বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম । how to open bkash agent account

আমাদের আশপাশে পাড়া, মহল্লায়, হাট বাজারে আমরা সেরা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ এজেন্ট দোকান দেখতে পাই। বিকাশ এজেন্ট দোকান থেকে আমরা বিকাশ সেবা গ্রহণ করি। কিন্তু আমরা কি জানি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম কি?

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম । how to open bkash agent account” এ।

আজকের পোষ্টে আমরা bkash agent account থেকে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তা জানবো, জানবো bkash agent account নেওয়ার যোগ্যতা, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ bkash agent সম্পর্কিত সব বিষয়ে জানবো।

বিকাশ এজেন্ট কাকে বলে ? বিকাশ এজেন্টের কাজ কি

পাড়ায়, মহল্লায় কিংবা বাজারে যেসব দোকানদার বিকাশ গ্রাহকদের বিকাশের সকল সেবা (টাকা আদান প্রদান, একাউন্ট খোলা) দিয়ে থাকে তাদেরকে বিকাশ এজেন্ট বলে।

একজন বিকাশ এজেন্ট কর্মীর মূলত বিকাশ এজেন্ট তার ব্যবসা এটি। মনে করেন, আপনার একটি দোকান আছে।

যেখানে প্রতিদিন অনেক মানুষ কেনাকাটা করে কিংবা আপনার দোকানের সামনে থেকে যায়।

আপনি আপনার দোকানের মূল ব্যবসা খুব ভালো ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন।

এবার আপনি বিকাশ এজেন্ট নিলে আপনার মূল ব্যবসার পাশাপাশি মাসেক অনেক বড় একটি পরিমাণ টাকা ( ৫ হাজার টাকা থেকে ৫ লাখ বা তারও বেশী হতে পারে) আয় হচ্ছে।

তাহলে একজন দোকান ব্যবসায়ী হিসেবে আপনার কেমন লাগবে?

মূলত বিকাশ এজেন্ট লাভ জনক ব্যবসা হওয়ায় আজকাল প্রায় প্রত্যেক দোকানে ফেলাক্সি লোড সহ bkash agent ব্যবসা এবং অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট ব্যবসা বেড়েই চলছে।

একজন দোকানদার যখন লাখ লাখ টাকা আয় করতে পারেন শুধু মাত্র বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করে।

আপনি আমি যখন বিকাশ থেকে টাকা আদান প্রদান কিংবা উত্তোলন করি তখন হাজারে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে নেয়। ওই টাকার মধ্যে একটি অংশ বিকাশ এজেন্ট পায়।

একজন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী তার বিকাশ এজেন্ট নাম্বার থেকে লেনদেন এর পরিমাণের বিভিন্ন অফার সহ অনেক বড় একটা পরিমাণ টাকা পায়। একে কমিশনও বলতে পারেন।

অর্থাৎ একজন bkash agent এর ইনকাম নিরভর করবে তার bkash agent account থেকে লেনদেনের উপর।

বিকাশ এজেন্ট নেওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা – শর্ত সমূহ

উপরের লেখাটুকু পড়লে এতক্ষণে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন যে বিকাশ এজেন্ট কাকে বলে এবং বিকাশ এজেন্ট এর কাজ কি।

এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশ এজেন্ট নেওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

যেকেউ চাইলেই বিকাশ এজেন্ট হতে পারবে না। একমাত্র বিকাশ এজেন্ট তারাই হতে পারে যাদের পাবলিক জায়গায় একটি দোকান কিংবা যেকোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে সেই ব্যক্তি – ই বিকাশ এজেন্ট নিতে পারবেন।

আরও সহজ ভাবে বললে, এমন জায়গা যেখান থেকে অনেক লোকজন যাতায়াত করে এবং যেখানে বিকাশ ব্যবহারকারী আছেহ।

ধরেন আপনার দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমন জায়গায় যেখানে প্রতিদিন বাজার হয় কিংবা ২ থেকে ৩ হাজার লোক যাতায়াত করে।

এবার সেই লোকদের মধ্যে ১ থেকে ২ হাজার লোকের বিকাশ একাউন্ট আছে। অর্থাৎ তারা বিকাশ গ্রাহক।

এদের মধ্যে ২০০ থেকে ৩০০ লোক আপনার দোকানের বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা আদান প্রদান করলো।

তাহলে চিন্তা করুন, আপনার বিকাশ এজেন্ট নিতে চাওয়া প্রতিষ্ঠানটি যদি ভালো একটা পজিশনে হয় তাহলে শুধু মাত্র বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট থেকে আপনি মাসে লক্ষ্ টাকাও আয় করতে পারবেন।

চলুন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগবে তা জেনে নেওয়া যাক।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগবে ?

দীর্ঘ দিনের একটি ব্যবসায়ীক চুক্তিপত্র হবে সেখানে সব ধরনের যোগ্যতা এবং ডকুমেন্ট থাকতে হবে এটাই স্বাভাবিক।

চলুন দেখে নেওযা যাক বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগবেঃ

  • জনচলাচল পূর্ণ জায়গায় যেকোনো দোকান কিংবা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।
  • দোকান/ ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
  • স্থান ভেদে পুজির জন্য বেশ কিছু টাকা লাগবে।
  • Android Mobile ব্যবহার করা জানতে হবে।
  • সদ্য তোলা ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • কোনও ধরনের বিকাশ একাউন্ট নেই এমন একটি বৈধ সচল সিম থাকতে হবে।
  • বাংলা এবং ইংরেজি সাবলীল ভাবে পড়তে জানতে হবে।

উপরের এই বিষয়গুলো যদি আপনি প্রস্তুত করতে পারেন তাহলে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম অনুযায়ী আপনি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারবেন খুব সহজ পদ্ধতিতেই।

আপনার দোকান কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ট্রেড লাইসেন্স না থাকলে আপনার ইউনিয়ন/ পৌরসভা থেকে সহজেই করে নিতে পারবেন।

সেক্ষেত্রে স্থান বা এলাকা ভেডে ২০০ থেকে ৫০০ বা ১ হাজার টাকা লাগতে পারে। 

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার নিয়ম । বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট করার উপায়

প্রিয় পাঠক, এই পোষ্টের শুরু থেকে এই পর্যন্ত যদি পড়ে থাকেন তাহলে বিকাশ এজেন্ট সম্পর্কে মোটামুটি একটি ধারণা পেয়েছেন।

এবার চলুন আজকের পোস্ট “বিকাশ এজেন্ট খোলার নিয়ম” সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা একটু সময় সাপেক্ষ এবং জটিল প্রক্রিয়া।

তবে আপনি সব বিষয়ে যদি যোগ্য থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার জন্য বিকাশ এজেন্ট পাবেন খুব সহজে।

তিনটি উপায়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা যায়। যে তিনটি উপায়ে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা যায় তা হচ্ছেঃ

  • নিকতম বিকাশ সার্ভিস পয়েন্ট থেকে।
  • বিকাশ মার্কেটিং অফিসার দ্বারা।
  • অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা।

গুরুত্ব পূর্ণ ডকুমেন্ট (ছবি, এনআইডি কার্ডের কপি, ট্রেড লাইসেন্স এর কপি, টিন সার্টিফিকেট এর কপি) একত্রে সংগ্রহ করতে হবেহ।

এরপর এই গুলো নিয়ে আপনার নিকটতম বিকাশ সার্ভিস পয়েন্টে যোগাযোগ করে আপনার বিকাশ এজেন্ট নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।

এরপর বিকাশ সার্ভিস পয়েন্ট থেকে আপনার দোকান/ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসবে ভিজিট করতে। এরপর সার্বিক দিক বিবেচনা করা আপনি যোগ্য হলে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট দেওয়া হবেহ।

একই ভাবে বিকাশ মার্কেটিং অফিসার এর কাছে যোগাযোগ করলে আপনাকে একই ভাবে সকল কাগজ পত্র জমা দিতে হবেহ।

এবং অনলাইনে বিকাশ একাউন্ট খোলা -র জন্য আপনাকে বিকাশের একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে।

এরপর সেটি আপনার এলাকার বিকাশ মার্কেটিং অফিসারের কাছে পাঠানো হবে বিকাশ হেড অফিস থেকে। পরবর্তী সকল কাজ বিকাশ কর্তৃপক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবেহ।

আপনি যদি অনলাইন থেকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট ফর্ম পূরণ করতে চান তাহলে আপনাকে bkash agent registration form পূরণ করতে হবে।

এরপর বিকাশের হেড অফিস পরবর্তী সকল কাজ যেমন আপনি যোগ্য কি না যোগ্য হলে পরবর্তী পদক্ষেপ বিকাশ প্রতিনিধি আপনাকে জানাবে।

আপনি যদি বিকাশের এজেন্ট একাউন্ট নিতে চান তাহলে সবথেকে সহজ হচ্ছে ঘরে বসে অনলাইনে যাবতীয় কাগজ সংরুহ করে অনলাইন ফর্ম পূরণ করা।

bkash agent registration form পূরণ করে বিকাশকে সাবমিট করতে এখানে ক্লিক করুন।

bkash agent releted FAQS

বিকাশ agent account খোলার জন্য যোগ্যতা কি?

প্রাথমিক অবস্থায় bkash agent account আবেদন করার জন্য নিচের যোগ্যতাসমূহ লাগবে। পরবর্তীতে আপনি বিকাশ এজেন্ট পাবেন কি না তা নির্ধারণ করবে বিকাশ প্রতিনিধি।

জনচলাচল পূর্ণ জায়গায় যেকোনো দোকান কিংবা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে।
দোকান/ ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
স্থান ভেদে পুজির জন্য বেশ কিছু টাকা লাগবে।
Android Mobile ব্যবহার করা জানতে হবে।
সদ্য তোলা ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
কোনও ধরনের বিকাশ একাউন্ট নেই এমন একটি বৈধ সচল সিম থাকতে হবে।
বাংলা এবং ইংরেজি সাবলীল ভাবে পড়তে জানতে হবে।

bkash agent registration form কোথায় পাবো?

এই পোষ্টেই bkash agent registration form link দেওয়া আছে। সেখান থেকে ক্লিক করেই bkash agent registration form link ভিজিট করে বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

বিকাশ এজেন্ট নিয়ে মাসে কত টাকা ইনকাম করা যায়?

দেখুন, আপনি বিকাশ এজেন্ট নেওয়ার পর আপনার এজেন্ট একাউন্ট থেকে কত টাকা লেনদেন হবে তার উপর আপনার বিকাশ এজেন্ট ইনকাম নির্ভর করবে। কারণ আপনার বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর উপর আপনার একটি কমিশন থাকে। যা মাস শেষে বিকাশ আপনাকে দিয়ে থাকে।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলা নিয়ে সর্বশেষ কথা

আজকের পোষ্টে আমরা বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনেছি। এছাড়াও জেনেছি বিকাশ একাউন্ট সম্পর্কিত সর্বশেষ তথ্য।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সহ মোবাইল ব্যাংকিং এর বিকাশ সম্পর্কিত আরও সকল তথ্য জানতে আমাদের Bkash Category ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পরতে Dainik Kantha ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

3 thoughts on “বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম । how to open bkash agent account”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.