Last Updated on 2 months by Shaikh Mainul Islam
মুসলিম উম্মাহর জন্য শবে মেরাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। রজব মাসের ২৭ তারিখে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করা হয়। অনেকে ২০২৫ সালের শবে মেরাজ কত তারিখে তা জানতে চান।
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫ | শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত” এ।
আজকের পোস্টে আমরা শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫, শবে মেরাজ কি ও কেন পালন করা হয়, শবে মেরাজের ঘটনা, শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সহ শবে মেরাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৫
বাংলাদেশে ২০২৫ সালে ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে। অর্থাৎ মুসলিম জাতি ২৭ ই জানুয়ারি দিনের শেষে রাত থেকে শুরু করে ২৮ জানুয়ারি রাতে প্রহরে শবে মেরাজের ইবাদত পালন করবে।
আরও পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ম ও নিয়ত (বিস্তারিত)
বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হওয়ায় পবিত্র শবে মেরাজের পরদিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।
শবে মেরাজ কি, কেন, কিভাবে
শব শব্দের অর্থ হচ্ছে রাত আর মেরাজ শব্দের অর্থ হচ্ছে ঊর্ধগমন। অর্থাৎ শবে মেরাজ বা লাইলতুল মেরাজ বলতে ঊর্ধগমনের রতকে বোঝায়।
হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর ৫১ বছর বয়সে এবং নবুয়তের ১১ তম বছরে আরবি রজব মাসের ২৭ তারিখে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা, এরপর বোরাকে করে ঊর্ধ্বাকাশ পাড়ি দেওয়ার মাধ্যমে আরশে আজিমে পৌঁছে আল্লাহর দিদার লাভ করেন সম্পুর্ণ জাগ্রত অবস্থায়।
আরও পড়ুনঃ শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ ? শবে বরাত পালনের নিয়ম জেনে নিন
শবে মেরাজ প্রসঙ্গে সুরা বনি ইসরাইলে আল্লাহ বলেন,
“তিনি পবিত্র সত্তা, যিনি বান্দাকে তাঁর নিদর্শন সমূহ দেখানোর জন্য রাত্রিকালে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। যার পরিবেশ পবিত্র, নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা”। -(সুরা বনি ইসরাইল: আয়াত নং ০১)
শবে মেরাজের রাতেই মুসলিম উম্মাহের জন্য নামাজ নির্ধারিত করা হয়। মুসলিম উম্মাহ পায় ইসলামে সঠিক পথের দিশা।
শবে মেরাজের ঘটনা
মসজিদুল হারাম থেকে পবিত্র শবে মেরাজের শুরু হয়। জিব্রাইল (আঃ) মুহাম্মদ (সাঃ) -কে বোরাকে করে বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে নিয়ে যান।
সেখানে নবীজি ২ রাকাত নামাজ আদায় করেন। নামাজে অন্যান্য সকল নবীর ইমামতি করেন মুহাম্মদ (সাঃ)। এরপর নবীজি ঊর্ধ্ব আকাশে রওনা দেন। যাত্রাপথে প্রত্যেক আসমানে পূর্ববর্তী নবীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুনঃ নামাজের নিষিদ্ধ সময় সমূহ জেনে নিন (হাদিসের আলোকে)
এভাবে নবীজি সিদরাতুল মুনতাহা পার করে আরশে আজিমে পৌঁছে মহান আল্লাহর সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন।
এসময়ে আল্লাহর ইচ্ছায় নবীজি নিজ চোখে জান্নাত জাহান্নাম দেখতে পান। দেখতে পান বেনামাজী, বেপর্দা সহ বেশ কিছু পাপের সাজা কেমন হবে সেসব বিষয়ে।
এই রাতেই নবীজি সৃষ্টি জগতের অপাী রহস্য অবলোকন করতে সক্ষম হন। এবং তার উম্মতদের জন্য নামাজের বিধান রচিত করেন।
তাই নিঃসন্দেহে শবে মেরাজের রাতের মধ্য দিয়ে মুসলিম উম্মাহ খুঁজে পান সঠিক পথের দিশা, আল্লাহর অসীম অনুগ্রহ ও দ্বীনের অবিচলতা।
একমাত্র শেষ নবী ই আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেন যা আর কোনো নবী করতে পারেন নাই। এর দ্বারা স্পষ্ট যে, মুহাম্মদ (সাঃ) কত দামি বা মর্যাদার অধিকারি।
শবে মেরাজের গোটা বিষয়ের ফলে মুসলমান মুমিনের হৃদয়ে ঈমান মজবুত এবং নবীর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।
শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
যদি কেউ শবে মেরাজের ঘটনা জেনে থাকেন তাহলে নিশ্চই বুঝে থাকবেন শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে।
এই শবে মেরাজের মাধ্যমেই আমাদের নবী আল্লাহর সাথে দেখা করার গৌরব অর্জন করেন। এবং তার উম্মতের জন্য নামাজের বিধান সহ জীবন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ সব বার্তা নিয়ে আসেন।
মৃত্যুর পরে জান্নাত জাহান্নাম সহ বিভিন্ন পাপের শাস্তি কেমন হবে তা জানতে পারা যায় এই মেরাজের মাধ্যমে।
আরও পড়ুনঃ জাকাত কি, কাকে বলে? জাকাত কাদের উপর ফরজ? বিস্তারিত জেনে নিন
শবে মেরাজের মাধ্যমে মুসলিমদের উপর ৫০ ওয়াক্ত থেকে ৫ ওয়াক্ত নামাজের বিধান করা হয়। এটি শবে মেরাজের অন্যতম ফজিলত (অর্জন)।
এছাড়াও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, শবে মেরাজের কারণে নবীজি এবং মুমিনদের ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায় ইসলামের প্রতি বিশ্বাস আস্থা। জানা যায়, আল্লাহর সৃষ্টির সৌন্দর্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সব মেসেজ।
সবদিক থেকে মিলিয়ে বলা যায় যে, শবে মেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত অপরিসীম।
শবে মেরাজ সম্পর্কিত FAQS
নবীজির ৫১ বছর বয়সে এবং নবুয়তের ১১ তম বছরে শবে মেরাজ সংঘটিত হয়।
শবে মেরাজ ২৭ জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি ২০২৫ দিবাগত রাতে পালিত হবে।
রজব মাসের ২৭ তারিখ পবিত্র শবে মেরাজ পালন করা হয়।
নবীজি (সাঃ) থেকে শবে মেরাজে নির্দিষ্ট কোনো নামাজ আদায়ের ব্যাপারে বলা হয়নি।
তাই অন্যান্য রাতের মতো নফল ইবাদত, তাহাজ্জুদ নামাজ সহ অন্যান্য সকল ইবাদত করা যাবে।
তবে, এই রাতের ইবাদত অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের মধ্যে সাধারণত নফল নামাজ -ই আদায় করা হয়ে থাকে।
তবে, শবে মেরাজের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নামাজের কথা কোথাও বলা হয়নি।
রজব মাসের ২৭ তারিখে শবে মেরাজ পালিত হয়। কারণ, নবী করিম (সাঃ) ২৭ রজব মেরাজে গমন করেন।
২০২৪ সালে শবে মেরাজের সরকারি ছুটি ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। তবে ওইদিন শুক্রবার হওয়ায় সাধারণ ছুটি থাকবে।
পবিত্র কোরআনে শবে মেরাজের রাতে নামাজ পড়ার বিষয়ে বাধ্যবাধকতা করা হয়নি। শুধু মাত্র ইবাদতের জন্য নামাজ আদায় করা হয়।
তাই শবে মেরাজের বেলায় বিশেষ কোনো নামাজ বা নামাজে নির্দিষ্ট সুরার কথা বলে হয়নি। যেকোনো সুরা দিয়ে নামাজ আদায় করা যাবে।
শবে মেরাজ সম্পর্কে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকে আমরা shobe meraj koto tarikhe 2025, শবে মেরাজ কি ও কেন, শবে মেরাজের ঘটনা এবং শবে মেরাজের গুরুত ও ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি।
শবে মেরাজ সহ ইসলামিক সকল বিষয়ে আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়তে Islamic Info ক্যাটাগরি ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে Dainik Kantha ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।