বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম । অনলাইনে এবং সরাসরি

বাংলাদেশ সরকারের সরকারি অনুদানের মধ্যে অন্যতম একটি অনুদান বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা বা বয়স্ক ভাতা। ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে সরকারের সরকারী সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধিনে বিধবা বা বয়স্ক বা স্বামী পরিত্যক্তা ভাতা দেওয়া শুরু হয়। আজকে আমরা বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ও একাধিক উপায় সম্পর্কে জানবো।

শুরুতে বিধবা ভাতা কার্যক্রমটি সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত হলেও বর্তমানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পরিচালনা করা হয়। মূলত দেশের গরিব, অসচ্ছল, চলতে পারে না, স্বামী ছেরে দিয়েছে এমন মহিলা পুরুষদের এই ভাতার আওতায় আনা হয়। নিয়মানুযায়ী কার্যক্রম শেষে প্রতি ছয় মাস পর পর ব্যক্তির ব্যাংক কিংবা মোবাইলে ভাতার টাকা চলে আসে।

আজকের পোষ্টে আমরা জানবো, বিধবা ভাতার আবেদন যোগ্যতা, বিধভা ভাতা আবেদন করার নিয়ম, বিধবা ভাতা আবেদন ফরম, বাংলাদেশে বিধবা ভাতা কত টাকা, বিধবা ভাতা কত টাকা সহ বিধবা এবং বয়স্ক ভাতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

বিধবা ভাতা আবেদন করার যোগ্যতা সমূহ

কে বা কারা আবেদন করতে পারবেন তা বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম জানার আগে জেনে নেওয়া উচিত। সরকারি আইন অনুযায়ী বিধবা ভাতা পাওয়ার জন্য কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে। সবাই এই ভাতা পাবে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিধবা ভাতা আবেদন করার যোগ্যতা সমূহ।

আরও পড়ুনঃ নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম

১) ভাতা পাওয়ার অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।

২) মিনিমাম ১৮ বছর বয়স্ক হতে হবে। তবে সর্বাধিক বয়স্ক মহিলাদের সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

৩) শারীরিকভাবে কাজ করতে অক্ষম। অর্থাৎ, কর্মক্ষমতাহীন ব্যক্তিকে অগ্রাধিকা দেওয়া হয়।

৪) নিঃস্ব, নিঃসন্তান, নিজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এমন ব্যক্তিকে অগ্রাধিকা দেওয়া হয়।

৫) নিজ জমির পরিমাণ ০.৫০ একরের কম জমি বা ভূমিহীন হতে হবে।

৬) বিধবা ব্যক্তিকে বাৎসরিক আয় ১২ হাজার বা তার কম হতে হবে।

৭) অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।

উপরের বিষয় সম্পর্কিত ব্যক্তি বিধবা ভাতা পাওয়ার জন্য বিবেচনা সাপেক্ষে বিধবা ভাতা কার্ড দেওয়া হবে।

বিধভা ভাতা আবেদন করার নিয়ম । অনলাইনে এবং সরাসরি

বর্তমানে বিধবা ভাতা প্রদান করা হয় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে। বিধবা ভাতা পাওয়ার জন্য যেকোনো যোগ্য ব্যক্তি দুইটি উপায়েয়াবেদন করতে পারবেন।

১) সরাসরি ফর্ম পূরণ করে আবেদন ফর্ম সংশ্লিষ্ট মহলে জমা দিয়ে।

২) অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে।

সরাসরি বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম

সরাসরি আবেদন করার জন্য প্রথমে আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করতে হবে। আপনি  এটি এখান থেকে ডাউনলোড করেও সংগ্রহ করতে পারেন। আবার আপনার পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।

এখানে ক্লিক করে ফর্মটি ডাউনলোড করে নিন

এবার ফর্মে চাওয়া সকল তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করুন। যদি সম্ভব হয় পূরণ করে প্রিন্ট করে বের করবেন। এরপর ছবির জায়গায় ছবি পিন আপ করে দিবেন। এবং সিগ্নচারের জায়গায় সিগ্নেচার করবেন।

এরপর ফর্মের সাথে জাতীয় পরিচয় পত্রের এক কপি ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে।

এরপর ফাইল সংযুক্ত ফর্মটি আপনার স্থানীয় প্রতিনিধি যেমন মেম্বার বা চেয়ারম্যান অথবা ইউনিয়ন পরিষদ/ পৌরসভায় জমা দিন। অথবা সরাসরি সমাজ সেবা অধিদপ্তর বা শিশু ও মহিলা বিষয়ক স্থানীয় প্রতিনিধির কাছে জমা দিন।

আরও পড়ুনঃ জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করার উপায়

তবে সবথেকে সহজ হচ্ছে ইউনিয়ন/ পৌরসভায় জমা দিবেন।

উল্লেখ্য, ফর্মে সঠিক তথ্য দিবেন। আপনার সচল মোবাইল নাম্বার যোগ করবেন।

নিজের মোবাইল না থাকলে কার মোবাইল নাম্বার দিয়েছেন তা উল্লেখ করুন।

অনলাইনে বিধবা ভাতার আবেদন করার নিয়ম

বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম এর এই পরজায়ে দেখে নেওয়া যাক কিভাবে অনলাইনে ঘরে বসেই অনলাইনে বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করা যায়। অনলাইনে বিধবা ভাতার জন্য অনলাইন আবেদন ফর্ম এখানে ক্লিক করে আবেদন করতে পারবেন খুব সহজেই।

এই লিংকে ক্লিক করার পর একটি অনলাইন পিডিএফ করম আসবে। তবে এই ফর্মের সাথে ছবি এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য সংযুক্ত করতে হবে। এরপর নিচে সাবমিট বাটন দেখতে পাবেন। সেখানে ক্লিক করলেই আপনার বিদবা ভাতা আবেদন করা সম্পন্ন হয়ে যাবে। তবে মনে রাখবেন বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম এ স্পষ্ট উল্লেখ আছে একবার আবেদন করা হয়ে গেলে সেই সব তথ্য আর সংশোধন করা যাবে না।

তাই সর্বাধিক সতর্কতার সাথে অনলাইন ফর্মটি পূরণ করুন। এবং সাবমিট করার আগে কএকবার চেক করে নিন। 

বিঃদ্রঃ অনলাইনে আবেদন করার জন্য এই ফর্মটি যে ওয়েবসাইটে যুক্ত করা সেখানে মাঝে মধ্যে ফর্মটি শো করা না। সাধারণত তখন সেই ওয়েবসাইটটি উন্নয়নের কাজ চলে। আপনি একবার চেষ্টা করে না পারলে কয়েকদিন পর আবার চেষ্টা করুন।

বিধবা ভাতা আবেদন ফরম । বিধবা ভাতা আবেদন ফরম অনলাইন

বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম অনুযায়ী দুই ধরনের বিধবা ভাতা  আবেদন ফর্ম হয়ে থাকে।একটি সরাসরি বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম ফর্ম। অন্যটি অনলাইন বিধবা ভাতা আবেদন ফর্ম।

আরও পড়ুনঃ অনলাইনে জিপিএফ ব্যালেন্স চেক । জিপিএফ লোন নেওয়ার উপায়

দুই ধরনের ফর্মের লিংকই পোষ্টের উপরের অংশে দেওয়া আছে। উপর থেকে দেখে নিন।

আরও পড়ুনঃ  ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয়

বাংলাদেশে বিধবা ভাতা কত টাকা

বাংলাদেশে প্রথম ১৯৯৮- ৯৯ সালে বিধবা ভাতা দেওয়া শুরু করে সরকার তখন মাসিক ১০০ টাকা করে ছয় মাস পরপর বছরে দুইবারে মোট ১২০০ টাকা দিত।

পর্যায়ক্রমে এখন সরকার প্রতি মাসে ৫০০ করে ছয় মাস পর পর বছরে মোট ১৫,০০০ টাকা দেয়।

এই টাকা আবার ব্যাংক কিংবা মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমেও নেওয়া যায়।

যেজন্য সারাদিন লাইনে দাড়িয়ে টাকা নিতে হয় না।

বিধবা ভাতা প্রদানের উদ্দেশ্য

সব কাজের কিছু উদ্দেশ্য থাকে। বিধবা ভাতা দেওয়ারও কিছু উদ্দেশ্য থাকে।

বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম জানার পরে এখন জেনে নেওয়া যাক বিধবা ভাতা প্রদানের উদ্দেশ্য।

১) বিধবা এবং স্বামী নিগৃহীতা মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করতে।

২) পরিবার এবং সমাজে তাঁদের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে।

৩) আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে ভাতা প্রাপ্তদের মনোবল জোরদার করতে ভুমিকা রাখে।

৪) চিকিৎসা সহায়তা এবং পুষ্টি সরবরাহ বৃদ্ধিতে আর্থিক সহায়তা করা হয়ে থাকে

অগ্রণী ব্যাংক লোন সম্পর্কে বিস্তারিত

বিধবা ভাতা সংক্রান্ত প্রশ্ন উত্তর । FAQS

বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম কয় প্রকার?

দুই ভাবে বিধবা ভাতার আবেদন করা যায়। উপরে উল্লেখিত দুইটিই বিষয় হচ্ছে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম।

বিধবা বলতে কি বুঝায়?

স্বামী মারা গেছে, স্বামী ছেরে দিয়েছে। জমি জমা নেই আয় নাই। স্বাভাবিক জীবনে চলতে অনেক কষ্ট হয়। এমন ব্যক্তিক্র বিধবা বলা হয়। তবে এই ভাতা পুরষরাও পেয়ে থাকে যেটা বয়স্ক ভাতা নামে পরিচিত। মূলত বিধবা ভাতা এবং বয়স্ক ভাতা সরকারের একই সহযোগিতা।

বিধবা ভাতা নিতিমালা দেখে নিন এখান থেকে।

বিধবা ভাতা সংক্রান্ত সর্বশেষ

আজকে আমরা জানতে পেরেছি, বিধবা ভাতার আবেদন যোগ্যতা, বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম। বিধবা ভাতা আবেদন ফরম, বাংলাদেশে বিধবা ভাতা কত টাকা, বিধবা ভাতা কত টাকা সহ বিধবা এবং বয়স্ক ভাতা সম্পর্কে বিস্তারিত।

আরও পড়ুনঃ অনলাইনে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার উপায়

এরপরেও এই বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে আমাদের Government Service Information category ভিজিট করুন ।

নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে Dainik kantha ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন  Dainikkantha এ।