Last Updated on 8 months by Shaikh Mainul Islam
প্রিয় পাঠক, স্বাগত জানাচ্ছি আমাদের আজকের পোস্ট “জিলহজ মাসের রোজা কয়টি এবং কোরবানির রোজা রাখার নিয়ম” এ। এই পোষ্টটি কোরবানির আগ মুহূর্তে সকল মুসল্মানের জানা অত্যন্ত জরুরি।
মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ইসলামিক অনুষ্ঠানের একটি হচ্ছী কোরবানির ঈদ যেটা আরবি মাসের ১০ জিলহজ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
৯ জিলহজ পবিত্র মক্কা নগরীতে হজ পালন এবং ১০ জিলহজ সারা বিশ্বব্যাপী পশু কোরবানি দেওয়া হয়ে থাকে।
কিন্তু হজের মাস এবং আল্লাহর কাছে অন্যতম প্রিয় হচ্ছে কোরবানি সেই কোরবানির মাসে অর্থাৎ জিলহজ মাসের রোজা সম্পর্কে আজকে বিস্তারিত জানবো।
জিলহজ মাসের রোজা কয়টি এবং কবে
কোরবানির রোজা কয়টি বা জিলহজ মাসের রোজা কয়টি এমন প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগে।
তাই চলুন বিস্তারিত ভাবে জেনে নেই কোরবানির রোজা কয়টি রাখতে হবে এবং কোন কোন তারিখ রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ম । শবে কদরের নামাজের নিয়ত
হাদিসে এসেছে যে,
পবিত্র জিলহজ মাসের শুরুতে মহানবি সাঃ ১ জিলহাজ থেকে ৯ জিলহজ পর্যন্ত ৯ টি রোজা রাখতেন । এবং মুহাম্মদ সাঃ তার উম্মতদের উদ্দেশ্যে বলেন, অন্তত পক্ষে কোরবানির মাসের ৯ তারিখ রোজা রাখার জন্য।
কারণ, যারা হজে যাবে না, ৯ জিলহজ আরাফার দিবস রয়েছে।
এই আরাফার দিবসে রোজা রাখা বা সিয়াম পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত বলে ঘোষণা দিয়েছেন নবিজি মুহাম্মদ সাঃ।
আরও পড়ুনঃ ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম ও নিয়ত জেনে নিন
এ থেকে স্পষ্ট যে, জিলহজ মাসে বা কোরবানির মাসের প্রথম দশ দিন শুধু ঈদের দিন বাদে রোজা রাখা সুন্নত।
আরও পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ত
তবে কেউ চাইলে এর মধ্যে কম বেশি রাখতে পারেন। তবে ৯ জিলহাজ যারা হজ করবেন না তাদের রোজা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রিয় পাঠক, এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে, জিলহজ মাসের রোজা কয়টি বা কোরবানির রোজা কয়টি এবং কোরবানির রোজা কখন বা কবে রাখতে হবে তা সম্পূর্ণ বুঝতে পারছেন।
জিলহজ মাসের রোজার নিয়ত
বরাবরের মত জিলহজ মাসের রোজার নিয়তের ক্ষেত্রেও বলা হয়ে থাকে, মুখে উচ্চারণ করে রোজার নিয়ত করার কোনো দরকার নেই বিধানও নেই।
কারণ একমাত্র হজের সময় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করতে হয়। আল্লাহ সবার অন্তর সম্পর্কে অবগত। তাই জিলহাজ মাসের রোজার নিয়ত করার কোনো নেই।
আরও পড়ুনঃ লাইলাতুল কদরের দোয়া
অন্য স্বাভাবিক রোজার মত সেহরী এবং ইফতারি দিয়ে শুরু শেষ করেই কোরবানির রোজা সম্পন্ন করতে হবে।
তবে এরপরেও অনেকেই জিলহজ মাসের রোজার নিয়ত মুখে উচ্চারণ করে আদায় করতে চান। তারা নিচের দোয়াটি বাংলায় পড়ে নিতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ কোরবানি সম্পর্কে কোরআনের আয়াত । ঈদুল আযহা নিয়ে কিছু কথা
দোয়াঃ হে আল্লাহ, “আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জিলহজ মাসের রোজা রাখছি। আপনি আমার রোজা এবং মনের সকল নেক আশাকে পূর্ণ করে দিন, নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল।
জিলহজ মাসের রোজার ফজিলত
নবিজি মুহাম্মদ সাঃ বলেন,
“জিলহজ মসের প্রথম দশকের ইবাদত আল্লাহর কাছে অনেক বেশি প্রিয়। এই সময়ের এক দিনের ইবাদত এক বছরের রোজার সাওয়াবের সমান এবং প্রত্যেকটি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া পবিত্র কোরআন এবং হাদিসের অন্যান্য জায়গায় উল্লেখিত বিভিন্ন বিষয়ের আলোকে স্পষ্ট যে,
কোরবানির রোজার ফজিলত অনেক। তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত জিলহজ মাসের প্রথম দশক তথা ১ থেকে ৯ তারিখ রোজা রাখা উচিত।
আরও পড়ুনঃ কোরবানির মাংস ভাগের নিয়ম । কোরবানির ভাগের নিয়ম জেনে নিন
তবে কোন ব্যক্তি একান্ত না পারলে অন্তত ৯ জিলহজ যেটা আরাফার দিবস হিসেবে স্বীকৃত এই এক দিনে রোজা রাখা একান্ত জরুরি।
তবে এই আমলের বাহিরে থাকবে হজ করতে যাওয়া নব্য হাজীগণ।
জিলহজ মাস নিয়ে প্রশ্ন উত্তর
কোরবানির নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কোনো রোজা নেই।
তবে, রাসুলুল্লাহ সাঃ প্রথম ১ থেকে ৯ জিলহজ ৯ টি রোজা রাখতেন। এবং তার উম্মতদের রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
না, কোরবানির ঈদ সহ জিলহজ মাসে মোট ৩ দিন রোজা রাখা হারাম। সেই তিন দিন হচ্ছে ১০,১১ এবং ১২ জিলহজ।
আরবি জিলহজ মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত। তবে, যা এই ২০২৩ সালে ইংরেজি সময় অনুযায়ী ২০ জুন থেকে ২৮ জুন ২০২৩ পর্যন্ত।
কোরবানির রোজা আরবি জিলহজ মাসের ১ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রাখা যায়। এই রোজার ফজিলত অনেক বেশি।
না, জিলহজ মাসের ৩ দিন রোজা রাখা হারাম। ১০, ১১ এবং ১২ জিলহজ সবধরনের রোজা রাখা হারাম।
জিলহজ মাসের ১০ দিনের আমলের মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে রোজা। যা ১ জিলহজ থেকে ৯ জিলহজ পর্যন্ত পালন করতে হয়।
না। কোরবানির সময়ে রোজা রাখা ফরজ না। বরং কোরবানির রোজা সুন্নত ইবাদত।
তবে ফরজ না হলেও এই ইবাদতের গুরুত্ত অনেক বেশি।
না। কোরবানির রোজা এবং কোরবানি আদায় দুইটি ভিন্ন ইবাদত।
তবে সকলের কোরবানির রোজা সবগুলি না হলেও অন্তত ৯ জিলহজের রোজাটি রাখা অত্যন্ত জরুরি।
৯ জিলহজ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মোট ৫ দিন এবং ২৩ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের শেষে অন্তত একবার তাকবির দেওয়া ওয়াজিব এবং আবশ্যক ইবাদত।
জিলহজ মাস নিয়ে সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা কোরবানির রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি।
আশা করছি আজকের পোস্ট থেকে কোরবানির রোজা সম্পর্কে এবং কোরবানির ঈদের আগের আমল সম্পর্কে সকল বিষয়ে বুঝতে পারছেন।
আরও পড়ুনঃ ঈদুল আযহা নামাজের নিয়ম ও নিয়ত জেনে নিন
এরপরে এই বিষয়ে আরও কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।
এবং হজ, কোরবানি সহ আমাদের সকল ইসলামিক পোস্ট পড়ার জন্য ভিজিট করুন Islamic info Category এ।
সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
3 thoughts on “জিলহজ মাসের রোজা কয়টি এবং কোরবানির রোজা রাখার নিয়ম”