Last Updated on 11 months by Shaikh Mainul Islam
বাংলাদেশে খেজুর খুব পরিচিত একটি ফল হলেও এখানে এর উৎপাদন খুব একটা হয় না বললেই চলে। খেজুর উতপাদনে সব থেকে এগিয়ে সৌদি আরব, ইরাক, ইরান এবং অন্যান্য রাষ্ট্র। এছাড়াও বাংলাদেশ এবং ভারতে খুব সীমিত পরিমাণে খেজুর উৎপাদন হয়ে থাকে। এর বেশ চাহিদে সব জায়গায় কম বেশি থাকলেও বেশিরভাগ মুস্লিম রাষ্ট্রে এর কদর চাহিদা সবথেকে বেশি।
এই ফলের রয়েছে অসাধারণ কিছু পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা। জেনে নেওয়া যাক খেজুরের উপকারিতা এবং অপকারিতা_
খেজুরের পুষ্টিগুণ-
খেজুর একধরনের খাবার ফল যার স্বাদ খুবই মিষ্টি হয়ে থাকে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পটাসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে সহ শরীরের প্রতিদিনের ক্যলরির চাহিদা পুরন করতে সক্ষম।
প্রোটিন উপস্থিত- খেজুরে থাকা প্রোটিন মানব শরীরের পেশী গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ভিটামিন উপস্থিত- খেজুরে বেশ কয়েক প্রকার ভিটামিন বিদ্যমান। বিশেষ করে এই ফলটিতে ভিটামিন b1 b2 b3 এবং b5 উপস্থিত থাকে।খেজুর এমন একটি মাধ্যম যা ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। খেজুর খাওয়ার ফলে দৃষ্টিশক্তি প্রখর হয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।
আয়রন উপস্থিতঃ মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হলো আয়রন। বিশেষ করে নারীদের দেহে আয়রনের প্রচুর দরকার যা পুরুষদের তুলনায় হাজার গুণ বেশি। আয়রনের অভাবে শরীরে রক্তশুন্যতা হয়। শরীরে আয়রন পেতে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার বিকল্প নেই। এটি হৃদপিন্ডের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে।
দুর্বল হৃদপিণ্ড ব্যক্তিদের খেজুর একটি আদর্শ খাদ্য। কারণ হৃদপিণ্ডের রোগ প্রতিরোধে প্রতিশেধক হিসেবে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই কাজ করবে খেজুর।
কোলেস্টরেল ও চর্বিঃ খেজুরে কোনরকমের বাড়তি চর্বি এবং কোলেষ্টরেল থাকে না। যার ফলে আপনি খেজুর খেলে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার কোন ভয় বা সম্ভাবনামাত্র থাকে না।
ক্যালসিয়াম উপস্থিতঃ খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম উপস্থিত যা মানবশরীরের হাড় গঠনে সহায়তা ভুমিকা রেখে থাকে।বিশেষ করে খেজুরের ক্যালসিয়াম শিশুদের জন্য খুবই উপকারী যা তাদের দাতের মারি গঠনে বিশেষ ভুমিকা রাখে।
আপনার পরিবারের বাচ্চাদেরকে নিয়মিত খেজুর খাওয়াত পাড়েন।
ফাইবারঃ উপস্থিত খেজুরে প্রচুর পরিমাণে একধরনের ফাইবার থাকে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের পেটে ক্যান্সারের সম্ভাবনা একদম থাকে না বললেই চলে।
খেজুরের ১৪ টি বিশেষ উপকারঃ
১) নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দূর হয়
২) খেজুরফল মানব শরীরে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের সমতা রক্ষা করে, যা শরীরের জন্য একান্ত দরকার।
৩) খেজুরের ক্যালসিয়াম শরীরের হাড়কে কয়েকগুন মজবুত করে।
৪) হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে তোলে খেজুর।
৫) খেজুর মানবশরীরের শক্তি বাড়াতে ওতপ্রোত ভাবে কাজ করে।এই ফলের শতকরা ৮০ ভাগই চিনি। তাই শুকনোখেজুর বা খোরমাকে বলা হয় মরুভূমির গ্লুকোজ যা অত্যন্ত মিষ্টি।
আরও পড়ুনঃ রোজায় শরীরের পানিশূন্যতা এড়াতে করণীয়
৬) এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান সেরোটোনিন নামক হরমোন উৎপাদন করতে সহায়তা করে।এটি মানুষকে মানসিক শান্তি ও স্বস্তি দেয়। যা মন ভাল রাখার জন্য অত্যন্ত দরকার।
৭) এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের রোগ দূর করতে কাজ করে। কিন্তু খেজুরখাওয়ার সাথে সাথে প্রচুর পানিও খেতে হবে। তবেই কোষ্ঠকাঠিন্য কমানো সম্ভব হবে।
৮) খাদ্যে অরুচি দূর করতে সহায়তা করে খাবারের প্রতি ব্যক্তিকে রুচিশীল করে তোলে।
৯। এতে থাকা ভিটামিন এ এবং সি চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো করতে অনেক সহায়তা করে।
১০) খেজুরে থাকা পুষ্টি উপাদান মানব শরীরের ক্যানসার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখে।
১১) খেজুড়ে উপস্থিত ডায়েটরি ফাইবার কলেস্টরেল এর সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে অসামান্য ভুমিকা রাখে।
১২) খেজুরে থাকে স্যলুবল, ইনস্যলুবল ফাইবার ও নানান ধরনের অ্যামিনো এসিড। যা আমাদের খাবার হজমে সাহায্য করে।
পেটের বদ হজম থেকে বাঁচতে খেজুর অত্যন্ত উপকারী একটি ফল।
১৩) খেজুরযুবকদের তারুণ্য এবং যৌবন ধরে রাখতে বিশেষ বিশেষ ভূমিকা রাখে।
১৪) খেজুরে থাকা আয়রন মানবদেহের রক্তশূন্যতা দূর করে, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য এটি খুব উপকারী একটি ফল।
আরও পড়ুনঃ রোজায় শসা খাওয়ার উপকারিতা- বেঁচে যেতে পারে প্রাণ
খেজুর ফলের ঔষধি গুনঃ
বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে খেজুর।
বিশেষ করে যকৃতের সংক্রমণ থেকে শুরু করে সর্দি, কাশি, জ্বর, বদহজম, উচ্চরক্তচাপ, রক্তশূন্যতা সহ নানা রকম রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে।
খেজুরের অপকারিতা বা সতর্কতাঃ
খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা আছে, এটা যেমন সত্য তেমন কিছু কিছু ক্ষেত্রেখেজুর গ্রহনে সতর্ক হওয়া উচিত। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেজুরগ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তার খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে অবশ্যই বিশেষ বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
আরও পড়ুনঃ গরমে ঠাণ্ডা পানি খাওয়া উপকার নাকি ক্ষতি
এছাড়াও বাজারে আজকাল এত এত ধরনেরখেজুর পাওয়া যায় জার মধ্য থেকে ভালো মানসম্মতখেজুর যাচাই করে কেন অনেক কঠিন।
তাই খেজুর ক্রয়ের সময় সতর্ক থাকুন।
অসাধু ব্যবসাইদের থেকে খেজুরকেনা থেকে বিরত থাকুন।
প্রশাসন বাজার মনিটরিঙের ব্যপারে আরও জোরদার অবস্থান নিন।
মানসম্মত মেয়াদ থাকা খেজুর গ্রহণ করুন। সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ুন।
3 thoughts on “খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা | যে খেজুর খাবেন না ”