Last Updated on 7 months by Shaikh Mainul Islam
বর্তমান সময়ে প্রত্যেক ব্যক্তির একটি ব্যাংক একাউন্ট থাকা উচিত। কিন্তু অনেকের মধ্যে দেখা যায় যে, ব্যাংক একাউন্ট খোলা নিয়ে অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগেন। এর কারণ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম না জানা।
আজকের পোষ্টে আমরা যেকোনো ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কি কি দরকার কি পরিমাণ টাকার দরকার টা জানবো।
মোট কথা আজকের ব্লগটি পড়ার পরে যেকেউ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে পারবেন।
চলুন, কথা না বাড়িয়ে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক।
ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কি কি ডকুমেন্টস লাগে ?
ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য মূলত কিছু ডকুমেন্টস লাগে। আপনি দেশের একজন নাগরিক হলেই হবে।
সব ধরনের ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আপনার একই ধরনের ডকুমেন্ট লাগবে। ব্যাংক একাউন্ট খুলতে যেসব ডকুমেন্ট বা কাগজ পরত লাগবে তা হচ্ছেঃ
১) জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। (ভোটার আইডি কার্ড)
২) সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি (পিকচার)।
৩) নমিনির জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
৪) নমিনির ১/২ কপি সদ্য তোলা ছবি।
৫) যে ব্যাংকে একাউন্ট খুলবেন সেই ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা। এটি ৫০০ কিংবা ১০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
তবে ভোটার আইডি কার্ডের পরিবর্তে প্রায় সব ব্যাংকে ড্রাইভিং লাইস্নস/ পাসপোর্ট দিয়েও একাউন্ট খোলা যায়। কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড সবচেয়ে বেষ্ট হয়।
এছাড়া আপনার এই ডকুমেন্টগুলো সংগ্রহ করে যে ব্যাংকে একাউন্ত খুলবেন সেই ব্যাংকে গিয় যেকোনো দায়িত্বরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর কাছে একাউন্ট খোলার কথা বললেই তারা পরবর্তী সকল পদক্ষেপ নিবেন।
এখানে বলে রালহা ভালো যে, নমিনির ছবির পিছনে নমিনির সম্পূর্ণ নাম নমিনির হাতে লিখে নিয়ে আসতে হবে।
এছাড়া অনেক সময় ব্যাংক থেকে একটি বইয়ের মতো ফর্ম বই দিয়ে থাকে। এই ফর্মটি আপনাকে পূরণ করতে বলতে পারে।
আপনি এই বিষয়টি তাদের উপরেই দায়িত্ব দিবেন। কারণ একটি ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফর্মে অনেক অত্থ চায় যা স্বাভাবিকভাবে আপনি আমি পূরণ করতে গেলে ভুল হতে পারে।
তবে দায়িত্ব রত কর্মকর্তাকে অবশই ফর্ম পুরনে সহযোগিতা করতে হবে তথ্য দিয়ে। এছাড়া নিজের মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।
মোবাইল নাম্বার দেওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় ব্যবহার করা নাম্বারটি দিবেন। এবং ব্যক্তিগত নাম্বারটি দিবেন।
এর কারণ, পরবর্তীতে আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে সকল প্রকার লেনদেনের তথ্য মেসেজের মাধ্যমে আপনার ওই মোবাইল নাম্বারে দেওয়া হবে।
স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি লাগে
দেশের অনেক ব্যাংকই এখন স্টুডেন্ট একাউন্ট সার্ভিসটি চালু করছে। এর অন্যতম কারণ অনেক স্টুডেন্ট যাদের জাতীয় পরিচয় পত্র কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স অথবা পাসপোর্ট ভিসা কোনওটাই নাই।
তারা শুধু মাত্র সামান্য সেবা নিতে পারবেন স্টুডেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে।
এজন্য শিক্ষার্থীর কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন। যেকোনো ব্যাংকে স্টুডেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য যেসব ডকুমেন্ট লাগবে তা হচ্ছেঃ
১) অধ্যায়নরত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্টুডেন্ট আইডি কার্ড।
২) জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি।
৩) সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
৪) বাবা/ মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
৫) বাবা/ মায়ের দুই কপি পাস্পএর সাইজের সদ্য তোলা ছবি।
তবে ব্যাংক ভেদে স্টুডেন্ট একাউন্টের সার্ভিস কিছুটা ভিন্ন। টাই এই বিষয়ে আরও তথ্য নিয়ে তবেই স্টুডেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে।
তবে যেসকল স্টুডেন্টের বয়স ১৮ বছরের বেশি তারা স্বাভাবিকভাবে শুধু জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট দিয়েই ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারবেন।
যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগে
যৌথ একাউন্ট খোলার জন্য অন্যান্য একাউন্ট খোলার থেকে অনেক বেশি নিয়ম মানতে হবে।
এর কারণ, যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলা থেকে পরিচালনা করা সম্পূর্ণটা দুইজন ব্যক্তিকে উপস্থিত রেখেই করতে হয়।
এছাড়া যৌথ ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনার জন্য সর্বসম্মতি ক্রমে একজনে পরিচালনা করতে পারবেন।
আবার একজনের অনুমতি ছাড়া অন্যজনে টাকা উত্তোলন করতে পারবে না। সবকিছু মিলিয়ে যৌথ ব্যাংক একাউন্ত খোলার বিষয়টা একটু কঠিন বলা চলে।
তবে নিয়ম মানতে পারলে যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলাও খুব কঠিন না।
যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে আমাদের যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৩ পোস্টটি পড়ুন।
তাহলেই যৌথ ব্যাংক একাউন্ট খোলার সকল বিষয়ে সুন্দরভাবে বুঝতে পারবেন।
ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আরও কিছু তথ্য
আমাদের সবসময় ব্যাংক একাউন্ট খোলার বিষয়ে সতর্ক থেকে কাজটি সম্পন্ন করা উচিত। বিশেষ করে নমিনি রাখার বিষয়ে এবং মোবাইল নাম্বার দেওয়ার বিষয়ে।
আরও পড়ুনঃ সোনালী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
আর সিগনেচার যখন নিবে তখন অবশ্যই চেষ্টা করবেন এনিশিয়াল (প্যাচ স্বাক্ষর) সিগনেচার করার।
তাহলে সহজেই কেউ সিগনেচার নকল করে আপনার টাকা উত্তোলন করে নিতে পারবে না।
নমিনি রাখার সময়ে বাবা মা কিংবা আপন ভাই বোনকে নমিনি রাখতে পারেন। অথবা বিবাহিত হলে স্ত্রী/ স্বামীকে নমিনি হিসেবে রাখতে পারেন।
কোন ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে
এটি ব্যাংক ভেদে কম বেশি হয়ে থাকে। কারণ নতুন একাউন্টের টাকা একাউন্টেই যোগ করে দেওয়া হয়। আবার অনেক ব্যাংক চেকের সাথে কার্ড দিয়ে থাকে।
তাই কিছু টাকা খরচ হিসেবে এবং বাকি টাকা একাউন্টে জমা দিয়ে দেয় ব্যাংক থেকে।
যেমন ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ত খুলতে ১ হাজার টাকা দরকার। কারণ তারা একসাথে চেক এবং ডেবিট কার্ড প্রদান করে। অন্যদিকে অগ্রণী ব্যাংকে নতুন একাউন্ট খুলতে ৫০০ টাকা লাগে।
আরও পড়ুনঃ ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম
তবে বেশিরভাগ ব্যাংকে ৫০০ টাকায় নতুন ব্যাংক একাউন্ট খোলা হয়ে যায়। আবার অনেক ব্যাংকে কিছু একাউন্ট খোলা যায় ফ্রিতেই।
তাই এই বিষয়ে গুগলে সার্চ করলেই পাবেন। অথবা সরাসরি ব্যাংকের শাখায় জিগ্যেস করলেই হবে।
ব্যাংক একাউন্ট খোলা নিয়ে সর্বশেষ
আজকের পোষ্টে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম।
আশা করছি এই পোস্টটি পড়ার পরে ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে অব বিষয়ে জানতে পেরেছেন।
আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনার কমেন্টের রিপ্লে দিয়ে উত্তরটি জানিয়ে দিবো।
এছাড়া সকল ব্যাংকের একাউন্ট খলাআর নিয়ম সম্পর্কিত আলাদা আলাদা পোস্ট পড়তে আমাদের ফিনান্স ও ব্যাংকিং ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।
এছাড়া আমাদের সকল আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
1 thought on “ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম (২০২৪)”