Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam
প্রিয় পাঠক, স্বাগত আমাদের আজকের পোষ্ট “শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম অর্থাৎ ছয় রোজার নিয়ত” এ। এই পোষ্টটি প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি যদি রমজান মাসে ৩০ টি রোজা পালন করে এবং শাওয়াল মাসের যেকোনো ৬ দিনে ছয়টি রোজা আদায় করে তাহলে আল্লাহ অই ব্যক্তিকে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব দান করবেন।
শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত এর থেকে আর কি হতে পারে? ছয় রোজার ফজিলত কি এর পরে আর জানার কোন দরকার আছে বলে মনে হয় না।
আরও পড়ুনঃ রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া (উচ্চারণ সহ বাংলা অর্থ)
তাই, মাত্র ৩৬ টি রোজা রেখে সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব অর্জন করা সকল মুমিন মুসমানের অবশ্যই করা উচিত।
কিন্তু এজন্য শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম অর্থাৎ ছয় রোজার রাখার নিয়ম ও নিয়ত জানা অত্যন্ত জরুরি।
আজকের পোষ্টে আমরা শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম সম্পরকে বিস্তারিত জানবো, ইনশা আল্লাহ।
চলুন, শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম এবং ছয় রোজার নিয়ত সহ ছয় রোজা সম্পর্কিত সবকিছু জেনে নেওয়া যাক।
শাওয়ালের রোজা কি । ছয় রোজা কি
প্রতি বছর আরবি রমজান মাসে সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দীর্ঘ এক মাস রোজা পালন করে থাকেন। ইস্লামের প্যাঁচটি খুঁটির তৃতীয় এবং অন্যতম খুঁটি হচ্ছে সাওম বা রোজা।
তবে এক মাস রোজা রাখার পর শাওয়াল মাসে উদযাপিত হয় ইদুল ফিতর বা রোজার ঈদ।
আর কোন ব্যক্তি রমজান মাসের সবগুলো রোজা এবং শাওয়াল মাসের ৬ টি রোজা রাখে তাহলে ওই ব্যক্তি সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবেন বলে কোরআন হাদিসে বলা হয়েছে।
আর এই শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজাকে শাওয়াল মাসের রোজা কিংবা ছয় রোজা বলা হয়ে থাকে।
ফরজ রোজার পরে ছয় রোজা রাখা হয় মুলত সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব পাওয়ার আশায়।
শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়ম । ছয় রোজার নিয়ম
ছয় রোজা রাখার বিশেষ কোনো নিয়ম নেই। ফরজ রোজার মতই শাওয়ালের রোজা রাখতে হয়। সেহরি খাওয়ার মধ্যে দিয়ে রোজা রাখতে হয়। এবং ইফতারি করে রোজা পূর্ণ করতে হয়।
ছয় রোজা ভাঙ্গা কিংবা মাখরুহ হয়া সবই ফরজ রোজার এবং ছয় রোজার একই কারণ।
অর্থাৎ যেসব কারণে ফরজ রোজা ভাঙ্গে বা মাখরুহ হয় সেসব কারনেই ছয় রোজা ভাঙ্গে কিংবা মাখরুহ হয়। ছয় রোজা ভাঙ্গা কিংবা মাখরুহর কারণ দেখে নিন।
অনেকে মনে করেন যে, শাওয়াল মাসের রোজা একবারে পর পর ছয়দিন আদায় করতে হবে। প্রকৃত অর্থে একদমই এমন নয়।
যে সময়ের মধ্যে শাওয়াল মাসের রোজা রাখতে হবে?
সম্পূর্ণ শাওয়াল মাস জুড়ে যেকোনো ছয়দিন মুমিন ব্যক্তি তার সময় সুবিধা মত এই রোজা আদায় করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে মাঝেমদ্ধে দেখা যায় কাজের কারণে ছুটির দিনে রোজাগুলো রাখা যায়।
তবে এক সাথে রাখলে যে উপকার হয় সেটি হচ্ছে কষ্ট তুলনামুলক কম হয়। তাই সম্ভব হলে ছয় রোজা বা শাওয়াল মাসের রোজা একবারেই রাখা যায়।
শাওয়ালের রোজার নিয়ত
ফরজ রোজা কিংবা ছয় রোজা কোনো রোজাতেই নিয়ত করার প্রয়োজন নেই।
কারণ আপনি সেহরি খাচ্ছেন রোজা রাখার নিয়তে তাতেই নিয়ত সম্পন্ন হয়ে যায়। আর আল্লাহ সকল বিষয়ে অবহিত।
এরপরেও অনেকে শাওয়াল মাসের রোজার নিয়ত, সেহরি ও ইফতারের দোয়া জানতে চান।
এখান থেকে শাওয়াল মাসের রোজার সকল দোয়া জেনে নিন।
ফরজ রোজা অপূর্ণ থাকলে শাওয়াল রোজার রাখার নিয়ম
শাওয়াল মাসের রোজা কিংবা ছ্য রোজা হচ্ছে নফল রোজা। অনেক সময় দেখা যায় আমাদের অনেকের কোন বিপদ কিংবা কোন অনাকাখিত কারণ বশত ফরজ রোজা ছুটে গেছে।
বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি বেশি পরিলক্ষিত হয়। কারণ, মেয়েদের মাসের এক্তি নির্দিষ্ট সময় মাসিক হয়ে থাকে।
আর রোজা যেহেতু এক মাস ব্যাপি তাই প্রত্যেক মেয়ের রোজার মদ্ধে মাসিক হয়ে থাকে।
মাসিকের সময় রোজা রাখা হারাম। আবার প্রসঙ্গ ফরজ রোজা।
তখন করণীয় হচ্ছে, শাওয়াল মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ ঈদের পরে আগে ফরজ রোজা যেকয়টি ছুটে গেছে তা আদায় করা। এরপর ছয় রোজা রাখা।
এতে ছয় রোজার সাওয়াব পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। ঠিক একই ভাবে কোন ব্যক্তির অন্য কোনো ফরজ রোজা ছুটে গেলে আগে সেই কয়তি রোজা রেখে শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখলে আল্লাহ শাওয়াল মাসের রোজার পূর্ণ সাওয়াব দিবেন ইনশা আল্লাহ।
শাওয়াল মাসের ফজিলত ও হাদিস
মুসলমান মুমিন ব্যক্তি শাওয়াল মাসের রোজার শিক্ষা ঈদের আনন্দে ভুলে না যান এজন্য আমাদের নবীজি শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখতে বলেন।
নবীজি বলেন, “কোনও ব্যক্তি যদি রমজান মাসের সব ফরজ রোজাগুলো রাখে এবং শাওয়াল মাসে আরও ছয়টি নফল রোজা রাখে, সেই ব্যক্তি সারাবছর রোজা রাখার সাওয়াব পাবে। (সহীহ মুসলিম এর হাদীস নাম্বার ১১৬৪)
আরও পড়ুনঃ শাওয়াল মাসের রোজা রাখার নিয়ম । ছয় রোজা রাখার নিয়ম
এছারা কোরআন এবং হাদিসের একাধিক জায়গায় উল্লেখিত আহে যে।
রমজান মাসের সবগুলো রোজা রেখে শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখলে সারা বছর নফল রোজার সাওয়াব পাওয়া যায়। তাই শাওয়াল মাসের রোজার ফজিলত অনেক বেশি।
শাওয়ালের ছয় রোজা নিয়ে প্রশ্ন উত্তর
শাওয়াল মাসে নফল ৬ টি রোজা রাখতে হয়। তবে ব্যক্তি চাইলে বেশিও রাখতে পারেন। কোন সমসস্য নেই। বরং বেশি সাওয়াব পাওয়া যাবে।
হ্যা যাবে। তবে শাওয়াল রোজা রাখার আগে কাজা রোজাগুলি রাখতে হবে।
এরপর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম অনুযায়ী ৬ টি রোজা রাখতে হবে।
হাদিসে এসেছে যে নবীজি বলেন,
“কোন ব্যক্তি যদি রমজানের সবগুলো ফরজ রোজা রাখে এবং শাওয়াল মাসে ৬ টি রোজা রাখে তাহলে ওই ব্যক্তি সারা বছর নফল রোজার সাওয়াব পাবেন” (সহীহ মুসলিম এর হাদীস নাম্বার ১১৬৪)।
শাওয়াল মাসের ছয় রোজা রাখার নির্দিষ্ট সময় হচ্ছে শাওয়াল মাসের সম্পূর্ণ দিনগুলো।
অর্থাৎ শাওয়াল মাসের যেকোনো ছয়দিনে এই ছয় রোজা রাখা যাবে।
এমনকি পরপর রাখারও কোন বিশেষ নিয়ম নেই। ব্যক্তির সুবিধা মত সময়ে রাখা যাবে।
শাওলের রোজার নিয়ম নিয়ে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি।
জেনেছি ছয় রোজার নিয়ত, শাওয়ালের রোজার ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত।
আশা করছি, এই পোস্ট থেকে শাওয়ালের রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিষয়ে জানতে পেরেছেন।
এরপরেও শাওয়াল মাসের রোজা তথা ৬ রোজা নিয়ে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।
কমেন্টে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেওয়া হবে।
এছারাও রোজা ও ইসলাম সম্পর্কিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে আমাদের Islamic Info Category ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
এবং সকল সোশ্যাল সাইটে আমাদের পেতে সার করুন Dainikkantha লিখে।
2 thoughts on “শাওয়ালের ছয় রোজা রাখার নিয়ম । ছয় রোজার নিয়ত”