শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম । রোজার নিষিদ্ধ দিন সমূহ

রমজান মাসের রোজা শেষ হয় শাওয়াল মাসের শুরুর মাধ্যমে। শাওয়াল মাসে রয়েছে ছয় রোজা। তাই শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম তা জানা জরুরি।

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম এবং রোজার নিষিদ্ধ দিন সমূহ” এ।

আরও পড়ুনঃ সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ সহ । সাইয়েদুল ইস্তেগফার দোয়া (অডিও সহ)

আজকের পোষ্টে আমরা শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম, বছরের কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম, শুক্রবার রোজা রাখা হারাম কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত জানবো।

শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম

আরবি ১২ মাসের মধ্যে শাওয়াল মাসের অবস্থান রমজান মাসের পরেই। রমজান মাস গোটা মুসলিম জাতি রোজা রাখেন।

এবং রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পর পহেলা শাওয়াল ঈদুল ফিতর বা রোজার ইদ পালন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম । ছয় রোজার নিয়ত

আর পবিত্র কোরআন এবং হাদিসে ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম উল্লেখ করে ঈদের দিন রোজা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।

এছাড়া শাওয়াল মাসে রোজা রাখার জন্য কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

অর্থাৎ, শাওয়াল মাসে পহেলা শাওয়াল যেদিন রোজার ঈদ পালিত হয় ঐদিন বাদে শাওয়াল মাসের বাকি সব কয়দিন রোজা রাখা যাবে। এ সময়ে ৬ রোজা কিংবা সুন্নত নফল যেকোনো রোজা রাখা যাবে।

আরও সহজ ভাবে বললে, শাওয়াল মাসের ১ তারিখ তথা ১লা শাওয়াল রোজা রাখা হারাম। এছাড়া শাওয়াল মাসের অন্য সব দিন রোজা রাখা যাবে।

বছরের কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম

প্রিয় পাঠক, শান্তির এবং শৃঙ্খলার ধর্ম ইসলাম। ইসলাম একটি সু সজ্জিত ধর্ম এবং জীবন বিধান। ইসলামের তৃতীয় ও অন্যতম স্তম্ভ।

ইসলামে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, বছরে বেশ করেক্তি দিন রোজা রাখা হারাম। এই দিনগুলোতে রোজার রাখলে সাওয়াবের থেকে পাপ হবে।

আরবি বছরে মোট ৫ দিন রোজা রাখা হারাম। দিনগুলো হচ্ছে ১ শাওয়াল, ১০ জিলহাজ, ১১ জিলহাজ, ১২ জিলহাজ এবং ১৩ জিলহাজ।

তাই, আমাদের জানা উচিত যে, বছরের কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বছরের কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম সে সম্পর্কে বিস্তারিত।

  • ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
  • ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদের দিন (১০ই জিলহাজ ) রোজা রাখা হারাম।
  • ঈদুল আযহার পরবর্তী ৩ দিন। (জিলহাজ মাসের ১১,১২ এবং ১৩ তারিখ)।

তবে জিলহাজ মাসের দিনগুলোতে হাজীরা যদি কাবা শরিফে জিয়ারত অবস্থায় কোরবানি করতে না পারে তাহলে চাইলে তারা রোজা রাখতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ  নামাজের নিষিদ্ধ সময় সমূহ জেনে নিন (হাদিসের আলোকে)

অন্যদিকে কোন ব্যক্তি সারা বছর নফল রোজা রাখতে চাইলে তার উদ্দেশ্যে নবিজি বলেন,

“কেউ যদি সারা বছর রোজা রাখতে চায় সে যেন একদিন পর একদিন রোজা রাখে”। নবিজি এটিকে খুব সমর্থন করতেন।

আশা করছি বছরের কোন কোন দিন রোজা রাখা হারাম তা বুঝতে পারছেন।

এবার আমরা বছরের কোন কোন দিনগুলোতে রোজা রাখা সুন্নত সে বিষয়ে জানবো।

বছরের কোন কোন দিনগুলোতে রোজা রাখা সুন্নত

সুন্নত বলতে হজরত মুহাম্মদ সাঃ যে করতেন সেটাই সুন্নত। এজন্যই আমরা অনেকে নবীর সুন্নত বলে থাকি।

বছরের কোন কোন দিনগুলোতে রোজা রাখা সুন্নত একথা দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে নবিজি ফরজ রোজার পরে কোন কোন দিন রোজা রাখতেন।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বছরের কোন কোন দিনগুলোতে রোজা রাখা সুন্নত তা জেনে নেওয়া যাক।

আরও পড়ুনঃ শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ ? শবে বরাত পালনের নিয়ম জেনে নিন

আরবি মহরম মাসের নয় এবং দশ তারিখে রোজা রাখা সুন্নত। নবি করিম সাঃ এই দুই দিন রোজা রাখতেন।

এবং, প্রত্যেক সপ্তাহের সোম বার এবং বৃহস্পতি বার রোজা রাখতেন নবি করিম সাঃ। তাই এই চার দিন রোজা রাখা সুন্নত।

এছারাও আরও অনেক দিন আছে যেদিনগুলো রোজা সুন্নত।

এই বিষয়ে খুব গভীর ভাবে জানতে আপনি কোরআন হাদিস এবং আপনার মসজিদের ইমামের শরণাপন্ন হতে পারেন।

সিয়াম পালনকারীর জন্য আনন্দ সমূহ

সিয়াম পালনকারীর জন্য ২ টি আনন্দ আছে। নবিজি মুহাম্মদ সাঃ বলেন, “রোজাদারদের দুইটি আনন্দ ঘন মুহূর্ত আছে।

একটি হচ্ছে ইফতারের মুহূর্ত। ইফতারের সময়ে রোজাদার খুশি হয়, আর একট আনন্দ মুহূর্ত হচ্ছে আল্লাহর সাথে যখন সাক্ষাৎ করবেন তখন রোজাদার ব্যক্তি সবথেকে বেশি আনন্দিত হবেন।

এছাড়াও রোজাদারদের জন্য আর কয়েকটি মুহূর্ত আসবে যা পৃথিবীর সব আননদের থেকে কয়েক হাজার কোঁটি গুন বড়।

আর তা হচ্ছে, রোজাদারদের জন্য জান্নাতে আলাদা একটি দরজা করা হবে। দরজাটির নাম হচ্ছে রাইয়ান। যেসকল ব্যক্তি পৃথিবীতে রোজা রাখেন তার উপহা সরূপ আল্লাহ রোজাদারদের রাইয়ান নামক দরজা থেকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

আরও পড়ুনঃ যে আমল গুলো সহজে ইমানদারকে জান্নাতে নিয়ে যাবে

অন্যদিকে, রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে সব থেকে প্রিয় বলে হাদিসে এসেছে।

আশা করছি বুঝতে পারছেন যে সিয়াম পালনকারীর জন্য কয়টি আনন্দ আছে তা জানতে পেরেছেন।

শাওয়াল মাসের রোজা নিয়ে প্রশ্ন উত্তর

বছরে কত দিন রোজা রাখা হারাম?

বছরে ৫ দিন রোজা রাখা হারাম। রোজা রাখার হারাম দিন সমূহ হচ্ছে:

১) শাওয়াল মাসের ১ তারিখ (ঈদুল ফিতরের দিন)
২) রজব মাসের ১০, ১১, ১২ এবং ১৩ তারিখ। (ঈদুল আযহা ও তার পরবর্তী ৩ দিন)

শুক্রবার রোজা রাখা হারাম কি না?

না হারাম না। তবে, শুধু মাত্র জুমার দিনকে উদ্দেশ্য করে রোজা রাখা যাবে না।

মুহাম্মদ সাঃ স্পষ্ট নিষেধ করে বলেছেন যে,

“শুধু মাত্র শুক্রবারের দিনকে রোজা রাখার দিন বানাবেন না বা নফল রোজার জন্য শুধু মাত্র রোজা রাখার দিন বানাবে না”।

কোন কোন দিন রোজা রাখা সুন্নত?

বছরে ৪ দিন অন্যতম দিন আছে যেই দিনগুলোতে রোজা রাখা সুন্নত।

১) মহররম মাসের ৯ এবং ১০ তারিখ
২) প্রত্যেক সপ্তাহের সোমবার এবং বৃহস্পতিবার।

এছাড়া আরও নবীজি (সাঃ) যেসব দিনে রোজা রাখতেন সেসব দিন রোজা রাখা সুন্নত।

কত তারিখ রোজা রাখা হারাম নিয়ে সর্বশেষ

প্রিয় পাঠক, আজকের পোস্ট থেকে আমরা শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম এবং সারা বছর রোজার নিষিদ্ধ দিনগুলি সম্পর্কে জেনেছি।

আশা করছি এই পোস্ট থেকে শাওয়াল মাসের কত তারিখ রোজা রাখা হারাম এবং রোজার হারাম ও সুন্নত সহ সব বিষয়ে জানতে পেরেছেন।

এরপরে আর কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।

ইসলাম সম্পর্কিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে ইসলাম ক্যাতাগরি ভিজিট করুন।

এছাড়া নিওমিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপদেত পেটে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkentha এ।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.