

6 thoughts on “বিনা জামানতে ঋণ দেয় কোন ব্যাংক ?”

  1. আমার ৪০ লহ্ম টাকা লাগবে লোন আমার প্রজেক্ট জন্য কিভাবে পেতে পারি, খুব আরজেন্ট।

    Reply
    • আপনার যদি ব্যবসা থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার নিকট তম ইসলামী ব্যাংকের শাখা বা এজেন্টে যোগাযোগ করুন। ৪০ লাখ টাকা অনেক কম সময়ের মধ্যে ব্যবসার জন্য দিতে পারবে। ধন্যবাদ।

      Reply
  2. আমার ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা লোন দরকার ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে আমি কিভাবে পেতে পারি

    Reply
    • আপনার যে ব্যাংকে একাউন্ট আছে সেই ব্যাংকের ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করুন।

      Reply

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.