কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন । আধুনিক কম্পিউটার জনক কে

প্রিয় পাঠক, স্বাগত “ কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন ও আধুনিক কম্পিউটার জনক কে ” শিরোনামের এই পোষ্টে। আজকের পোষ্টে আমরা মূলত কম্পিউটার সম্পরকিত কিছু বিষয়ে জানবো।

যদ দিন যাছে দেশের সকল সেক্টরে ততই কম্পিউটার এর ব্যবহার বেড়েই চলছে। বিশ্বের আধুনিক সব দেশে আজ থেকে বেশ কিছু বছর আগে থেকেই কম্পিউটার নির্ভর করে চলছে সব কাজ।

আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন

বাংলাদেশেও খুব কম সময়ের মধ্যেই কম্পিউটার নির্ভর হয়ে যাচ্ছে।

আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, কম্পিউটার কি, কম্পিউটার কাকে বলে, কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন?

আধুনিক কম্পিউটার জনক কে, কম্পিউটার এর প্রকারভেদ, কম্পিউটার এর ইতিহাস এবং সর্বশেষে জানবো কম্পিউটার এর ব্যবহার এর সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা।

কম্পিউটার কি । কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন

কম্পিউটার হচ্ছে হিসাব গণনাকারী যন্ত্র। তবে, যখন কম্পিউটার তৈরি করা হয় তখন শুধু মাত্র গননার কাজে ব্যবহার করা হলেও এখন কম্পিউটার এমন কোনও কাজ নেই যেখানে অবদান রাখতে পারে না।

প্রকৃত অর্থে কম্পিউটার হচ্ছে মূলত এমন একটি যন্ত্র, যার মাধ্যমে তথ্য ইনপুট (প্রবেশ করে) দিয়ে বিভিন্ন ভাবে এনালাইসিস এবং আউটপুট (ফলাফল) পাওয়া যায়।

আরও সহজ ভাবে বললে, কম্পিউটার হচ্ছে এমন একটি যন্ত্র যার মধ্যে সব ধরনের ডেটা দিয়ে নিরদেশ করে রাখায় পরবর্তীতে তাকে যেমন ডিরেকশন দেওয়া হয় কম্পিউটার তেমনই রেজাল্ট দিয়ে থাকে।

আশা করছি কম্পিউটার কি এবং কম্পিউটার কাকে বলে সেই উত্তর পেয়ে গেছেন। এবার কম্পিউটার সম্পর্কিত বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কম্পিউটার আবিষ্কার করেন কে

আজ কম্পিউটার মানেই মনে হয় আধুনিক কম্পিউটার। তবে, কম্পিউটারের প্রথম আবিষ্কারের সময় কম্পিউটার ছিলও শুধু মাত্র গণনাকারী যন্ত্র হিসেবে।

আরও পড়ুনঃ জিমেইল আইডি কিভাবে খুলবো

কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা দেন বিজ্ঞানী চার্লস ব্যাবেজ। কম্পিউটার এর মেকানিক্যাল সাইটে কাজ করে কম্পিউটার এর বাস্তব রুপ দেন চার্লস ব্যাবেজ।

পরবর্তী সময়ে চার্লস ব্যাবেজ এর করা নকশার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের আধুনিকায়ন রুপ দেওয়া হয়।

তাই কম্পিউটার আবিষ্কার করেন চার্লস ব্যাবেজ। স্বীকৃত ভাবেই চার্লস ব্যাবেজ কম্পিউটারের আবিস্কারক।

আধুনিক কম্পিউটার জনক কে

কম্পিউটারের অদ্ধ্যাপক চারলচ ব্যাবেজ কম্পিউটারের জনক। তবে আপনি কি জানেন আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে? এই বিষয়ে অনেকের অনেক মন্তব্য থাকলেও  মূল বিষয় হচ্ছে এই যে,

আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কার এর পিছনে অনেকে অবদান রেখে আসছে।

তবে কম্পিউটার সাধারণ একটি হিসাব গণনাকারী যন্ত্র থেকে আধুনিক কম্পিউটারে রুপ দেওয়ার চিন্তা কাজ শুরু এবং সকল পরিকল্পনার সম্পূর্ণ প্রকল্প গ্রহণ করে কাজ শুরু করে ছিলেন চার্লস ব্যাবেজ।

তাই, কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন বা আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে এই চার্লস ব্যাবেজ কম্পিউটার আবিষ্কার করেন এবং আধুনিক কম্পিউটারের জনক চার্লস ব্যাবেজ।

তবে চার্লস ব্যাবেজ এর এই কাজে তার মৃত্যুর আগে এবং পরে সরাসরি অনেক ব্যক্তি এই কাজের সাথে জড়িত ছিলেন।

কম্পিউটার এর প্রকারভেদ

আমরা অনেকেই কম্পিউটার এর প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে চাই।

কিন্তু আমরা কি জানি যে, কম্পিউতারের প্রকারভেদ হয় বেশ কয়েকটি বিসয়র উপর ভিত্তি করে।

যেমন, কাজের উপর ভিত্তি করে, আকার আকৃতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটারের প্রকারভেদ বিচার বিশ্লেষণ করা হয়।

চলুন গঠন কাজের প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার কয় প্রকার, কি কি এবং কোনটির কাজ কি তা জেনে নেওয়া যাক।

গঠন ও কাজের প্রকৃতির দিক থেকে কম্পিউটার এর প্রকারভেদ তিনটি। অর্থাৎ গঠন ও কাজের উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার তিন প্রকার।

১) অ্যানালগ কম্পিউটার – Analog Computer.

2) ডিজিটাল কম্পিউটার – Digital Computer.

3) হাইব্রিড কম্পিউটার – Hybrid Computer.

অ্যানালগ কম্পিউটার

কম্পিউটার আবিষ্কার হওয়ার প্রথম দিকে তৈরি হয়েছিলো অ্যানালগ কম্পিউটার।

অ্যানালগ কম্পিউটার থেকে মূলত বৈদ্যুতিক সংকেতের দ্বারা ইনপুট নিয়ে থাকে।

এবং আউটপুট হিসেবে বিভিন্ন অ্যানালগ সিস্টেম যেমনঃ মিটার, ওসিলোসকোপ সহ অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকে।

মোটর সাইকেলের স্পিডোমিটার, প্লাইড রুল, অপারেশনাল অ্যামপ্লিফায়ার সহ অন্যান্য ডিভাইসগুলো অ্যানালগ কম্পিউটার এর আউটপুত এর উদাহরণ।

অ্যানালগ কম্পিউটার থেকে প্রাপ্ত ফলাফল অন্যান্য কম্পিউটার এর থেকে তুলনামুলক সঠিক হয় না।

অর্থাৎ, ডিজিটাল বা হাইব্রিড কম্পিউটারের থেকে সঠিক ফলাফল প্রদানের দিক থেকে অ্যানালগ কম্পিউটার অনেক পিছিয়ে।

ডিজিটাল কম্পিউটার

আপনি আজকাল আপনার আশপাশে যত কম্পিউটার দেখতে পাচ্ছেন এই সবই একেকটি ডিজিটাল কম্পিউটার।

ডিজিটাল কম্পিউটার বাইনারি সখ্যা (০ এবং ১) সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো

এবং ডিজিটাল কম্পিউটারে ইনপুট করা সকল তথ্য বাইনারি সংখ্যায় কনভার্ট করে।

এরপর ফলফাফল তৈরি করে সেই তৈরিকৃত ফলাফলের বাইনারি সংখ্যাকে মনিটরের মাধ্যমে স্বাভাবিক ভাষায় প্রকাশ করে।

আরও সহজভাবে বললে, ডিজিটাল কম্পিউটার আপনার দেওয়া সকল কমান্ড নিয়ে ফলাফল তইরির জন্য বাইনারি সংখ্যায় পরিবর্তন করে ফলাফল তৈরি করে।

এরপর বাইনারি সংখ্যাতে পাওয়া ফলাফলকে স্বাভাবিক ভাষায় পুনরায় কনভার্ট করে আপনার সামনে প্রদর্শন করে।

ডিজিটাল কম্পিউটার সাধারণত সব ধরনের আউটপুট মনিতরে প্রদর্শন করে থাকে। এজন্য শুধু মনিটরই যথেষ্ট। আলাদা ভাবে কোনও রকম মিটার বা অন্য কোনও প্যারামিটারের দরকার হয় না।

এছাড়া অ্যানালগ কম্পিউটারের তুলনায় হাজার গুন বেশী শক্তিশালি হচ্ছে ডিজিটাল কম্পিউটার। এবং অ্যানালগ কম্পিউটারের থেকে ডিজিটাল কম্পিউটার এর উত্তর অনেক বেশী সুক্ষ হয়ে থাকে।

একদম নির্ভুল এবং সুক্ষ ফলাফল এবং ব্যবহারের সুবিধার কারণেই ডিজিটাল কম্পিউটার পুরো বিশ্ব রাজ করে আসছে।

হাইব্রিড কম্পিউটার – Hybrid Computer

অ্যানালগ এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের মিশ্রিত তৈরি হচ্ছে হাইব্রিড কম্পিউটার। হাইব্রিড কম্পিউটার তথ্য গ্রহণ করে অ্যানালগ পদ্ধতিতে। এবং তথ্য প্রসেসিং করে প্রাপ্ত ফলাফলের আউটপুট দেয় হাইব্রিড কম্পিউটার।

আরও সহজ ভাবে বললে, আপনি হাইব্রিড কম্পিউটারে কোনও কমান্ড দিলে কম্পিউটারটি অ্যানালগ পদ্ধতিতে আপনার দেওয়া কমান্ড গ্রহণ করবে। এরপরে আপনার দেওয়া কমান্ড কম্পিউতারের ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করবে।

হাইব্রিড কম্পিউতারের ডিজিটাল অংশ আপনার কমান্ড প্রসেসিং অনুযায়ী ডিজিটালি করতে প্রদর্শন করবে।

হাইব্রিড কম্পিউটার মূলত অনেক বেশী এক্সপেন্সিভ। অর্থাৎ এটি ব্যবহার করা অনেক বেশী খরুচে। হাইব্রিড কম্পিউটারের ফলাফল একদম সুক্ষ হয়। এটি বিভিন্ন ধরনের ল্যাব কিংবা পরীক্ষাগারে ব্যবহার করা হয়।

কম্পিউটার এর ব্যবহার

প্রিয় পাঠক, কম্পিউটার এর ব্যবহার নেই এখন এমন একটি কাজের সেক্টর আমাকে দেখাতে পারবেন? আমি পারবো না। আমি যত কাজ দেখি সবকিছুর সাথে কম্পিউটার কোনও না কোনও ভাবে সম্পৃক্ত।

আরও পড়ুনঃ  গুগল একাউন্টের পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে করণীয়

আপনার হয়তো এখনো বিষয়টা অস্পষ্ট মনে হচ্ছে। চলুন তাহলে কম্পিউটার এর ব্যবহার কোন কোন সেক্টরে ভুমিকা রাখছে একেক করে জেনে নেওয়া যাক।

১) তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণঃ আগে যেকোনো অফিস বা আদালতের ফাইল সংগ্রহ করা এবং পরে এর মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি ফাইল খুঁজে বের করা একপ্রকার অসম্ভব ছিলও।

কিন্তু সকল তথ্য সংগ্রহে কম্পিউটারের ব্যবহার শুরুর পড় থেকে এখন সেকেন্ডের মধ্যে সব বের করে ফেলা সম্ভব এবং চুল ছেরা বিশ্লেষণ করা সম্ভব।

২ শিক্ষা ক্ষেত্রেঃ শিক্ষা ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ভুমিকা নাই কোন বিষয়ে? পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন থেকে শুরু করে নাম্বার পত্র বেতন, হাজিরা সহ শিক্ষার্থীদের সব বিষয়গুলো কম্পিউতারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

৩) চিকিৎসা ক্ষেত্রেঃ ছোট বড় সবধরনের অপারেশন, পরীক্ষা নিরীক্ষা থেকে শুরু করে সবকিছুই এখন কম্পিউটার দ্বারা করা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞান আজ যতটা উন্নত তার শতভাগ অবদান চিকিৎসাক্ষেত্রে কম্পিউটারের অবদান।

৪) ব্যাংকিং বীমা ক্ষেত্রেঃ হিসাব, কম্পিউটার আবিষ্কারের প্রথম কারণ ই ছিলও হিসাব নিকাশ করা। আর এখন এটি ডিজিটাল হওয়ার কারণে ব্যাংকের শুরু থেকে শেষ সবটুকুই কম্পিউটার দ্বারা আবদ্ধ।

এছাড়াও যেসব বিষয়ে কম্পিউটার সরাসরি ভুমিকা রাখে তা হচ্ছেঃ

  • যুদ্ধ ও সামরিক অভিজান পরিচালনায়।
  •  রেলওয়ে এবং এয়ারলাইন টিকেট সচল রাখার কাজে।
  • গবেষণা ব্যবস্থা উন্নত এবং চলমান রাখতে।
  • যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে।
  • বিনোদন ব্যবস্থা সর্বাধিক উন্নত করে চলমান রাখতে।
  • আবহাওয়া সম্পর্কিত তথ্য দিতে।
  • অফিস আদালত ব্যবস্থাপনাতে।
  • ক্রাইম জগতে অপরাধিদের শনাক্ত করতে।

এছাড়াও আরও সব ক্ষেত্রেই কম্পিউটার এখন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আপনি চাইলেও কম্পিউটারের সহযোগিতা ছাড়া এখন কোনও কাজ করতে পারবেন না। হতে পারে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে কম্পিউটার আপনার কাজতির সাথে সংযুক্ত থাকবেই।

কম্পিউটার ছাড়া আপনি আমি কেউ ই কোনও কাজ সম্পাদন করতে পাড়ি নাহ।

তাই কম্পিউটার সম্পর্কে বা কম্পিউটার এর ব্যবহার সম্পর্কে সকলেরই জানা অত্যন্ত জরুরি।

কম্পিউটার আবিষ্কার নিয়ে সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন এবং আধুনিক কম্পিউটার জনক কে সে সম্পর্কে জেনেছি।

আশা করছি এই বিষয়ে জানতে পেরেছেন। এছাড়া এই বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।

এই সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়তে টেকনোলজি ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।

চোখ রাখুন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.