শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে ? বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করেছিল ?

Last Updated on 9 months by Shaikh Mainul Islam

আমরা অনেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে তা জানলেও বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের গল্প জানি না। এমনকি অনেকেই জানে না এবং বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করেছিল এবং কেন?

প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোষ্ট “শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে ? বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করেছিল” এ।

আজকে আমরা জানবো, শহীদ বুদ্ধিজীবী কারা, কেন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে হয়েছিল, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার কারণ, দেশ বিনির্মাণে বুদ্ধিজীবীদের অবদান, বুদ্ধিজীবীদের সম্মান এবং শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিস্তারিত।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কারা,কবে, হত্যার কারণ

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের ডাক দেওয়ার পরে বাংলার আপামর জনগণ যার যা ছিলো তাই নিয়ে ঝাপিয়ে পরেছিল।

কিন্তু দেশে তখন প্রধান প্রধান নেতাদের গ্রেপ্তারের পর নেতৃত্ব সংকট দেখা দেয়। তখন সার্বিক দিক বিবেচনা করে করে দেশের প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীরা দেশের স্বাধীনতায় এগিয়ে আসে।

আরও পড়ুনঃ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নামের তালিকা (নাম ও পেশা সহ)

দেশের নেতৃত্ব সংকট সময় দেশের খ্যাতনামা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিকরা দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নেতৃত্ব সঙ্কটের সময়ে এরা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের বুদ্ধি এবং পরামর্শ দিয়ে অবদান রেখেছেন।

আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা

কিন্তু ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর এর ১২ এবং ১৩ তারিখের পরে যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা বুঝতে পারলো যে, তাদের হার নিশ্চিত, চারিদিক থেকে বাঙালী মুক্তিযোদ্ধারা তাদের ঘিরে ধরতেছে তখন দেশকে মেধা শুন্য করার পরিকল্পনা করেন।

এরই লক্ষে ১৪ দিসেম্বরদ ১৯৭১ সালে তালিকা করে দেশকে মেধা শুন্য করতে একেক করে সকল বুদ্ধিজীবীদের (দেশ বরেণ্যঃ ডাক্তার, চিকিৎসক, সাংবাদিক, লেখক, শিক্ষক, আইনজীবী) ধরে নিয়ে গণহত্যা করে। এদেরকে শহীদ বুদ্ধিজীবী বলা হয়।

আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা

মূলত বাংলাদেশকে মেধা শুন্য করার জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা এমন ন্যাকারজনক ষড়যন্ত্র করে দেশের মেধাগুলিকে হত্যা করে। এর ক্ষতিপূরণ জাতি আজও দিয়ে যাচ্ছে।

দেশের প্রায় বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর। তাই ১৪ ডিসেম্বর শহীদদের স্মরণে প্রত্যেক বছর বাংলাদেশে সরকারিভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।

দেশের স্বাধীনতা শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান

দেশে স্বাধীনতায় সামনে থেকে যুদ্ধ করেছেন দেশের দামাল সন্তানেরা মুক্তিযোদ্ধারা।

আর পিছন থেকে সকল ছক তৈরি থেকে শুরু করে যুদ্ধ কিভাবে পরিচালনা করলে কিভাবে শক্রুদের ঘায়েল করা যাবে টা বিশ্লেষণ করে বুদ্ধিজীবীরা বের করত।

তৎকালীন সময়ে দেশের বুদ্ধিজীবীরা পিছনে থেকে সার্বিক ভাবে সর্বাধিক ভুমিকা রেখেছেন।

এদের এই অবদান জাতি চিরদিন মনে রাখবে। ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

আরও পড়ুনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)

বুদ্ধিজীবীরা শুধু তাদের মেধা দিয়েই থেমে যাননি। শেষ পর্যন্ত একত্রে নিজের জীবন ডান করে গেছেন।

দেশের জন্য এমন অবদান শত কোটি বার প্রসংশার দাবীদার। এছাড়াও অনেককে অনেক আগে নিয়ে আটকিয়ে অত্ত্যাচার করেছে। তাদের পরিবারকে হত্যা করেছে।

এইসব মিলিয়ে দেশের প্রতি কিংবা মুক্তিযুদ্ধে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান এক কথায় বলে শেষ করার না।

এই বিষয়ে বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মূলক বইয়ে আরও সুন্দরভাবে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয় ?

পৃথিবীর ইতিহাসে এত বেশি প্রাণ এবং রক্ত দিয়ে কোনও জাতি বিজয় অর্জন করেনি শুধু মাত্র বাংলাদেশ ছাড়া।

আর এই যুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের অসামান্য অবদান জাতি কোনদিন ভুলতে পারবে না।

প্রতি বছর জাতি সকল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে। প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর সারা দেশে জাতীয়ভাবে শহিদ বুদ্ধিজীবী পালন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের পোস্ট

এই দিনে জাতিকে মনে করিয়ে দেয় দেশের জন্য বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ। মনে করিয়ে দেয় দেশপ্রেমের চাক্ষশ প্রমান।

এই দিনে সকল শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্তার মাগফেরাত কামনা কয়া হয়।

এছাড়া আগামীর প্রজন্মকে বুদ্ধিজীবীদের বিষয়ে জানানো হয়। যাতে আজকের শিশু আগামী দিনের দেশপ্রেমিক হতে পারে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পতাকা উত্তোলনের নিয়ম কি

১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে তাদের স্মরণ এবং শ্রদ্ধার অংশ হিসেবে স্কুল কলেজ সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অফিস আদালতে জাতীয় পতাকা অর্ধনির্মিত রাখতে হয়।

এবং কালো পতাকা উত্তোলন করতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচির পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

আরও পড়ুনঃ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস রচনা । মহান বিজয় দিবস রচনা লেখার নিয়ম

যেমন, শহীদদের স্মরণে স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অরপন করা হয়। আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জলন করা হয়।

শোক র‍্যালি, শ্রদ্ধা নিবেদন, চিত্রাঙ্কন, সাধারণ জ্ঞান ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতা সহ মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এছাড়াও আরও অনেক সামাজিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বুদ্ধিজীবী দিবস সম্পর্কিত FAQS

বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড কবে সংঘটিত হয় ?

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

বাংলাদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী কে ছিলেন ?

বাংলাদেশের প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী হচ্ছেন  ড. সৈয়দ মহম্মদ শামসুজ্জোহা।

বুদ্ধিজীবী দিবস কবে পালন করা হয় ?

প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করার উপায় কি?

অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হবে।
আমাদের দেশের প্রচলন অনুযায়ী শহীদদের শ্রদ্ধার অংশ হিসেবে নীরবতা পালন, দোয়া, মিলাহ মাহফিল, আলোচনা সভা ইত্যাদি।

পাকিস্তানি বাহিনী কেন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল?

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পরাজয় নিসচিত বুঝতে পেরে বাংলাদেশকে মেধা শুন্য করতে দেশের বুদ্ধিজীবী খ্যাতও ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক দের হত্যা করেছিল।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে নিয়ে সর্বশেষ কিছু কথা

আজকের পোস্ট থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কবে এবং কারা বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করেছিল সে বিষয়ে জেনেছি।

এছারাও জেনেছি দেশের জন্য শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অবদান সম্পর্কে।

এছারাও আজকের পোষ্টে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে পতাকা উত্তোলন এবং বিভিন্ন কার্যক্রম এর বিষয়ে বিস্তারিত জেনেছি।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস সহ জাতীয় যেকোনো বিষয়ে আমাদের অন্যান্য পোষ্ট পড়তে National Category ভিজিট করুন।

নিয়মিত আমাদের সকল পোষ্ট পড়তে Dainik kantha ভিজিট করুন।

সর্বশেষ আমাদের সকল পোষ্ট পড়তে চোখ রাখুন ফিস ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।