১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষে বিজয় লাভ করে। আজকে আমরা ১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার দেওয়ার নিয়ম এবং ১৬ ই ডিসেম্বর এর নমুনা বক্তব্য জানবো।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোষ্ট “১৬ ই ডিসেম্বর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ) এ।

আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, ১৬ ডিসেম্বর কেন বিজয় দিবস পালন করা হয়, ১৬ ডিসেম্বর বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম সহ ১৬ ই ডিসেম্বর এর একটি নমুনা বক্তব্য জানবো।

১৬ ডিসেম্বর

১৯৭১ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে আমরা বিজয় অর্জন করি। আর সেই থেকেই প্রত্যেক বছর ১৬ ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস পালন করা হয়।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে স্কুল, কলেজ, সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানে বিভিন্ন আয়োজন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা

যেখানে অনেকের ১৬ ই দিসেম্বরের বক্তব্য বা বিজয় দিবসের বক্তব্য দিতে হয়। কিন্তু অনেকেই মানুষের সামনে ১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দিতে গিয়ে সব তথ্য জানার পরেও গুছিয়ে বলতে পারে না।

বক্তব্য দেওয়ার আগে

শুধু ১৬ ডিসেম্বর ই না বরং যেকোনো বক্তব দেওয়ার আগে যে বিষয়ে বক্তব্য দিবেন সেই বিষয়ে তথ্যগত জ্ঞান থাকতে হবে।

১৬ ই ডিসেম্বর নিয়ে সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনার জানা থাকলে তবেই আপনি মানুষের সামনে বলার জন্য অনেকটা প্রস্তুত।

এর অন্যতম কারণ মুখস্ত করে উপস্থিত বক্তৃতা দেওয়া যায় না। তাই ১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার আগে ১ ই ডিসেম্বর সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান অর্জন করেন।

এরপর স্টেপ বাই স্টেপ সাজিয়ে বলার জন্য কয়েকবার একা একা মুখে শব্দ করে প্রাকটিস করেন।

আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের আয়তন কত বর্গ কিলোমিটার ?

১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দিতে গিয়ে আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে না। সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ বা ৫ মিনিট সময় পাবেন।

আবার, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর থেকেও কম সময় উপস্থিত বক্তব্যের সময় হয়ে থাকে।

আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা । মহান বিজয় দিবস রচনা লেখার নিয়ম

মনে রাখবেন বক্তব্য মানে রচনা না যে আপনি শুরু থেকে শেষ সব বলবেন।

বক্তব্য মানে তথ্যপূর্ণ কয়েকটি বাক্য, আবেগ, এবং করণীয় এর একটি মিশ্রিত ফল।

১৬ ডিসেম্বর বক্তব্যের শুরুতে

আপনি বক্তব্য দেওয়ার জন্য দাড়িয়েই  ১৬ ডিসেম্বর নিয়ে কথা বলা শুরু করবেন? একদমই না।

আপনি ষ্টেজে ওঠার পরে বিজয় অর্জনের পিছনের কারিগরদের স্মরণে এক থেকে দুই লাইন অমর বানী দিয়ে শুরু করবেন।

যেমন হতে পারে,

“এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়, রক্তদাতাদের ভুলি কিভাবে হায়”

এরপরে গভির শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবেন মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের। স্মরণ করবেন সম্ভ্রম হারানো মা বোনদের। স্মরণ করবেন জাতীয় চার নেতাকে। স্মরণ করবেন স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে।

এরপরে সকল প্রসংশা মহান সৃষ্টিকর্তার বলবেন। এরপরে মঞ্চে উপস্থিত গণ্যমান্য (যেমন শিক্ষক/সভাপতি/ অফিস প্রদান/ অন্য কোনো গণ্যমান্য ব্যক্তি) ব্যক্তিদের প্রতি বিজয়ী শ্রদ্ধা সালাম এবং ছতদের প্রতি বিজয়ী ভালোবাসা দিয়ে শুরু করবেন।

এরপর থেমে থেমে অন্তরের গভীর থেকে বিজয় নিয়ে কয়েকটি কথা বলবেন। যা বিজয়ের মর্ম্মটা প্রকাশ করবে।

এজন্য বিজয় অর্জনের লক্ষ্য থেকে শুরু করে শেষ প্রজন্ত উল্লেখ করবেন মোট তিন থেকে চার বাক্যে।

এখন আপনি এমন ভাবে বলবেন যেন সামনে থাকা সব মানুষগুলি শব্দহীন হয়ে আপনার কথার মধ্যে হারিয়ে যায়।

এরপর বিজয় দিবস উপলক্ষে আমাদের করণীয় কি। এবং সর্বশেষ বলবেন কিভাবে আমরা আমাদের দেশপ্রেম দ্বারা আমাদের কর্ম দ্বারা বিজয়কে সবসময় উজ্জীবিত রাখতে পারি।

এই বিজয়কে সবসময় বাঁচিয়ে রাখতে পারি সাড়া বিশ্বের সামনে। বাঙ্গালী জাতি হিসেবে কি করা উচিত আমাদের যাতে এই বিজয়কে অক্ষত রাখা যায় আজীবন।

সর্বশেষ আরও একবার মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবেন। এরপর আপনার উপস্থিত বা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করবেন।

আরও পড়ুনঃ শেখ রাসেল কুইজ

১৬ ই ডিসেম্বর উপস্থিত বক্তব্যে লক্ষণীয়

যেকোনো বক্তব্য দেওয়ার সময় আপনার বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন, আপনি যে বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন তা মনের ভিতর থেকে আবেগ মিশিয়ে মানুষকে জানাতে পারছেন কি না।

এমন ভাবে বলবেন যাতে মনে না হয় যে আপনি মুখস্ত কথা বলছেন। একটু থেমে থেমে বলবেন। সহজ এবং সাবলীল ভাষায় বলবেন। স্পষ্টভাবে বলবেন।

১৬ ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার সময়ে অবশ্যই শহীদদের স্মরণ করবেন যেভাবে উপরে বলা হয়েছে।

উপরের সম্পূর্ণ বিষয়টি সুন্দরভাবে আপনার বক্তব্যে ফুতিয়ে তুলতে পারলে আপনার বক্তব্য হবে সবার থেকে আলাদা এবং সেরা বক্তব্য।

১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য (নমুনা বক্তব্য)

“এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়, রক্তদাতাদের ভুলি কিভাবে হায়”

সকল প্রসংশা মহান সৃষ্টিকর্তার।

আজকের এই সভায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের।

স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। স্মরণ করছি স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুকজিবুর রহমানকে।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজকের সভায় উপস্থিত শ্রদ্ধেয় সভাপতি, উপস্থিত অদক্ষ মহোদয় সহ সকল শিক্ষকদের প্রতি আমার বিজয়ী সালাম, শ্রদ্ধা এবং সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা  । বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস আমাদের কয়জনের জানা আছে? আমরা কি জানি যুদ্ধের সময় এদেশের প্রত্যেকটি মানুষের আত্মগ্লানি আত্মত্যাগের কথা? আমরা কি পারছি মুক্তিযোদ্ধাদের মান রেখে দেশের জন্য কাজ করে আসতে?

মহান বিজয় দিবসের এই সভায় বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বিজয় অর্জনের পিছনের গল্পটা তরুণ প্রজন্মকে বেশি বেশি খুব বেশি জানানো উচিত।

আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত বিজয় দিবসে আমাদের করণীয় কি তা জানা। দেশে প্রেমিক যোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করে বিজয় অর্জন করে গিয়েছে। আমাদের উচিত তা রক্ষায় কাজ করা।

কিন্তু, বিজয় দিবসে আমাদের করণীয় সম্পর্কে আমরা কি অবগত আছি? অনেকেই বিজয় দিবসের দিন শুধু শহীদদের স্মরণ করেই নিজেদের দায় শোধরাতে চায়।

আরও পড়ুনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)

কিন্তু, প্রকৃত অর্থে আমরা সবাই জানি কিছু অর্জন যত কঠিন – তা ধরে রাখা তার চেয়েও কঠিন।

তাই আমাদের উচিত আমাদের বিজয় অর্জনের প্রতি লক্ষ রেখে বিজয় দিবসে আমাদের করণীয় সম্পর্কে জানা।

এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা। দেশ ও দশের জন্য কাজ করা।

দলমত, ধর্ম-গোত্র নির্বিশেষে দেশটাকে নিজেদের মতো করে সুন্দর রাখার প্রকল্পে দৃঢ় অঙ্গীকার বদ্ধ হতে হবে।

বিজয়ের এই দিনে গোটা জাতির সংকল্প হোক, “জীবন বাজী রাখি, দেশ নিরাপদ রাখি”।

১৬ ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়া নিয়ে সর্বশেষ

আজকের পোষ্টে আমরা জেনেছি ১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। আশা করছি এই বিষয়ে খুব সুন্দর ভাবে বোঝাতে পেরেছি।

আশা করছি এই পোষ্ট থেকে ১৬ ডিসেম্বরের বক্তব্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। এর পরেও আরও কোনো বিষয়ে জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।

বিজয় দিবস সহ সকল দিবস এবং জাতীয় বিষয় সমূহ সম্পর্কে আমাদের অন্যান্য সকল পোষ্ট পড়তে National Category ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের সকল পোষ্ট পড়তে Dainik kantha ভিজিট করুন।

সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

3 thoughts on “১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.