সাধারণত রমজান মাসে সকল মুসলমান মানুষ রোজা আদায় করে থাকেন। আর এজন্য রোজা খোলার নিয়ত অর্থাৎ ইফতারের দোয়া জানতে চান।
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “রোজা খলার নিয়ত । ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থসহ । ইফতারের পরের দোয়া” এ।
আজকের পোষ্টে আমরা রোজা খোলার সঠিক নিয়ম ও নিয়ত, অর্থাৎ ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থসহ, ইফতারের পরের দোয়া সহ এই বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।
রোজা খোলা বা ইফতার কি
রমজান মাস কিংবা যেকোনো সময় সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের পানাহার থেকে নিজেকে বিরত রাখার পর কিছু খাওয়াকেই রোজা খোলা বা ইফতার বলে।
আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া বাংলা
একজন ব্যক্তি রোজা যেমন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রাখেন ঠিক তেমন ইফতারিও করেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
আল্লাহ আরবি রমজান মাসের সম্পূর্ণ মাস গোটা মুসলমান জাতির উপর রোজা রাখা ফরজ করেছেন।
আর তাই রোজা রাখার মতো রোজা খোলা বা ইফতারির সময়ও নিয়ত বা দোয়া পড়তে হয় বলে আমাদের মধ্যে প্রচলিত আছে।
আর এই দোয়া বা নিয়তকে রোজা খোলার দোয়া বা ইফতাররের দোয়া বলা হয়।
ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থসহ
রোজা খোলার পূর্ব মুহূর্তে ইফতারি সামনে নিয়ে বেশি বেশি তাওবা ইস্তেগফার করতে হবে। আর সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতারি করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ রোজা ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি
ইফতারের দোয়া আরবি, বাংলা উচ্চারণ এবং বাংলায় জেনে নেওয়া যাকঃ
ইফতারের দোয়া আরবিঃ
بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
ইফতারের দোয়া বাংলা :
আল্লাহুম্মা লা-কা ছুমতু ওয়ালা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমিন।
ইফতারের দোয়া বাংলা (আরবি দোয়ার বাংলা অর্থ):
হে আল্লাহ, “ আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিজের মাধ্যমে ইফতার করছি”।
– (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)
হাদিস অনুসারে উপরের দোয়াটি ইফতারের দোয়া বা রোজা খোলার দোয়া হিসেবে পড়তে হয়। আশা করছি ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থ সহ জেনেছেন।
ইফতারের পরের দোয়া
হাদিসে ইফতারের পরবর্তী দোয়ার কোথাও বলা হয়েছে। যেখানে আব্দুল্লাহ ইবনে অমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয় যে, ইফতারের সময় নবিজি নিচের দোয়াটি পরতেন।
আরও পড়ুনঃ ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম
ইফতারের পরের দোয়াঃ
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
ইফতারের দোয়া বাংলা উচ্চারণঃ
জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতাল্লাতিল উরু’কু; ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশাআল্লাহ।
আরও পড়ুনঃ তাহাজ্জুদ নামাজ কিভাবে পড়তে হয় ?
ইফতারের পরের দোয়া বাংলাঃ
ইফতারের মাধ্যমেপিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চাইলে সাওয়াবও স্থির হলো। (আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৭)
উপরের এই আমলটি নবিজি মুহাম্মদ (সাঃ) পালন করতেন। সেহেতু এই আমলটি আদায় করা সুন্নত। যার ফায়দা অনেক বেশি।
ইফতারে করনীয়
আমাদের মধ্যে অঙ্ক সময় রোজার খোলার সময়ে অনেক বিষয়ে এমন সব আচারণ দেখা যায় যা ইসলাম পরিপন্থী। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক ইফতারে করনীয় সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিতঃ
- সময়ের সাথে সাথে ইফতারি করতে হবে।
- দ্রুত সময়ের মধ্যে ইফতারি সম্পন্ন করা।
- খেজুর দিয়ে রোজা খোলার চেষ্টা করা (তবে জরুরি না)।
- রোজা খোলার সময় অন্য সকল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ইফতারে ভারী খাবার না খ্যে নামাজের পরে তৃপ্তি নিয় খাবার খাওয়া।
- রোজা খোলার আগ মুহূর্তে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করতে হবে। (এসময়ে দোয়া কবুলের অন্যতম মুহূর্ত)।
- ইফতারি সামনে নিয়ে দুনিয়াবি কথা বার্তা বলা থেকে বিরত থাকা।
উপরের বিধিনিষেধগুলি একজন রোজাদার হিসেবে রোজা খোলার আগ মুহূর্তে মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি।
রোজা সম্পর্কিত FAQS
মূলত রোজা খোলার দোয়াকেই অনেকে রোজা খোলার নিয়ত হিসেবে বলে থাকেন।
রোজার নিয়ত বা রোজা খোলার দোয়া মুখে উচ্চারণ না করলেও হবে। আর বাংলা বা আরবি বা অন্য যেকোনো ভাষায় করা যাবে। কারণ, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে অবহিত।
যেহেতু নবিজী মুহাম্মদ (সাঃ) ইফতারের পর এই দোয়া পড়তেন তাই এই দোয়া পড়া সুন্নত।
হবে। সেহরি ইফতারের দোয়া পড়া জরুরি না। তব আদায় করা ভালো। কিন্তু এজন্য রোজায় কোনো ঘাটতি হবে না।
হাদিসে এসেছে, ইফতারি সামনে নিয়ে দোয়া করার অন্যতম সময়। কারণ, এসময় দোয়া কবুলের খুব বেশি সম্ভাবনা থাকে।
রোজা খোলার নিয়ত নিয়ে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা রোজা খোলার নিয়ত, ইফতারের দোয়া বাংলা অর্থ সহ এবং ইফতারের পরের দোয়া জেনেছি।
আশা করছি এই পোস্ট থেকে হাদিসের আলোকে Roja kholar niot দোয়া বাংলা এবং আরবিতে জেনেছেন।
রোজা সহ ইসলাম সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়তে Islamic info Category ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে Dainik kantha ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।