২০১৩ সাল থেকে দেশে একাদশ দ্বাদশ শ্রেণিতে এবং ক্রমান্বয়ে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে শুরু করে সকল ক্লাসে আইসিটি বই যুক্ত করা হয়। কিন্তু আইসিটির পূর্ণরূপ কি এবং আইসিটির জনক কে?
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “আইসিটির পূর্ণরূপ কি এবং আইসিটির জনক কে” এ। গোটা পোস্ট জুড়ে থাকছি আমি শেখ মাইনুল ইসলাম।
আজকের পোষ্টে আমরা আইসিটির পূর্ণরূপ কি, আইসিটির জনক কে, আইসিটি বলতে কি বুঝায় এবং আইসিটির ভবিষ্যৎ ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
আইসিটির পূর্ণরূপ কি
আইসিটির পূর্ণ রূপ হচ্ছে ইনফরমেশন কমিউনিকেশন এন্ড টেকনোলোজি। অর্থাৎ আইসিটি বলতে বোঝানো হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
ডিজিটাল বিশ্ব গঠনের লক্ষে গোটা বিশ্বের সকল দেশ নিজেদের যখন প্রযুক্তির শিক্ষায় তৈরি করা শুরু করে তখন বাংলাদেশ শিক্ষা কার্যক্রমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নামে একটি বই ষষ্ঠ থেকে সকল শ্রেণিতে যুক্ত করে।
আরও পড়ুনঃ গুগল কিভাবে কাজ করে
সেই থেকে আমাদের মধ্যে আইসিটি কি কেন এবং আইসিটির কাজ কি এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন জাগতে থাকে।
আরও সহজ ভাবে বললে, সাধারণত কম্পিউটার, ইন্টারনেট, অনলাইন, স্মার্টফোন ইত্যাদি প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে তথ্য ও যোগাযোগ নতুন যে মাত্রা পেয়েছে তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলা হয়।
আইসিটি আসছে ইংরেজি Information and communication Technology এর প্রথম তিন অক্ষর থেকে বাংলায় যার অর্থ হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
আইসিটির জনক কে
আইসিটি সম্পর্কে একটি কার্যকর মডেল প্রকাশ করায় মার্কিন গণিতবিদ ক্লড শ্যানন (Claude Shannon) কে আইসিটির জনক বলা হয়।
তবে, সামগ্রিকভাবে আইসিটির জনক একজনকে বলা ঠিক না। এর কারণ আইসিটি অনেকগুলি ডিভাইসের একত্রিত ফলাফল। সুতরাং সামগ্রিকভাবে ডিভাইস ভিত্তিক পিতৃ, উদ্ভাবক এবং প্রতিষ্ঠাতা হলেন অনেকে।
আরও পড়ুনঃ ডোমেইন হোস্টিং কি
সেই হিসেবে নিচে উল্লেখিত ব্যক্তিদের আইসিটির জনক বা তার অংশ বলা যায়ঃ
- কম্পিউটার- হাওয়ার্ড এইকিন ৷
- আধুনিক কম্পিউটার- চার্লস ব্যাবেজ ৷
- লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম- ট্যাভেলড লিনাক্স ৷
- কম্পিউটার প্রোগ্রামিং- গ্রেস হুপার
- লেজার প্রিন্টার- গেরি স্ট্রাকওয়েদার
- ডেক্সটপ/পিসি- হেনরি এডওয়ার্ড রবার্টস
- কম্পিউটার মাউস- ডগলাস এঙ্গেলবার্ট
- ল্যাপটপ- বিল মেগারিজ
- টেলিফোন- আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল
- সার্চ ইঞ্জিন- এলান এমটাজ
- ইন্টারনেট- ভিনটন ডি কার্ফ
- ই-মেইল- রে টমলিনসন
- উইকিপিডিয়া- জিমি ওয়ালস
- মাইক্রোপ্রসেসর- মার্সিয়ান টেড হফ
- গুগল- ল্যারি পেজ ও সার্জে ব্রিন
- জাভা প্রোগ্রামিং ভাষা- জেমস গজলিং
- ইউটিউব- চ্যাড হারলি, স্টিভ চ্যান ও জাভেদ করিম
- মাইক্রোসফট- বিল গেটস ও পল অ্যালেন
তবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত এবং পরিচিত আইসিটির জনক হচ্ছেন মার্কিন গণিতবিদ ক্লড শ্যানন (Claude Shannon)।
কারণ সর্বপ্রথম তার তৈরি মডেলের উপর ভিত্তি করেই আইসিটির পথ চলা শুরু হয়।
আইসিটি বলতে কি বুঝায়
আইসিটি বলতে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, অনলাইন, স্মার্টফোন, স্মার্ট ডিভাইস ইত্যাদি প্রযুক্তির উদ্ভাবনের ফলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রজুক্তিতে যে নতুন পথ দেখিয়েছে ডিজিটাল বিশ্ব গড়তে সাহায্য করছে তাকে আইসিটি (ICT) বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন
দেশ ও বিশ্ব বিগত দিনের থেকে অনেক এগিয়ে এসেছে যার সবচেয়ে বড় অবদান তথ্য প্রযুক্তির। এর কারণ, তথ্য প্রযুক্তির কারণেই গোটা বিশ্ব আজ আমাদের হাতের মুঠোয়।
গোটা বিশ্ব হাতের মুঠোয় বলতে, আপনার হাতে একটি স্মার্ট ফোন থাকলে আর ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে ঘরে বসে বিশ্বের সকল খবর আপনি জানতে পারবেন খুব সহজেই।
ঠিক একই ভাবে ব্যবসা, শিক্ষা, রাজনীতি সবক্ষেত্রেই অনন্য দৃষ্টান্ত রেখেছে যার সম্পূর্ণ অবদান আইসিটি তথা তথ্য প্রযুক্তির অবদানে।
আগে মানুষ বিদেশ গিয়ে টাকা আয় করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতো আর এখন ঘরে বসে কোটি কোটি টাকা কামানো সম্ভব শুধু এই প্রযুক্তির বিপ্লবের কারণে।
অর্থাৎ সার্বিকভাবে আইসিটি বলতে সামগ্রিকভাবে ইন্টারনেট, স্মার্ট ডিভাইস এর কারণে যোগাযোগ প্রযুক্তিতে যে পরিবর্তন এবং সংস্করণ এসেছে তাকে বোঝানো হয়।
এই পোষ্টের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যদি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আইসিটি বলতে কি বুঝায় এতক্ষণে তা বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই।
আইসিটির ভবিষ্যৎ ভুমিকা
আধুনিক দেশের থেকে বাংলাদেশ আইসিটি এর সঠিক ব্যবহারে অনেক পিছিয়ে আছে। তার পরেও বাংলাদেশে এত এত পরিবর্তন যার অন্যতম বৃহত্তর অবদান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির।
আজকে দেশের হাজার হাজার ফ্রিলান্সার দেশে বসে কাজ করে লাখ লাখ বৈদেশিক ডলার নিয়ে আসছে যার শতভাগ সম্ভব হয়েছে ইন্টারনেট এবং স্মার্ট ডিভাইস অর্থাৎ তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে।
আরও পড়ুনঃ সিএসই কাদের পড়া উচিত । সিএসই এর ভবিষ্যৎ কি
ঘরে বসে এক ব্যাংকের টাকা অন্য ব্যাংকে প্রেরণ, ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় থেকেও এক বৈঠকে অংশগ্রহণ এর সবই তথ্য প্রযুক্তির অন্যতম উদাহরণ।
যেখানে আমাদের দেশ অন্যান্য দেশের থেকে অনেক পিছিয়ে তারপরেও এত পরিবর্তন তাহলে একবার চিন্তা করেন আইসিটির শতভাগ সঠিক ব্যবহার করতে পারলে কত পরিবর্তন সম্ভব?
দেশের তরুণ রা আইটি উদ্যোক্তা হচ্ছেন। বিশ্বের বড় বড় প্রজেক্ট করছে সাফল্যের সাথে। এর গোটা অবদান তথ্য ও প্রযুক্তির।
দেশ ও আগামীর জন্য আইসিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে সক্ষম যা ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আশা করছি দেশ ও গোটা বিশ্বের আগামীর চ্যালেঞ্জ এবং আধুনিকায়নে তথ্য প্রযুক্তির অবদান কত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
আইসিটি সম্পর্কিত FAQS
আইসিটি সম্পর্কে একটি কার্যকর মডেল প্রকাশ করায় মার্কিন গণিতবিদ ক্লড শ্যানন (Claude Shannon) কে আইসিটির জনক বলা হয়।
ICT এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Information and communication Technology.
যার বাংলা অর্থ হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
প্রতিবছর ১২ ডিসেম্বর জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর দিবসটি পালন করে।
আইসিটি সম্পর্কিত সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা ict full meaning bangla, আইসিটির জনক কে সেসব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি।
এছাড়াও জেনেছি Ict এর জনক কে, আইসিটি বলতে কি বুঝায়, ict full meaning, ডিজিটাল দিবস কবে এবং আইসিটি সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর জেনেছি।
আইসিটি সহ টেকনোলোজি সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়তে Online tips and tricks ভিজিট করুন।
নিয়মিত সর্বশেষ সকল আপডেট পেতে চোখ রাখুন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।