৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত

Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam

ইতিমধ্যে এই সাইটে ৭ মার্চ সম্পর্কিত প্রায় সব বিষয়ে লেখা হয়েছে। তাই এই পোস্টে শুধু মাত্র ৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত এই বিষয়-ই জানবো।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত” এ।

আর পড়ুনঃ ৭ মার্চের ভাষণ রচনা । ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রচনা

আজকের পোষ্টে আমরা ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত এবং ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতি কি পেয়েছিল এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।

৭ মার্চের ভাষণকে বিখ্যাত কেন বলা হয়

পূর্ব বাংলার জনগনের সাথে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত পশ্চিম পাকিস্তান যে শোষণ অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছিলেন সর্বশেষ ক্ষমতা হস্তান্তর না করায় শেখ মুজিবুর রহমান বুঝে গিয়েছিলেন যে জীবনের বিনিময়ে যুদ্ধ ছাড়া কোনও উপায়ে স্বাধীনতা এবং ক্ষমতা নেওযা সম্ভব না।

এরই প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাংলার আপামর জনসাধারণের মধ্যে বজ্র কণ্ঠের একটি ভাশন দেন। যে ভাশনে সকল বাঙ্গালীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে নামার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন।

তিনি যুদ্ধ কিভাবে শুরু হবে কিভাবে আমাদের জীবন দিতে হবে এই বিষয়ে একটি দিকনির্দেশনা দিয়ে বক্তৃতা দেন।

সেদিনের ভাষণের মাধ্যমে সকল বাঙ্গালী ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। শেখ মুজিবুর বলেছিলেন “আমি যদি হুকুম দেওয়ার নাও পাড়ি তোমরা যুদ্ধে নেমে যাবে”।

আরও পড়ুনঃ  ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য এত প্রান কেউ দেয়নি। এবং এরকম একটি ভাষণের মাধ্যমে গোটা জাতিকে যুদ্ধের জন্য একসাথে করতে পারেনি।

যা সেদিন পেরেছিলেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

সবকিছুর পিছনে একটা কারণ থাকে। আর মুক্তিযুদ্ধ সঙ্ঘটিত হওয়ার পিছনে ৭ মার্চের ভাষণের ভুমিকা ছিলও অপরিসীম।

বঙ্গবন্ধু একপ্রকার যেন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে গেছিলেন সেদিন। এজন্যই ৭ মার্চের ভাষণ এত বিখ্যাত।

৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর

পশ্চিম পাকিস্তানের হাত থেকে মুক্তি পেতে, স্বাধীন রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া কোনও উপায় ছিলনা বাঙ্গালী মানুষের কাছে।

অন্যদিকে যুদ্ধের জন্য দরকারি অস্ত্র কিংবা শক্তি ছিলও না।

তখন শুধু মাত্র বাঙ্গালী জাতি বঙ্গবন্ধুর ভাষণের উপর ভিত্তি করে এক হয়েছিল।

সেদিন সবাই বঙ্গবন্ধুর কথায় সাহস পেয়েছিল মানসিক ভাবে। সাহসিকতা না পেলে বাঁশ এবং নৌকা নিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা সম্ভব ছিলও না কখনোই।

বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বলেছিলেন, “আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব”। এর দ্বারা তিনি বুঝিয়েছিলেন যে,আমাদের দেশে এসে আমাদের ভাইদের মেরে যাবে আর আমরা কিছুই পারবো না। এটা কিভাবে সম্ভব। আমার দেশ আমার বাড়ি। আমার বাড়িতে আমাকে কে মারবে এত শক্তি কার আছে। সবাইকে দেখে নেবো”।

আরও পড়ুনঃ  ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য ( নমুনা বক্তব্য সহ)

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু পিছনের সকল অন্যায় যা পশ্চিম পাকিস্তান আমাদের সাথে করেছে তা মনে করিয়ে দিয়ে বাংলাই জাতির মধ্যে খব তৈরি করতে পেরেছেন পাকিস্তান সরকারের প্রতি।

ম্যাজিকাল ভাবে সব বাংলালিদের যুদ্ধের জন্য মুহূর্তের মধ্যে এক করতে সক্ষম হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

৭ মার্চের ভাষণে ৪ টি দাবী ছিলও বাঙ্গালির পক্ষে বঙ্গবন্ধুর।

কিন্তু সেদিন বঙ্গবন্ধুর অঘোষিত সবথেকে বড় লক্ষ্য ছিলও তিনি দেশের দামাল ছেলেদের যুদ্ধের জন্য তৈরি করবেন।

তাইতো তিনি বলেছেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশা আল্লাহ”।

৭ মার্চ সম্পর্কে আরও কিছু কথা

একটি দেশ যখন পরাধীন থাকে তখন কিভাবে বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকতে হয় তা একমাত্র দেশ স্বাধীন হওয়ার আগের মানুষ জানেন।

আজ গলা উচিয়ে বিশ্ব দরবারে আমাদের বাংলাদেশ।

কিন্তু এই স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরির পিছনে রয়েছে লাখ লাখ শহীদের রক্ত। 7 মার্চের ভাষণ দ্বারা এই স্বাধীন রাষ্ট্র পাওয়ার জন্য যে যুদ্ধ হয়েছিলো সেই যুদ্ধের প্রস্তুতি একতা তৈরি হয়েছিলো।

৭ মার্চের ১৮ মিনিটের ভাষণে বদলে যায় বাংলার চিত্র।

আরও পড়ুনঃ  ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)

সব পেশার মানুষ মানসিক ভাবে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়।

তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব অনেক অনেক অনেক বেশী।

৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কিত FAQS

৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি দেয় কবে ?

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনস্কো স্বীকৃতি দেয় ২০১৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর।

এদিন ৭ মার্চকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।

৭ মার্চ কি দিবস ?

ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে স্বীকৃত।

৭ মার্চের ভাষণ কত মিনিট ছিল ?

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ১৮ মিনিটের ছিলো।

৭ মার্চের ভাষণ কতটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে ?

৭ মার্চের ভাষণ ১৩ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

সর্বশেষ ১৩ তম ভাষা হিসেবে মাহাতো নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর কুড়মালি ভাষায় অনুদিত হয় ৭ মার্চের সম্পূর্ণ ভাষণটি।

৭ মার্চের ভাষণে কয়টি দাবি ছিল ?

চারটি দাবী ছিলো ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে।

৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে সর্বশেষ

আজকের পোষ্টে আমরা ৭ মার্চের ভাষণ কেন বিখ্যাত তা জেনেছি। জেনেছি ৭ মার্চের ভাষণ সম্পর্কে বিস্তারিত।

আশা করছি এই পোস্টটি পড়তে আসার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়েছেন।

পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে কমেন্ট করে আপনার অভিমত জানাতে পারেন।

এই পোস্ট সম্পর্কিত আরও অনেক পোস্ট পড়তে আমাদের National Category ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়তে DainikKantha ভিজিট করুন।

সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.