Last Updated on 2 years by Shaikh Mainul Islam
শিশু শেখ রাসেল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সর্বকনিষ্ঠ ছেলে শেখ রাসেল। ৭১ এ ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পায়নি সেদিনের শেখ রাসেল ও। ১১ বছরের শেখ রাসেলকে হত্যা করা হয় নির্মম ভাবে। আজকে আমরা শেখ রাসেলের জীবনী রচনা আকারে জানবো। শেখ রাসেল রচনা লিখবো।
শেখ রাসেলকে নিয়ে সবার যেন জানার কোনো শেষ নেই। এর অন্যতম কারণ মাত্র ১১ বছর বয়সে অবুঝ শিশু দেশের জন্য প্রান দিয়েছে স্ব পরিবারে।
আজকের পোষ্টে আমরা শেখ রাসেলের জীবনী রচনা লেখা জানবো, জানবো শেখ রাসেল রচনা লেখার ইউনিক উপায়। জানবো, আমার বন্ধু শেখ রাসেল রচনা, শেখ রাসেল আমাদের ভালোবাসা রচনা, শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু রচনা, শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা, শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত সহ বিস্তারিত সকল তথ্য।শেখ রাসেলের জীবনী রচনা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
শেখ রাসেলের জিবনি রচনা । আমাদের শেখ রাসেল রচনা
শেখ রাসেলের জীবনী নিয়ে এই রচনাটি শেখ রাসেল সম্পর্কিত অন্য শিরোনামে কোনো রচনায় ও ব্যবহার করতে পারবেন। তবে নিজের মতো করে একটু আধটু পরিবর্তন এবং পরিবর্ধন করে নিবেন।
ভুমিকা । শেখ রাসেলকে নিয়ে রচনা
বাঙলার বিভিন্ন ঘর থেকে অসংখ্য মহান ব্যক্তিত্বের যুগে যুগে আবির্ভাব হয়েছে। এর মধ্যে অনেককে আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ রাখতে পেরেছি। আবার অনেকেই বিস্তৃতির অতল গহ্বরে চলে গিয়েছেন সবার অন্তরালে।
তবে আজ বাঙালি জাতি হিসেবে আমরা যেখানে বর্তমানে পৌঁছেছি, তার পেছনে কম বেশি অবদান রেখেছেন সেই সব ব্যক্তিরা।
বাঙালি জাতির নেতা এবং পিতা বললেই যে মানুষটির নাম ভেসে ওঠে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপরিবারে নির্মম ও করুণ হত্যার কথা আমরা সবাই জেনেছি।
স্ব পরিবারে মেরে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে ছোট ছেলে অবুঝ শিশু শেখ রাসেলকে। মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি প্রান হারান নির্মম ভাবে। তার অপরাধ ছিলো তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান ছিলেন।
শিশু শেখ রাসেলের জন্ম । শেখ রাসেল রচনা
১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখে শিশু শেখ রাসেল জন্মগ্রহণ করেন। এক আনন্দের দিনে, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে মায়ের কোলে আলো করে আসে বঙ্গবন্ধু পুত্র শেখ রাসেল। রাসেলের জন্ম হয়েছিল তার বড় বোন শেখ হাসিনার শোবার ঘরে।
সেদিন আনন্দের জোয়ারে সমগ্র বাড়ি মেতে উঠেছিল। রাসেলের জন্মের পর পর, বড় বোন শেখ হাসিনা একটা ওড়না দিয়ে রাসেলের ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন।
জন্মের সময় রাসেল ছিলেন বেশ স্বাস্থ্যবান। তার জন্ম শুধু যেন বঙ্গবন্ধুর পরিবারেরই নয়, সমগ্র জাতির জন্য আনন্দ নিয়ে এসেছিল।
রাসেলের নামকরণ । যেভাবে শেখ রাসেলের নাম রাখা হয়
শেখ রাসেলের নাম করণের পেছনে রয়েছে ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্ব শান্তি এবং সহাবস্থানের পক্ষে। এজন্য তিনি দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের বিশেষ ভক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ আমার প্রিয় শেখ রাসেল রচনা । শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা প্রতিযোগিতা
বার্ট্রান্ড রাসেল একজন নোবেল বিজয়ী দার্শনিক এবং সমাজবিজ্ঞানী ছিলেন। এছাড়াও তিনি ছিলেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে পৃথিবী যখন সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে, তখন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ পাত্র হয়ে কাজ করছিলেন বার্টান্ড রাসেল।এমনই মহান ব্যক্তিতে অনুপ্রাণিত ছিলো বঙ্গবন্ধুর পুরো পরিবার।
এই অনুপ্রেরণা থেকেই বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ সন্তানের নাম রাখেন শেখ রাসেল।
শিশু শেখ রাসেলের ছেলেবেলা । ছেলেবেলার রাসেল
রাসেলের ছেলেবেলা দেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতোই বর্ণময়। জন্মের পর খুব বেশি সময় তার সৌভাগ্য হয়নি বাবার সান্নিধ্য পাওয়ার। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে জেলে রাখে তখনকার পাকিস্তান সরকার।
আরও পড়ুনঃ শেখ রাসেল কুইজ প্রতিযোগিতা ২০২২ ফলাফল । শেখ রাসেল কুইজ ফলাফল
বঙ্গবন্ধুকে প্রথমে ঢাকায় রাখা হলেও পরে পাকিস্থানের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনা এমন হয়েছে যে, বড় বোনের সাথে কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলেন শিশু রাসেল। মাত্র দু বছর বয়সের রাসেল তখন তার বোনকে জিজ্ঞেস করেছিলেন – “তোমার বাবা কে আমি কি বাবা বলে ডাকতে পারি?”।
অর্থাৎ সে তার আপার বাবা, অর্থাৎ আর নিজের বাবাকে কি বাবা বলে ডাকতে পারে? তার মানে তার বাবা তার কাছে একেবারেই অপরিচিত একজন মানুষের মতো ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ শেখ রাসেল কুইজ
যখন সে ভালোভাবে চিনতে পারে তখন সে বাবার কাছ থেকে আসতে চাইতো না একদমই।
তখন তাকে বোঝানো হয়েছিল ওই জেলই বাবার বাড়ি। সেখানেই তার বাবা থাকেন।
সামান্য কিছুদিনের জীবন দশায় বেশিরভাগ সময়টাই রাসেল কাটিয়েছিলেন তার মা এবং বোনদের সাথে।
তার পড়াশোনা শুরু হয়েছিল ঢাকা ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে।
১১ বছর বয়সে যখন তাকে হত্যা করা হয় তখন রাসেল সেই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
শেখ রাসেলের হত্যাকাণ্ড । শেখ রাসেল
১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট অভিশপ্ত রাত সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। সেই রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যা করা হয়।
একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা, দেশি বিদেশি বাংলাদেশ বিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্রে, সেই রাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন ট্যাংক দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়।
আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা
একে একে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সবাইকে হত্যা করা হয়।
সেই রাতের শেষ অংশে বঙ্গবন্ধু, এবং ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করে হত্যাকারীরা।
শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মচারী মহিতুল ইসলামের পরে যানান, “রাসেল দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন, জানতে চান – সেনারা তাকেও মারবে কিনা”।
আরও পড়ুনঃ শেখ রাসেল দিবসের শপথ বাক্য পাঠ । শেখ রাসেল শপথ বাক্য
ঠিক তখনই একজন সেনা কর্মকর্তা মহিতুলকে চড় মারে। রাসেল ভয় পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়।
সে কাঁদতে থাকে তার মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য।
সেই সময় একজন ঘাতক শিশু রাসেলকে ভেতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে।
কেন শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু । রাসেলের জীবনী
শেখ রাসেল কেন আমাদের বন্ধু, কীভাবেই বা তিনি আমাদের বন্ধু হয়ে উঠলেন বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে রাসেলের ছেলেবেলার দিনগুলো লেখা বিভিন্ন বইয়ে।
আরও পড়ুনঃ ১৬ ই ডিসেম্বরের বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা সহ)
তার ছেলেবেলার দিনগুলো সম্পর্কে যেটুকু জানা যায় তার অধিকাংশই শিশু বয়সের নিষ্পাপ আত্মভোলা কর্মকাণ্ডে পূর্ণ ছিল।
শোনা যায় বঙ্গবন্ধুর বাসায় টমি নামে একটি কুকুর ছিল যার সাথে শিশু রাসেল সবসময় খেলে বেড়াতো।
একদিন খেলার সময় কুকুরটি জোরে ডেকে উঠলে ছোট রাসেলের মনে হয় টমি তাকে বকছে।
আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা লেখার নিয়ম
শিশু রাসেল তখন তার বোন রেহানার কাছে এসে কাঁদতে থাকেন।
এছাড়াও রাসেলের মাছ ধরার খুব শখ ছিল। মাছ ধরে আবার সেই মাছ সে পুকুরেই ছেড়ে দিত অবুঝ রাসেল।
এতেই সে ভিসন আনন্দ পেত।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র জয়ের জন্ম হলে রাসেল জয়কে নিয়ে সারাদিন খেলাধুলা করত।
রাসেলের স্বভাব ছিল অত্যন্ত দুরন্ত প্রকৃতির। তার এই দুরন্তপনার সঙ্গী ছিল একটি বাইসাইকেল।
রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ভেঙে নিজের বাইসাইকেলে রোজ স্কুলে যেত রাসেল।
রাসেলের শৈশব আখ্যান যেন আমাদের সকলের শৈশবের গল্প মনে করিয়ে দেয়।
তার শৈশবের গল্প কথাগুলির মধ্যে আমরা যেন বারবার নিজেদেরকে খুঁজে পাই।
পড়াশোনা, খেলাধুলা, দুরন্তপনা এসব নিয়ে রাসেল আমাদের সকলের কাছেই হয়ে ওঠে শৈশবের এক আদর্শ।
আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্ট বক্তব্য
রাসেলের মধ্যে খুব ছোট বেলাতেই দেখ গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর মতোই মানবিকতা।
সব মানুষ সহ পশু পাখিদের জন্যও ছিলো তার অগাধ রকমের ভালোবাসা। সবার কাছে যেত শিশু রাসেল।
সবার সাথে মিশতো, বাড়িতে কাজের লোক সহ সবাইকে খুব সম্মান শ্রদ্ধা করতো।
উপসংহার । শেখ রাসেলের জীবনী
বাঙালি জাতির কাছে এক যুগোত্তীর্ণ মানব শেখ রাসেল। যিনি অবুঝ থেকেও দেশের জন্য জীবন দিয়ে গেছেন।
বাঙালি জাতি তার মধ্যে খুঁজে পায় রূপকথার মতো নিজে নিজ ছেলে বেলাকে।
শেখ রাসেলের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে আপামর বাঙালির শিশু সময়।
অন্যদিকে তার নির্মম মৃত্যুর কাহিনী বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের করুন ইতিহাসকে।
সেই সমস্ত নৃশংস ক্ষমতালোভী মানুষের কথা যারা কেবলমাত্র ক্ষমতার লোভে ১১ বছরের একটি ছোট্ট শিশুকেও জীবন ভিক্ষা দেয় নি।
আরও পড়ুনঃ আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস
বাঙালি জাতির সেই ইতিহাসের এক জ্বলন্ত প্রতিক শেখ রাসেল।
তার স্মৃতিকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র এবং শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ।
শেখ রাসেলের নামে রাজধানী ঢাকার বুকে করা হয়েছে একটি স্কেটিং স্টেডিয়াম। এভাবেই চিরকাল শেখ রাসেল অমর হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতির স্রিতির হৃদয়ে।
আরও পড়ুনঃ আজ ১৫ আগস্ট
বাঙালি জাতি শেখ রাসেলের স্মৃতি বুকে নিয়ে তাকে বন্ধুর স্নেহের আসনে বসিয়ে সভ্যতার পথে আরো অগ্রসর হোক।
সর্বশেষ । শেখ রাসেল জীবনী
আজকের পোষ্টে আমরা শেখ রাসেলের জীবনী রচনা জেনেছি। এছাড়াও জেনেছি শেখ রাসেলের জীবনী রচনা লেখা।
শেখ রাসেল রচনা লেখার ইউনিক উপায়। জেনেছি আমার বন্ধু শেখ রাসেল রচনা, শেখ রাসেল আমাদের ভালোবাসা রচনা, শেখ রাসেল আমাদের বন্ধু রচনা, শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা, শেখ রাসেল এর জীবন বৃত্তান্ত সহ বিস্তারিত সকল তথ্য।শেখ রাসেলের জীবনী।
আমাদেরকে ফেসবুকে দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ Dainikkantha.
অনেক সুন্দর ও গোছানো লেখা ।
অসংখ্য ধন্যবাদ।
Thank you for this