১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দিতে হয় অনেকের অনেক জায়গায়। কিন্তু নিয়মিত মানুষের সামনে কথা বলার অভ্যাস না থাকায় অনেকেই সাজিয়ে গুছিয়ে বক্তৃতা দিতে পারে না। অনেকে আবার বুঝে উঠতে পারে না এই দিবস উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম কি এবং কিভাবে বক্তৃতা দিবে।

তাই আজকের পোষ্টে আমরা ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম জানবো। এবং শেষ দিকে একটি নমুনা বক্তব্য দেখবো।

আজকে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম জানার আগে এখানে ক্লিক করে আমাদের অন্যান্য দিবস উপলক্ষে লেখা বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম পড়ে নিন।

আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা

বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম বুঝতে এবং নিজের মধ্যে আয়ত্ত করতে অন্যান্য দিবস উপলক্ষে লেখা আমাদের বক্তব্যগুলো আপনাকে অনেক সাহায্য করবে।

আর কথা না বাড়িয়ে চলুন,

জেনে নেওয়া যাক ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম এবং শেষ দিকে একটি নমুনা বক্তব্য লেখা। 

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার আগে

শুধু মাত্র বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনেই নয়, আপনি যেকোনো ব্যক্তির জন্মদিনে উপস্থিত বক্তৃতা দেওয়ার আগে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আপনি বক্তৃতা দেওয়ার আগে যেসব বিষয় মাথায় রাখবেন তা হচ্ছে;

আর পড়ুনঃ ৭ মার্চের ভাষণ রচনা । ঐতিহাসিক ৭ মার্চ রচনা

অবশ্যই ব্যক্তির জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত খুব সংক্ষেপে আপনার বক্তব্যের মধ্যে উঠিয়ে আনতে হবে।

যে বিষয়গুলি মানুষ বেশী জানে না সেগুলিকে প্রাধান্য দিয়ে সাল সহ উল্লেখ করতে হবে আপনার বক্তব্যে।

শুরু করতে হবে আকর্ষণীয় দু একটি কাব্যিক লাইন দিয়ে। এরপর আপনার ধর্ম অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তার প্রসংশা করতে হবে।

এরপর উপস্থিত সকলকে জাতীয় শিশু দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে হবে।

এবার আপনি শুরু করবেন আপনার বক্তব্য। বক্তব্য দেওয়ার সময় মনে রাখবেন কোনভাবেই যেন আপনার বক্তব্যের সময় ২ থেকে ৫ মিনিটের একটুও বেশি না হয়।

এখন ভাবছেন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দিবেন যার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বলতে হবে তা আবার এত কম সময়ের মধ্যে। এটা কিভাবে সম্ভব।

হ্যাঁ, এজন্যই আপনাকে যেকোনো বক্তৃতা দেওয়ার জন্য জানতে হবে কত সহজ সাবলীলভাবে সহজ ভাষায় সংক্ষেপে কিভাবে বক্তব্যের মূল বিষয় খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে হবে।

আরও পড়ুনঃ  ২৬ শে মার্চ এর বক্তব্য ( নমুনা বক্তব্য সহ)

বেশ, আপনি নিজেই এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কোথাও বক্তব্য দেওয়া শুধু মুখস্ত করে বলা নয়।

বলার ধরণ, সঠিক তথ্য, সঠিক সাবলি স্পষ্ট ভাষায় একটি মঞ্চে বক্তব্য দিতে হবে।

এবার চলুন, ১২ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার সময়ে আপনার কোন কোন বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে তার একটি শর্ট তালিকা দেখে নেওয়া যাক।

১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন বক্তব্যে দিতে কি কি মনে রাখতে হয় ?

১৭ মার্চে আপনি যদি বক্তব্য দিতে চান তাহলে আপনাকে বেশ কিছু বিষয়ে লক্ষ্য রেখে বক্তব্য দিতে হবে।

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার জন্য যেসব বিষয়ে আপনার বক্তব্যের মধ্যে উপস্থিত রাখতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা হলও।

আরও পড়ুনঃ  ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

১) কাব্যিক দুইটি লাইন দিয়ে শুরু করতে হবে। (নমুনা বক্তব্যে দেওয়া আছে)

২) শুরু করতে হবে মহান সৃষ্টিকর্তার নামে।

৩) মঞ্চে উপস্থিত সবাইকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে সবাইকে শুভেচ্ছা দিতে হবে।

৪) সবগুলো কথার মাঝে প্রতি বাক্য শেষে নির্দিষ্ট সময় থেমে থেমে বলতে হবে।

এতে দর্শকের যেমন মনোযোগ বাড়ে তেমন শুনতেও মধুর হয়।

৫) আপনার বলা সকল কথার কোনটি কত সালের তা সঠিক ভাবে বলবেন। অর্থাৎ সঠিক ডেট সমূহ উল্লেখ করতে হবে।

এই সবগুলো বিষয় আপনার বক্তব্যের মধ্যে থাকতে হবে। তবেই আপনার বক্তব্য পূর্ণতা পাবে।

এবার চলুন ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য একটি নমুনা বক্তব্য দেখে নেওয়া যাক।

নিচে ইয়ল্লেখিত নমুনা বক্তব্যটি আপনি যেকোনো জায়গায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে দিতে পারেন।

সেক্ষেত্রে কিছুটা যোগ বিয়োগ করে নিতে হবে।

আমরা যে নমুনা বক্তব্যটি লিখছি এটি একজন শিক্ষার্থী তার বিদ্যালয়ে ১৭ মার্চ বন্ধবন্ধুর জন্মদিনে উপস্থিত বক্তব্য বা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হিসেবে দিতে পারবেন।

১৭ মার্চ বক্তব্য দেওয়ার জন্য একটি নমুনা বক্তব্য

“এই বাংলার আকাশ-বাতাস, সাগর-গিরি ও নদী

ডাকিছে তোমারে বঙ্গবন্ধু, ফিরিয়া আসিতে যদি”

আজ ১৭ ই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। ১৯২০ সালের ১৭ ই মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

আজকের এই বাংলাদেশের জন্মদাতা এসেছিলেন সেদিন তার মায়ের কোল জুড়ে।

মঞ্চে উপস্থিত শ্রদ্ধেয় প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক বৃন্দ এবং ছোট ও বড় শিক্ষার্থী ভাই বোনদের আসলামুআলাইকুম।

আজ ১৭ ই মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস। বাবা শেখ লুতফর রহমান এবংমা সাহের খাতুনের চার সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান, ডাক নাম ছিলও খোকা।

১৯২৭ সালে ৭ বছর বয়সে খোকা গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুল থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। এরপর নয় বছর বয়সে ভর্তি হন গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে। এর পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন।

শিশু শেখ মুজিবুর রহমানএর ১৪ বছর বয়সে চোখে সমস্যা হলে কলকাতায় অপারেশন করতে যান। তখন সাময়িক বন্ধ হয় পড়াশোনা। এরপরর চার বছর পড় আবারো স্কুল থেকে শুরু হয় তার শিক্ষা জীবন।

১৯৩৮ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে আপন চাচাতো বন শেখ ফজিলাতুন্নেসা কে বিয়ে করেন শেখ মুজিবুর রহমান।

জন্মের পর থেকেই শিশু মুজিবুর এর প্রত্যেকটি আচরণ ছিলও সবার মুগ্ধতার অন্যতম কারণ। এর মধ্যে অন্যতম ছিলও ছাতা হীন শিক্ষার্থীকে নিজের ছাতা দেওয়া এবং বাড়ির ধানের গোলা থেকে ধান বিলিয়ে দেওয়া।

শেরে বাংলা একে ফজলুল হোক গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর স্কুল পরিদর্শনে আসলে অসাধারণ সাহসিকতা দেখিয়ে স্কুলের বিভিন্ন অনুওম দুর্নীতি নিয়ে ছাত্রদের পক্ষে কথা বলেন শেখ মুজিবুর রহমান।

এরপর ১৯৪০ সালে শেখ মুজিব মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন। এখান থেকেই মূলত তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়।

পরবর্তীতে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়ে শতভাগ রাজনিতিতে জড়িয়ে যান। এবং দেশ ও পক্ষ নিয়ে জন মানুষের কথা বলতে শুরু করেহ।

এরপর ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা, ৬৯ এর গনুভভুত্ত্যান এবং ৭০ এর সাধারণ নির্বাচন এই সময়ের মধ্যে শেখ মুজিব জেলে গিয়ে, মার খেয়ে, নির্বাচন করে বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেন পশ্চিম পাকিস্তান থেকে দেশের মানুষকে বাচাতে।

অতপত ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালী জাতির উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। যেখানে তিনি বাংলার মানুষের প্রতি অন্যায় অত্ত্যাচারের সব কথা তুলে ধরে সকলকে একতাবদ্ধ হয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলেন।

সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে ৩০ লাখ লাখ বাংলার দামাল ছেলেরা যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে। এভাবেই শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জন্মদাতা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের জেল থেকে মুকি পেয়ে এসে কাজ শুরু করেন ধংস হয়ে যাওয়া বাংলাদেশের। কাজ করেন সবাইকে নিয়ে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হানাদার বাহিনি বঙ্গবন্ধুকে স্ব পরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা করে।

আজকে আমাদের দৃঢ় শপথ করা উচিত, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে চলা উচিত। দেশকে রক্ষার জন্য যেকোনো সময়ে জীবন দেওয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকা উচিত।

বঙ্গবন্ধু শুধু একজন স্বাধীনতার ঘোষক-ই নয়, তিনি বাংলার ইতিহাসের সেরা ব্যক্তিত্ব। যতদিন থাকবে বাংলাদেশ তত দিন থাকবে শেখ মুজিবুর রহমান।

আরও একবার গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

তিনি আমাদের হৃদয়ে সবসময় ছিলেন, আছেন, থাকবেন।

এই বলে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।

সর্বশেষ

আজকের পোষ্টে আমরা ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম জেনেছি।

জেনেছি বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে কিভাবে বক্তব্য দিতে হবে সেই বিষয়ে বিস্তারিত।

আশা করছি এই বিষয়ে সম্পূর্ণ ভাবে বুঝতে পারছেন।

এই বিষয়ে আরও স্পষ্ট ধারণা পেতে আমাদের জাতীয় ক্যাটাগরি থেকে অন্যান্য দিবসে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম পড়ে নিন।

নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে এখানে ক্লিক করুন। চোখ রাখুন আমাদের টুইটার এ।

 

2 thoughts on “১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)”

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.