Last Updated on 12 months by Shaikh Mainul Islam
প্রিয় পাঠক, স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের পোস্ট “আমের উপকারিতা ও অপকারিতা অর্থাৎ আম খেলে কি হয় এই” এ। এই পোষ্টটি সবার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফলের রাজা আম। আমের মৌসুমে গাছে এবং বাজারে বাহারি স্বাদের বেশ কয়েক জাতের আম পাওয়া যায়। আঁশ যুক্ত আবার আঁশবিহীন আম পায়া যায় আমের মৌসুমে।
কিন্তু, অনেকেই আম খাওয়ার আগে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে চান। এর অবশ্য যথেষ্ট কারণ ও আছে। আম অতিরিক্ত মিষ্টি হওয়ায় অনেকে মনে করেন চিনির ক্ষতিকর দিকগুলো আম খেলে হয় কি না।
অনেকে আবার মনে করেন বাচ্চাদের অতিরিক্ত আম খাওয়ালে কোন সমসস্তা হয় কি না। এছাড়াও আম খাওয়া নিয়ে মানুষের মনে হাজারো প্রশ্ন জাগে।
আরও পড়ুনঃ বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রশ্ন জাগে আমে কি কি ভিটামিন আছে এবং আম খেলে কি হয় এই বিষয়ে। এর সকল উত্তর আজকের পোষ্টটির মধ্যে উল্লেখ থাকবে।
আমের উপকারিতা ও অপকারিতা অর্থাৎ আম খেলে কি হয় এই বিষয়ে জানতে সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ুন। একটি পোষ্টের মাধ্যমে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
আমে কি কি ভিটামিন আছে
আম হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক ফল। যা আমরা খাদ্য হিসেবে খেয়ে থাকি। আমরা যখন জানতে পারবো যে, আমে কি কি ভিটামিন আছে এবং আমে কি কি উপাদান থাকে তাহলে আমরা সহজেই বুঝতে পারব যে আমাদের শরীরে আমের উপকারিতা ও অপকারিতা কি।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক যে, কাঁচা বা পাকা আমে কি কি ভিটামিন আছে। জেনে নিন আমে কি কি ভিটামিন থাকে সে বিষয়ে বিস্তারিত।
- আমে ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন নামের ফ্ল্যাভিনয়েডস
- আমে বিভিন্ন রকম অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট
- আমে ভিটামিন এ, সি এবং ই পাওয়া যায়।
- আমে ক্যারোটিন উপস্থিত। (ফুসফুস ও মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়)।
- পরিপক্ক আমে পটাশিয়ামের উপস্থিতি বিদ্যমান। (মানবদেহের কোষ এবং তরলের উপাদান, ও রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনঃ কমলার উপকারিতা ও অপকারিতা
এছাড়াও আরও কিছু ভিটামিন আমে বিদ্যমান। এবার সহজেই বোঝা যায় যে, যেসব সমসস্যার জন্য এই ভিটামিনগুলো দরকার সেইসব শারীরিক সমস্যায় আম অনেক বড় ভুমিকা রাখে।
আমের উপকারিতা সমূহ
প্রিয় পাঠক, আম খেলে উপকার আছে তা সবাই জানলেও পাকা বা কাঁচা আম কি কি উপকার করে তা আমাদের অনেকেরই জানা নেই। চলুন প্রথমে কাঁচা বা পাকা উভয় আমের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
আমের উপকারিতা শুনলে অনেকে ভাতের চেয়েও বেশি করে আম খাওয়া শুরু করবেন। কিন্তু, উপকারিতা জানা যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমন গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এটা মনে রাখা যে, পরিমাণের বেশি কিছুই খাওয়া যাবে না।
এবার তাহলে চলুন, আমের উপকারিতা সমূহ দেখে নেওয়া যাক।
বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত যে, প্রাকৃতিক ফল আমে উপস্থিত ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করলে সেগুলো ফুসফুস ও মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুনঃ তালশাঁস খেলে যা হয় , উপকার ও অপকারিতা
সবল এবং তাজা আমে পটাশিয়ামেরউপস্থিতি অনেক বেশি থাকে। আর এই পটাশিয়াম আমাদের শরীরের কোষ ও তরলের উপাদান। আমাদের শরীরের রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে আমের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম।
আমে থাকা ভিটামিন সি ও বিভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানব দেহের সকল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সরাসরি ভুমিকা রাখে।
পাকা কিংবা কাঁচা আমে ভিটামিন বি-৬ উপস্থিত থাকে। আর ভিটামিন – ৬ আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ও কিছু জটিলতা কমাতে সরাসর ভুমিকা রাখে।
ফলের রাজা আমে থেকে ভিটামিন সি। আর ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ রোগ স্কার্ভি -তে প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
আম খেলে যুবকদের তারুণ্য ভাব দীর্ঘ স্থায়ী হয়। এর কারণ, আমে ভিটামিন সি কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বক সতেজ ও টান টান হয় এবং সতেজ থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। এই ভিটামিন ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
আর পড়ুনঃ ডাবের পানির উপকারিতা । ডাবের পানি খাওয়া সম্পর্কে সতর্কতা
আমে এমন সব বিভিন্ন উপাদান থাকে যার কারণে কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে আম অনেক বেশি ভুমিকা রাখে।
মানব শরীরের হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পরিমাণ মত আম খাওয়া অনেক জরুরি।
আম ফলে কপার উপাদান উপস্থিত। এজন্য শরীরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
আমের বিশেষ উপকারিতা
এছাড়াও আমে ……
- ওজন কমায় আম
- ভালোবাসার জাগায়
- চোখের যত্নে-
- হজমে সহায়ক
- হিট স্ট্রোক ঠেকাবে-
- রোগ-প্রতিরোধে আম-
- স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
- ত্বকের যত্নে আম
এতক্ষণে নিশ্চয়ই আমের উপকারিতা সম্পর্কে স্পষ্ট এবং সহজ ধারণা পেয়েছেন। উপরে উল্লেখিত সকল বিষয় বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমানিত। তাই আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ পাকা এবং কাঁচা আম খাওয়া উচিত। তবে তা অতিরিক্ত পরিমানে না।
আমের অপকারিতা সমূহ
সবকিছুতে সাধারণত যেখানে উপকারিতা থাকে সেখানে কিছু হলেও অপকারিতা থাকে। ঠিক তেমনই আমেও কিছু অপকারিতা আছে। তবে আমার উপকারিতার উলনায় আমের অপকারিতা অতি নগণ্য।
চলুন যেনে নেওয়া যাক আমের অপকারিতে সম্পর্কে বিস্তারিত।
- অ্যালার্জি বাড়াতে পারে
- রক্তে শর্করার বৃদ্ধি
- লো-ফাইবার
- ওজন বৃদ্ধি
- পেটের সমস্যা হতে পারে
তবে এই সমস্যাগুলো সব ধরনের আম খেলে হয় না। আজকাল এত এত প্রজাতির আম পাওয়া যায় যার কোনটায় আঁশ থাকে না।
আর এই আঁশবিহীন আমে এই সমস্যাগুলো তুলনামুলক বেশি হয়ে থাকে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে না খেলে কিছুই হয় না।
আরও পড়ুনঃ গরমে ত্বক ভালো রাখার সহজ উপায়
প্রিয় পাঠক, এবার আমরা আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কিত অনেকগুলি প্রশ্নের উত্তর জানবো।
এই উত্তরগুলি আম খাওয়ার আগে অনেকে জানতে চান। চলুন জেনে নেওয়া যাক আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত।
আমের উপকারিতা ও অপকারিতা । প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ আমে কি কি উপাদান থাকে?
= আমে খনিজ লবণ এবং ভিটামিন উপাদান থাকে। যেমন- ভিটামিন-এ ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি৬ রয়েছে।
এছাড়াও পুষ্টি উপাদান পটাসিয়াম, কপার লৌহ এবং এমাইনো এ্যাসিড রয়েছে।
প্রশ্নঃ আম খেলে কি সুগার বাড়ে?
= ব্লাড সুগারের উপর আমের প্রভাব আছে। আর এর কারণ আমের ৯০ ভাগের বেশি ক্যালরি এর মিষ্টত্ব থেকে আসে।
এই কারণেই এটি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
তবে এর পাশাপাশি আমে আরও রয়েছে ফাইবার এবং অনেক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রক্তে শর্করার প্রভাব কমায়।
তাই, ডায়াবেটিক রোগীদের তুলনামুলক কম আম খাওয়া উচিত।
প্রশ্নঃ আম খেলে ঘুম আসে কেন?
= পাকা আমে প্রচুর পরিমাণে ট্রিপটোফ্যান উপস্থিত থাকে। আম খেয়ে ঘুম পাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমে ট্রিপটোফ্যান।
কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল সমৃদ্ধ আম শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা অনেক বেশি বৃদ্ধি করে।
এই ইনসুলিন ট্রিপটোফ্যান মস্তিষ্কে পাঠায় তাই আম খেলে ঘুম হয়।
আমাের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা আমের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। জেনেছি আমে কি কি উপাদান থাকে এবং আম থেকে কি কি ভিটামিন পাওয়া যায় সেই বিষয়ে।
আশা করছি আমের উপকারিতা নিয়ে সবকিছু বুঝতে পারছেন। এরপরে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।
বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিষয়ক ব্লগ পড়তে আমাদের স্বাস্থ্য ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।