ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম । কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

Last Updated on 4 months by Shaikh Mainul Islam

মুসলমানদের জন্য ঈদুল আযহা অন্যতম একটি ধর্মীয় উৎসব। এইদিনে আল্লাহকে খুশীর জন্য পশু কোরবানি করা হয়। এজন্য ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম জানা জরুরি।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম । কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম” এ।

আজকের পোষ্টে আমরা ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম, কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম, কোরবানির ক্ষেত্রে লক্ষণীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সহ বিস্তারিত সব বিষয়ে জানবো।

উপরোক্ত বিষয় সমূহ সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ুন। এই পোষ্টটিতে সম্পূর্ণ বিষয় কোরআন এবং হাদিসের আলোকে বুঝিয়ে লেখা হয়েছে।

ভাগে করবানি দেওয়ার নিয়ম

আমাদের সমাজে ভাগে কুরবানি দেওয়ার অনেক বেশি প্রচলন আছে। শরিয়তেও ভাগে কোরবানি দেওয়ার জায়েজ আছে।

ভাগে কোরবানি বলতে বোঝানো হয় যে, একটি পশুকে একের অধিক ব্যক্তি মিলে কোরবানি দেওয়া। সাধারণত একটি পশু থেকে সর্বাধিক ৭ ব্যক্তি কোরবানি দিতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ ২০২৪ সালের কুরবানির ঈদ কত তারিখে

তবে চাইলে এর কম বা একজন ব্যক্তিও কোরবানি দিতে পারবেন। কোরবানির ভাগের মূল হিসাব হচ্ছে একটি পশুকে সাত ভাগ পর্যন্ত কোরবানি দেওয়া যাবে।

আরও পড়ুনঃ কোরবানির দোয়া । কোরবানি সম্পর্কে হাদিস 

গরু বা উট ভাগে কোরবানি দেওয়া যায়। ছাগল দিয়ে ভাগে কোরবানি করা যায় না এবং এর প্রচলনও নেই। এর কারণ ছাগল আকারে ছোট এবং বাজার দরে গরুর থেকে অনেক কম দামে পাওয়া যায়।

ভাগে কুরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে করণীয়

ভাগে কোরবানি বলতে একের অধিক ব্যক্তি মিলে একটি পশুকে কোরবানি দেওয়া। ভাগে কোরবানি দেওয়ার প্রচলন থাকলেও এক্ষেত্রে কিছু সুবিধা অসুবিধা আছে।

তাই ভাগে কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

যেমন,

কোরবানি দেওয়ার মূল এবং অন্যতম একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। যেখানে গোশতের হিসাব করা যাবে না।

আবার গোশত ভাগে কতটুকু ভাগে পাওয়া যাবে সেই হিসাবও রাখা যাবে না।

আরও পড়ুনঃ কুরবানির সম্পর্কিত সকল প্রশ্ন উত্তর

কিন্তু একসাথে অনেকে কোরবানি দিলে সবার নিয়ত এক না হলে কোরবানি সম্পন্ন না হওয়ার একটি সম্ভাবনা থেকেই যায়।

এরপরে, হালাল ভাবে অর্জিত টাকা দিয়েই কোরবানি করতে হবে।

আর এক্ষেত্রে ভাগে কুরবানি দিলে সবার টাকা হালাল না হওয়ার একটি সম্ভাবনা থেকে যায় যার ফলে কোরবানি না ও হতে পারে।

কারণ হারাম টাকার পরিমাণ তা যদি এক টাকাও হয় তাতেও কোরবানি কবুল হবে না। আর ভাগ কোরবানি দেওয়ায় এই সমস্যা সবথেক বড় সমস্যা।

এছাড়াও যখন একসাথে অনেকে কুরবানি দিতে চান তখন ভাগ করে মাংস বিলি করে কুরবানির সকল কাজ সম্পন্ন করতে অনেক বেশি সময় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুনঃ জিলহজ মাসের রোজা কয়টি এবং কোরবানির রোজা রাখার নিয়ম জেনে নিন

তাই ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক ভাগীদার এর টাকা হালাল হতে হবে এবং কুরবানির একমাত্র উদ্দেশ্য হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। তবেই ভাগে কোরবানি দেওয়া যাবে।

আর এত মধ্যে বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকলে কম টাকায় হোক একটি ছাগল কিনে নিজে একটি ছাগল দিয়েও কুরবানি দেওয়া যাবে।

ভাগে কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণীয়

  • সুস্থ সবল পশু ক্রয় করতে হবে
  • ভাগে যত জন থাকবে সবার টাকা হালাল এবং ভাগ অনুযায়ী সমান পরিমাণ হতে হবে।
  • সব কয়জন ভাগদারের উদ্দেশ্য শুধু মাত্র আল্লাহকে খুশী করা হতে হবে।
  • সঠিক নিয়ম অনুযায়ী শৃঙ্খল ভাবে কুরবানির মাংস বণ্টন করে দিতে হবে।

কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম

ভাগে কুরবনি দেন বা একক ভাগে কোরবানি দেন কোরবানি দেওয়ার সময় পশু শোয়ানোর পরে যে ব্যক্তি কোরবানি দেন তার বা তাদের সকলের নাম উচ্চারণ করে হুজুরগণ দোয়া পড়ে থাকেন।

এই প্রচলন অনেক জায়গায় বহু বছর ধরে চলমান। এক্ষেত্রে দেখা যায় যে, যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা কোরবানি দেন তাদের বাবার নাম সহ তাদের নাম উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুনঃ হজের নিয়ম কানুন । শুরু থেকে শেষ

ইসলামিক স্কলারদের মাশআলা অনুযায়ী, কোরবানির নাম মুখে উচ্চারণ করে আদায় করা ফরজ বা আবশ্যিক না।

তবে কোরবানির সময় কোরবানি দেওয়া ব্যক্তিদের নাম উচ্চারণ করে তাদের কোরবানি কবুল করে নেওয়ার কথা উচ্চারণ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করা যায়।

আরও পড়ুনঃ হজের নিয়ত আরবি ও বাংলা । হজ্জের নিয়ত নিয়ে বিস্তারিত

কোরবানির নাম দেওয়া বা উচ্চারণ করা আবশ্যিক না কারণ, কোন ব্যক্তি যখন কোরবানির পশু কেনার জন্য টাকা দেন বা রেডি করেন তখনই আল্লাহর কাছে কোরবানির নিয়ত সম্পন্ন হয়ে যায়।

আর আল্লাহ সকল বিষয়ে অবহিত। আল্লাহ সবার মনের কথা জানেন।

তাই কোরবানির নাম মুখে নিয়ে উচ্চারণ করে দোয়া করা জরুরি না। তবে নাম উচ্চারণ করলে কোন সমস্যা বা পাপ নেই।

যে হুজুর বা ব্যক্তি কোরবানির গরু জ *বা * হ করবে তিনি চাইলে একটি কাগজে সকলের নাম লিখে কোরবানির আগ মুহূর্তে সকলের নাম উচ্চারণ করে দোয়া করে নিতে পারেন।

কোরবানি সম্পর্কিত FAQS

মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি করা যাবে কি?

হ্যা। মৃত্যু ব্যক্তির নামে কোরবানি দেওয়া যাবে।

মৃত ব্যক্তির পরিবার, সন্তান বা যেকেউ চাইলেই মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি দিতে পারবেন। মৃত ব্যক্তির নামে কোরবানি করার বিধান আছে।

কোরবানি কয় নামে দেওয়া যায়?

কোরবানি এক ভাগ এক নামে দেওয়া যায়।

চাইলে একটি গরু বা পশু কিনে একই পরিবারের ব্যক্তিরা সর্বাধিক সাত জনের নামে কোরবানি দিতে পারেন।

ছাগল কোরবানির নিয়ম কি?

ছাগল কোরবানির নিয়ম হচ্ছে ছাগল এক ভাগে কোরবানি দিতে হয়। অর্থাৎ একটি ছাগল দিয়ে এক ভাগ কোরবানি দেওয়া যাবে।

হারাম টাকায় কোরবানি করা যাবে?

না। হারাম টাকায় শুধু কোরবানি ই নয় বরং কিছুই করা যাবে না।

কোরবানির গরু দিয়ে কি আকিকা হয় বা যায়?

হ্যা কোরবানির গরু দিয়ে আলাদা ভাগ দিয়ে আকিকা করা যায়।

ভাগে কোরবানি দেওয়ার নিয়ম নিয়ে সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। জেনেছি কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত।

এছাড়াও ভাগে কুরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে কি কি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জেনেছি।

কোরবানি এবং ইসলাম সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়ার জন্য Islamic info Category ভিজিট করুন।

সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।

4 thoughts on “ভাগে কুরবানি দেওয়ার নিয়ম । কোরবানির নাম দেওয়ার নিয়ম”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.