Last Updated on 6 months by Shaikh Mainul Islam
পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে বিশ্বের সকল ফুটবল খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিবছর একজনকে ব্যালন ডি অর দেওয়া হয়। তাই অনেকেই জানতে চান ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে।
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে (আপডেট সহ)” এ।
আজকের এই পোস্টে আমরা ব্যালন ডি অর কি, ব্যালন ডি অর এর যোগ্যতা এবং ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।
ব্যালন ডি অর কি
ব্যালন ডি অর হচ্ছে ফুটবল খেলয়ারদের পারফরম্যান্স বিবেচনা সাপেক্ষে সর্বোচ্চ সম্মাননা স্বরূপ একটি পুরষ্কারের নাম।
১৯৫৬ সাল থেকে ব্যালন ডি পুরষ্কার দেওয়া শুরু হয়। ব্যালন ডি অর অর্থ সোনার ফুটবল।
সেই অর্থে অনেকে ব্যালন ডি অর কে সোনার ফুটবল পুরস্কার ও বলে থাকেন।
তবে ব্যালন ডি অর সম্পূর্ণ সোনার তৈরি বল না। এটি পিতলের একটি আয়তাকার পাত এবং তামার সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়।
শুধু মাত্র ট্রফিটি পলিশ করার আগে স্বর্ণকার দ্বারা ১৮ ক্যারেটের সোনার দ্রবণে ডুবিয়ে তবেই পলিশ করা হয়।
পলিশ করে সম্পূর্ণ প্রস্তত করার পর একটি ব্যালন ডি অর এর ওজন হয় ৫ কেজি এবং প্রশস্ত হয় ৩১ সেন্টিমিটার।
প্রতি বছর পয়েন্ট অনুযায়ী সেরা খেলোয়াড়কে এই ব্যালন ডি অর পুরষ্কার দেওয়া হয়।কখনো যদি কোনও একাধিক প্লেয়ার একই পয়েন্ট অর্জন করে তখন ফুটবল সাংবাদিকদের জনপ্রিয়তার বিশ্লেষণে সেরা প্লেয়ার বাঁচাই করা হয়।
আরও পড়ুনঃ কে কতবার ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়েছে
সেখানেও যদি একাধিক প্লেয়ার সমান গ্রহণযোগ্যতা পায় তাহলে দ্বিতীয় প্লেয়ারকে ব্যালন ডি অর পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
একটি ব্যালন ডি অর একজন প্লেয়ারের সর্বোচ্চ সম্মানের। তবে এই ব্যালন ডি অর এর মূল্য তুলনামূলক অনেক কম।
একটি ব্যালন ডি অর এর মূল্য ২৯২০ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় মাত্র ৩ লাখ টাকা।
তবে নিঃসন্দেহে এই ব্যালন ডি অর্জন একজন ফুটবল খেলয়ারার জীবনে অন্যতম অর্জন।
এতক্ষণে জানা হয়ে গেছে যে, ব্যালন ডি অর কি এবং কি দিয়ে তৈরি হয় ব্যালন ডি অর।
এছাড়াও জানতে পেরেছেন ব্যালন ডি অর এর আয়তন ওজন।এছাড়াও জেনেছেন ব্যালন ডি অর এর মূল্য কত টাকা বা কত ডলার।
এবার আমরা জানবো ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে তাদের নাম।
ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে
১৯৫৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৬৭ বার ব্যালন ডি অর দেওয়া হয়েছে।এর মধ্যে একাধিকবার ব্যালন ডি অর পুরষ্কার পাওয়া প্লেয়ারের সংখ্যাও কম না।
সর্বাধিক ৭ বার ব্যালন ডি অর পেয়ে এই তালিকার শীর্ষে আছেন আর্জেন্টিনার বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি। মেসি এখন পর্যন্ত ৮ বার ব্যালন ডি অর পেয়েছে।
আর পড়ুনঃ কোপা আমেরিকা কাপ কে কতবার নিয়েছে (চ্যাম্পিয়ন লিস্ট আপডেট সহ)
এরপর ৫ বার ব্যালন ডি অর নিয়ে সর্বোচ্চ ব্যালন ডি অর অর্জনের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
অনালদ পর্তুগিজ এর একজন তারকা প্লেয়ার। রোনালদো মেসিকে টপকানোর তালিকায় প্রথম আছেন।
তৃতীয় খেলয়ার হিসেবে ফ্রান্সের মিশেল প্লাতিনি তিন বার ব্যালন ডি অর্জন করে সর্বাধিক ব্যালন ডি অর জেতার তালিকায় তৃতীয় স্থানে নাম লিখিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন লিস্ট
এছাড়া ব্রাজিলের রোনালদো দুই বার ব্যালন ডি অর জিতেছেন।
ব্রাজিলের রোনালদো এই দুইটি ব্যালন ডি অর জিতেন ১৯৯৭ এবং ২০০২ সালে।
এতক্ষণে দেখলাম কোন কোন প্লেয়ার সর্বোচ্চ বার ব্যালন ডি অর জিতেছেন বা অর্জন করেছেন।
এখন আমরা একটি ছকের মাধ্যমে ব্যালন ডি অর পুরষ্কার জেতা সকল প্লেয়ারদের লিস্ট দেখে নেই।
নিচের লিস্ট থেকে স্পস্ত বুঝতে পারবেন কোন দলের হয়ে কোন প্লেয়ার কত সালে ব্যালন ডি অর জিতেছেন।
ব্যালন ডি অর জেতা প্লেয়ারদের তালিকা (শুরু থেকে এই পর্যন্ত)
১৯৫৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যালন ডি অর জেতা সকল ফুটবল প্লেয়ারদের তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
সাল | প্লেয়ার | দেশ – ক্লাব |
---|---|---|
2023 | লিওনেল মেসি | ইন্টার মিয়ামি |
2022 | করিম বেনজেমা | ফ্রান্স – রিয়াল মাদ্রিদ |
2021 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – পিএসজি |
2020 | পুরস্কার দেয়া হয় নি | করোনায় স্থগিত ছিলো |
2019 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – বার্সেলোনা |
2018 | লুকা মদ্রিচ | ক্রোয়েশিয়া – রিয়াল মাদ্রিদ |
2017 | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো | পর্তুগাল – রিয়াল মাদ্রিদ |
2016 | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো | পর্তুগাল – রিয়াল মাদ্রিদ |
2015 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – বার্সেলোনা |
1014 | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো | পর্তুগাল – রিয়াল মাদ্রিদ |
2013 | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো | পর্তুগাল – রিয়াল মাদ্রিদ |
2012 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – বার্সেলোনা |
2011 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – বার্সেলোনা |
2010 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – বার্সেলোনা |
2009 | লিওনেল মেসি | আর্জেন্টিনা – বার্সেলোনা |
2008 | ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো | পর্তুগাল – ম্যানইউ |
2007 | কাকা | ব্রাজিল – মিলান |
2006 | ফ্যাবিও ক্যানাভারো | ইতালি – রিয়াল মাদ্রিদ |
2005 | রোনালদিনহো | ব্রাজিল – বার্সেলোনা |
2004 | আন্দ্রে শেভচেঙ্কো | ইউক্রেইন – মিলন |
2003 | পাভেল নেদভেদ | চেক রিপাবলিক – জুভেন্টাস |
2002 | রোনালদো | ব্রাজিল – রিয়াল মাদ্রিদ |
2001 | মাইকেল ওয়েন | ইংল্যান্ড – লিভারপুল |
2000 | লুইস ফিগো | পর্তুগাল – রিয়াল মাদ্রিদ |
1999 | রিভালদো | ব্রাজিল – বার্সেলোনা |
1998 | জিনেদিন জিদান | ফ্রান্স – জুভেন্টাস |
1997 | রোনালদো | ব্রাজিল – ইন্টারজিওনাল |
1996 | ম্যাথিয়াস সামের | জার্মানি – বরুসিয়া ডর্টমুন্ড |
1995 | জর্জ ওয়েহ | লাইবেরিয়া – মিলান |
1994 | রিস্টো স্টইচকভ | বুলগেরিয়া – বার্সেলোনা |
1993 | রবার্তো ব্যাজিও | ইতালি – বার্সেলোনা |
1992 | মার্কো ভ্যান বাস্তেন | নেদারল্যান্ডস – মিলান |
1991 | জিন-পিয়েরে পাপিন | ফ্রান্স – মার্সেই |
1990 | লোথার ম্যাথিউস | জার্মানি – ইন্টারজিওনাল |
1989 | মার্কো ভ্যান বাস্তেন | নেদারল্যান্ডস -মিলান |
1988 | মার্কো ভ্যান বাস্তেন | নেদারল্যান্ডস – মিলান |
1987 | রুড গুলিট | নেদারল্যান্ডস – মিলান |
1986 | ইগোর বেলানভ | সোভিয়েত ইউনিয়ন- ডায়নামো কিয়েভ |
1985 | মিশেল প্লাতিনি | ফ্রান্স – জুভেন্টাস |
1984 | মিশেল প্লাতিনি | ফ্রান্স – জুভেন্টাস |
1983 | মিশেল প্লাতিনি | ফ্রান্স – জুভেন্টাস |
1982 | পাওলো রসি | ইতালি – জুভেন্টাস |
1981, 1980 | কার্ল হেইঞ্জ রুমেনিগে | ওয়েস্ট জার্মানি – বায়ার্ন মিউনিখ |
1979, 1978 | কেভিন কেগান | ইংল্যান্ড |
1977 | অ্যালান সিমোনসেন | ডেনমার্ক – বরুসিয়া এম’গ্লাডব্যাক |
1976 | ফ্র্যাঞ্জ বেকেনবাওয়ার | জার্মানি – বায়ার্ন মিউনিখ |
1975 | ওলেগ ব্লোকহাইন | সোভিয়েত ইউনিয়ন – ডায়নামো কিয়েভ |
1974, 1973 | ইয়োহান ক্রুইফ | নেদারল্যান্ডস – বার্সেলোনা |
1972 | ফ্র্যাঞ্জ বেকেনবাওয়ার | জার্মানি – বায়ার্ন মিউনিখ |
1971 | ইয়োহান ক্রুইফ | নেদারল্যান্ডস – আয়াক্স |
1970 | গার্ড মুলার | জার্মানি – বায়ার্ন মিউনিখ |
1969 | গিয়ানি রিভেরা | ইতালি – মিলান |
1968 | জর্জ বেস্ট | নর্দান আয়ারল্যান্ড – ম্যানইউ |
1967 | ফ্লোরিয়ান অ্যালবার্ট | হাঙ্গেরি – Ferencv rosi TC |
1966 | ববি চার্লটন | ইংল্যান্ড – ম্যানইউ |
1965 | ইউসেবিও | পর্তুগাল – বেনফিকা |
1964 | ডেনিস ল | স্কটল্যান্ড – ম্যানইউ |
1963 | লেভ ইয়াশিন | সোভিয়েত ইউনিয়ন – ডায়নামো মস্কো |
1962 | জোসেফ মাসোপুস্ট | চেক প্রজাতন্ত্র – ডুকলা প্রাগ |
1961 | ওমর সিভোরি | ইতালি – জুভেন্টাস |
1960 | লুইস সুয়ারেজ | স্পেন – বার্সেলোনা |
1959 | আলফ্রেডো ডি স্টিফানো | স্পেন – রিয়াল মাদ্রিদ |
1958 | রেমন্ড কোপা | ফ্রান্স – রিয়াল মাদ্রিদ |
1957 | আলফ্রেডো ডি স্টিফানো | স্পেন – রিয়াল মাদ্রিদ |
1956 | স্ট্যানলি ম্যাথিউস | ইংল্যান্ড – ব্লাকপুল |
ব্যালন ডি অর সম্পর্কিত কিছু তথ্য
ব্যালন ডি অর এর প্রথম নাম ছিলও কোপা আমেরিকা ব্যালন ডি অর। পরবর্তীতে নামকরণ করা হলও ফিফা ব্যালন ডি অর।
এরপর ফিফা থেকে ফ্রান্স আলাদা হয়ে যাওয়ার পরে এর নাম হয় শুধু মাত্র ব্যালন ডি অর।
একটি ব্যালন ডি অর র আর্থিক মূল্য অনেক কম।
তবে এর দ্বারা প্রাপ্প সম্মান একজন প্লেয়ারের কাছে রীতিমত সোনার হরিনের মতো সম্মান।
এই ব্যালন ডি অর এর দ্বারা প্লেয়ারের মেধা প্রকাশিত হয় বললেও ভুল হবে না।
ব্যালন ডি অর সম্পর্কিত FAQS
মেসি ব্যালন ডি অর ৭ টি। এবং মেসি সর্বোচ্চ ব্যালন ডি অর প্রাপ্ত প্লেয়ার।
এখন পর্যন্ত ২ বার ব্যালন ডি এর জন্য নাম আসলেও একই পয়েন্টে অন্যজন পেয়ে যায়।
তবে ফুটবল তারকাদের মতে খুব তারাতারি ব্যালন ডি অর পাবেন ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার।
১৯৫৬ সাল থেকে প্রত্যেক বছর সার্বিক দিক বিবেচনায় সেরা ফুটবল প্লেয়ারকে ব্যালন ডি অর দেওয়া হয়।
2022 সালের ব্যালন ডি অর পেয়েছেন করিম মোস্তফা বেনজেমা যাকে সবাই করিম বেনজেমা বলেই চিনে। তিনি ফ্রান্সের নাগরিক।
এই প্রশ্নের জবাবে দানি আলভেস বলেন, “নেইমার হচ্ছে সময়ের সেরা ফুটবলার, তবে মেসি সর্বকালের সেরা ফুটবলার”।
নেইমার একজন ব্রাজিলিয়ান ফুটবল তারকা।
এই পোস্টেই ফুটবল ইতিহাসে ১৯৫৬ থেকে শুরু করে সর্বশেষ ব্যালন ডি অর রেংকিং এবং আপডেট তালিকা দেখতে পাবেন।
ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে তা নিয়ে সর্বশেষ
আজকের পোষ্টে আমরা ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে তা জেনেছি। জেনেছি ব্যালন ডি অর এর মূল্য কত।
জেনেছি ব্যালন ডি অর তালিকা ১৯৫৬ থেকে ২০২২ পর্যন্ত।
এছাড়াও জেনেছি ব্যালন ডি অর কি দিয়ে তৈরি। এবং ব্যালন ডি অর এর ওজন এবং আয়তন কত।
ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে তাদের দলের নাম, ক্লাবের নাম, এবং ব্যলন ডি অর জয়ের সাল জেনেছি।
আপডেটঃ ব্যালন ডি অর পেয়েছে আর্জেন্টিনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি (সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ এ)
আশা করছি এই পোষ্টের মাধ্যমে ব্যালন ডি অর সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে পেরেছেন।
ফুটবল সহ খেলাধুলা সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়তে Sports Category ভিজিট করুন।
চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
10 thoughts on “ব্যালন ডি অর কে কতবার পেয়েছে (আপডেট সহ)”