Last Updated on 8 months by Shaikh Mainul Islam
প্রিয় পাঠক, স্বাগত আমাদের জাজকের পোস্ট “ইতিকাফ করার নিয়ম এবং মহিলাদের ইতিকাফের নিয়ম” এই পোষ্টে। এই পোস্টটি প্রত্যেক মুসলমান মুমিনের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাই ইতেকাফ করার নিয়ম এবং মহিলারা কিভাবে ইতিকাফ করবেন তা জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পরুন।
প্রত্যেক রমজান মাসের শেষ দশ দিন একটানা দশ দিন মসজিদে অবস্থান করে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগি করাকেই ইতিকাফ বলে। ইতিকাফ অর্থ নিজেকে আবদ্ধ করা, অর্থাৎ নির্দিষ্ট জায়গার মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে রাখাকেই বোঝায়।
আজকের পোষ্টে আমরা ইতিকাফ বা ইতেকাফ সম্পর্কিত সব বিষয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জানবো। ইতিকাফের নিয়ম, ইতিকাফের নিয়ত, ইতিকাফ করার সম্পূর্ণ নিয়ম, মহিলাদের ইতিকাফের নিয়ম সহ ইতিকাফ সংক্রান্ত সব বিষয়ে জানবো। তাই ইতিকাফ সম্পর্কিত পুরনাঙ্গ ধারণা পেতে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ইতিকাফ কাকে বলে
ইতেকাফ শব্দের অর্থ হচ্ছে আবদ্ধ করা বা নিজেকের সীমাবদ্ধ করা। ইতিকাফ হচ্ছে, রমজান মাসের শেষ দশ দিন নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থান করে সব ধরনের দুনিয়াবি কাজ থেকে নিজেকে বিরত রেখে আল্লাহর ইবাদত করাকেই ইতিকাফ বলা হয়।
ইতিকাফ করার নিয়ম অনুযায়ী ইতিকাফ করার জন্য পুরুষদের জন্য মসজিদ এবং মহিলাদের জন্য নিজ ঘরে নামাজের জন্য নির্ধারিত একটি রুম বা স্থান করে নিয়ে করতে হয়।
ইতেকাফের ফজিলত
প্রিয় পাঠক, ইতিকাফ করার নিয়ম এবং নিয়ত সম্পর্কে জানার আগে আমাদের ইতিকাফের ফজিলত ও তাৎপর্য সম্পর্কে একটু জানা উচিত।
ইসলামে ইতিকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশী। রমজান মাসের সকল সুন্নত নফল ইবাদতের মধ্যে অন্যতম একটি ইবাদত ইতেকাফ।
আরও পড়ুনঃ ফিতরা কত টাকা ২০২৩ ইসলামিক ফাউন্ডেশন । ফিতরা কাকে দেওয়া
ইতেকাফের মাধ্যমে লাইলাতুল কদরের রাত মিস হয় না। বরং গভীর রাতে আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার ইবাদত করা যায়। আল্লাহর কাছে সবকিছু নিজের মতো করে চাওয়া যায় সবকিছু।
মুসলিম শরিফের হাদিস নাম্বার ১১৭১ এ এসেছে যে,
“প্রত্যেক রোজার শেষ দশ দিন মহানবি হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইতিকাফ করতেন”।- মুসলিম হাদিসঃ ১১৭১ নাম্বার হাদিস।
এছাড়াও অন্যান্য একাধিক হাদিসে ইতিকাফ সম্পর্কে অনেক হাদিস এসেছে। যেখানে ইতিকাফ অত্যন্ত ফজিলত বর্ণিত আছে। ইতিকাফের অন্যতম কিছু ফজিলত হচ্ছে,
- খুব নিরিবিলি পরিবেশে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া যায়।
- আল্লাহর কাছে মনের সব কিছু খুলে বলা যায়।
- কান্না করে করে আল্লাহর কাছে আল্লাহর করুণা চাওয়া যায়।
কোরআন নাজিলের রাত লাইলাতুল কদরে মসজিদে থেকেই অনেক অনেক ইবাদত করা যায়। এই রাতে আল্লাহ কাউকে ফিরিয়ে দেন না। এছাড়া নবীজি এই আমল করতেন। নিশ্চয়ই এই আ,অলে অত্যন্ত কোনও ফজিলত আছে।
আরও পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজের নিয়ম
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেন,
“আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফ থাকা বস্থায় তাদের (নিজ নিজ স্ত্রী) সাথে মিলন(শারীরিক সম্পর্ক) করবে না। এটা আল্লাহর নিষেধ। তোমরা এর কাছাকাছিও আসবে না। আর এভাবেই আল্লাহ মানুষের কাছে নিজ নিদর্শনাবলী তুলে ধরেন- যেন তাঁরা মুত্তাকি হয়”। (সুরা বাকারা এর আয়াত নাম্বার ১৮৭)
এছারাও ইতিকাফের শত শত ফজিলত কোরআন এবং হাদিসে উল্লেখিত আছে।
তাই বলা যায় যে, ইতিকাফের ফজিলত ও তাৎপর্য আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইতিকাফ কত প্রকার
ইতিকাফ তিন প্রকার। তিন প্রকার ইতিকাফ হচ্ছেঃ
- নফল ইতিকাফ।
- সুন্নত ইতিকাফ।
- ওয়াজিব ইতিকাফ।
কেউ যদি চান, রমজানের শেষ দশ দিনের প্রথম ৩ দিন কিংবা ৫ দিন কিংবা ৭ দিন ইতিকাফ করবেন তাহলে সেই ইতিকাফ হচ্ছে নফল ইতিকাফ হবে।
আর, রমজানের শেষ দশ দিনের সব কয়দিন (২০ রোজার দিনে সূর্যাস্ত হওয়া থেকে মানে সূর্য ডোবা থেকে শুরু করে ঈদের চাঁদ না দেখা যাওয়া পর্যন্ত) ইতিকাফ করা হচ্ছে সুন্নত ইতিকাফ।
আরও পড়ুনঃ রোজার ঈদের নামাজের নিয়ম । ঈদুল ফিতরের নামাজ সম্পর্কিত বিস্তারিত
এছাড়া যেকোনো সময়ে কোনও মানত বা কোনও কারণ বশত ইচ্ছা করলে ওয়াজিব ইতিকাফ করা যাবে। এমনকি কম সময়ের জন্যেও ইতিকাফ করা যাবে। তবে ওয়াজিব ইতিকাফের জন্য রোজা রাখার শর্ত আছে। তবে সব ইতিকাফের বিধি নিষেধ একই।
মহানবি মুহাম্মদ (সাঃ) তার জিবদ্দশায় কখনো ইতিকাফ করা মিস করেন নাই। বরং তার জীবনের শেষ রমজানে তিনি দশ রোজা থেকে শেষ পর্যন্ত শেষ ২০ দিন ইতিকাফ করেছেন।
তবে, মুসলিম মুমিনদের জন্য ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নত ইবাদত। এবং এটি করা জরুরি।
ইতেকাফ থাকার নিয়ম
আরবি প্রতি বছর রমজান মাসে সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ দীর্ঘ এক মাস ফরজ রোজা আদায় করে থাকেন। এই রোজাকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
- ১ম দশ দিনকে রহমতএর দশ দিন বলা হয়।
- ২য় দশ দিনকে মাগফেরাতের দশ দিন বলা হয়।
- ৩য় ও শেষ দষ দিন নাজাতের দশ দিন বলা হয়।
ইতিকাফ থাকার নিয়ম হচ্ছে রমজান মাসের ৩য় ও শেষ দশ দিন অর্থাৎ নাজাতের দশ দিন। ২০ তম রোজায় ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে একজন মুসল্লি মসজিদে ইতিকাফের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রবেশ করবেন।
এবং ঈদের চাঁদ না দেখা পর্যন্ত অত্যন্ত জরুরি ছাড়া (বাথরুম, গোসল এবংক হাবার দিয়ে যাওয়ার মানুষ না থাকলে বাড়িতে গিয়ে খেয়ে আসা। তবে খেতে গেলে অতিরিক্ত কথা বলা যাবে না) মসজিদের বাহিরে প্রবেশ করা যাবে না।
আরও পড়ুনঃ জাকাত কি, কাকে বলে? জাকাত কাদের উপর ফরজ? বিস্তারিত জেনে নিন
এবং মসজিদে আল্লাহর ইবাদত করতে হবে। ঘুমানর ব্যবস্থাও মসজিদের নির্দিষ্ট অংশে ব্যবস্থা করতে হবে।
এভাবে দশ দিন বা ২০ রোজা থেকে পরবর্তী শেষ রোজা অর্থাৎ ঈদের চাঁদ না দেখা পর্যন্ত ইতিকাফ করলে এই ইতিকাফ সুন্নত ইতিকাফ হিসেবে গণ্য হবে। এর থেকে কম দিন থাকলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে।
আশা করছি ইতকাফের নিয়ম সম্পর্কে জেনেছেন। তবে, ইতিকাফ থাকা অবস্থায় বাধা নিষেধ সম্পর্কে জানতে নিচের দিকে পড়তে থাকুন।
মহিলাদের ইতিকাফের নিয়ম
নবিদের আমলে মহিলারা মসজিদে নামাজ পড়তেন। এবং তখনকার দিনে মসজিদে মহিলাদের ইতিকাফ করার জন্য সু ব্যবস্থা ছিলও। তাই, তখনকার দিনে মহিলারা চাইলেই মসজিদে ইতিকাফ করতে পারতেন পর্দা সহকার।
এখনো অনেক দেশে মহিলাদের জন্য বিসশ মসজিদ চালু থাকলেও বাংলাদেশ বা অন্যান্য বেশিরভাগ দেশে মহিলাদের জন্য স্পেশাল মসজিদ চালু নেই। এর অবশ্য অনেক কারণ আছে। ফিতনা থেকে রক্ষা পেতে এমন করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ রহমত মাগফিরাত নাজাত এর দোয়া
কিন্তু, তাই বলে কি মহিলারা বা মেয়েরা ইতিকাফ করবেন না? ইতিকাফের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত থেকে মেয়েরা বা মহিলারা বঞ্চিত হবেন? একদমই না। মহিলাদের ইতিকাফ করার নিয়ম অনুযায়ী মহিলাদের ইতিকাফ করা সুন্নত। এবং মহিলাদের জন্য ঘরের মধ্যে ইতিকাফ করা অতি উত্তম।
মেয়েদের ইতিকাফের নিয়ম
মহিলারা নিজ ঘরের নির্দিষ্ট একটি কক্ষ বা রুমে নামাজের ব্যবস্থা করবেন। এবং ঐ রুম বা ঘরের মধ্যেই ইতিকাফের দিনগুলো নামাজ এবং অন্ননান্ন ইবাদতের সাথে অবস্থান করবেন।
মহিলা এবং পুরুশদের ইতিকাফের দিন তারিখ সবই এক। শুধু মাত্র পুরুষরা মসজিদে ইতিকাফ করবেন। এবং মহিয়াল্রা নিজ ঘরের নির্দিষ্ট একটি স্থানে ইতিকাফ করবেন।
অনেকে বাড়ি এমন পরিবেশ না থাকলেও প্রবল ইচ্ছা থাকে ইতিকাফ করার। তার আপনার ঘরের যেকোনো একটি অংশ চারিদিক থেকে কাপ বা অন্য কিছু দিয়ে ঘিরে সেখানে ইতিকাফের জন্য অবস্থান করতে পারেন।
তবে, পরিবেশ হতে হবে নিরিবিলি। এবং স্বাস্থ্য সম্মত স্থান হতে হবে। এর কারণ এবশ কিছু দিন একজ আয়গাতে অবস্থান করতে হবে। পরিবেশ ভালো না হলে তা স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর।
এছাড়া মহিলাদের মাসিক বা ঋতুস্রাব এর একটি বিষয় আছে। তাই ইতিকাফে বসার আগে সেই নারী বা মেয়ের হিসেব করে নেওয়া উচিত যে তার মাসিকের সময় কবে। এবংক অবে নাগাদ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ নামাজের নিষিদ্ধ সময় সমূহ
অবশ্যই মাসিকের সময় কোনোভাবে ইতিকাফে থাকা যাবে না। অসাবধান বশত এক্সদি ইতিকাফে থাকা কালীন মাসিক হয়ে যায় তাহলে সুন্নত ইতিকাফ ছুটে যাবে।
এরপর মাসিক শেষ হওয়ার পর যদি রোজা বাকি থাকে তাহলে তখন বাকি দিনগুলো ইতিকাফ থাকতে পারবেন। তাহলে নফল ইতিকাফ হলেও সাওয়াবে কমতি হবে না, ইনশা আল্লাহ।
এছাড়া মহিলাদের ইতকাফফ চলাকালীন রান্নাবাড়া থেকে শুরু করে সব ধরনের দুনিয়াবি কাজ তেকে বিরত থাকতে হবে। কোনোপ্রকার অযথা কথা বলা যাবে না।
পুরুষদের মতো মহিলাদেরও যদি বাড়িতে খাবার ইতিকাফের স্থানে দিয়ে যাওয়ার মানুষ থাকে তাহলে খাবার খেতেও বের হওয়া যাবে না। তবে মানুষ না থাকলে বের হয়ে খাওয়া যাবে।
এবং, বাথরুম, গোসল এরজ অন্য বের হওয়া যাবে।এতে কোনও সমস্যা হবে না।
আশা করছি ইতিকাফ করার নিয়ম অনুযায়ী ঘরে বসে মেয়েদের এতেকাফ করার নিয়ম সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন।
ইতিকাফে করনীয় বর্জনীয় সমূহ
মুমিন হিসেবে একজন ব্যক্রির ইতিকাফ রত অবস্থায় অনেক বিধি নিষেধ মেনে চলতে হয়।
বলতে পারেন যে, ইতিকাফ অবস্থায় একজন ব্যক্তি কি করতে পারবেন আর কি করতে পারবেন না।
অথবা ইতিকাফ থেকে কি কি করা যাবে এবং কি কি করা যাবে না? এমন কিছু বিষয় আছে যা ইতিকাফে থাকা অবস্থায় মেনে চলতে হবে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ইতিকাফ অবস্থায় করনীয় বর্জনীয় সমূহ সম্পর্কে।
ইতিকাফে থেকে যেসব কাজ করত হবে তা হচ্ছেঃ
- বেশি বেশি নফল নামাজ নফল ইবাদত করতে হবে।
- কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে।
- দ্বীনি আলোচনা করতে এবং শুনতে হবে।
- আল্লাহর জিকির করতে হবে।
- নিজ পরিবার, নিজ জীবন সহ সবার জন্য বেশী বেশী দোয়া করতে হবে।
- ধর্মীয় গ্রন্থ যেমন, হাদিসের বই, নবিদের ইতিহাস ইত্যাদি বই পড়তে হবে।
মোট কথা, ইতিকাফে থাকা অবস্থায় সব ধরনের ইসলামী কাজ করতে হবে। ইবাদত পূর্ণ কাজ করতে হবে। অযথা সময় নস্ট করা যাবে না।
তাই, অবশ্যই এগুলি মেনে চলতে হবে। আল্লাহ আমাদের এই ইতিকাফ করার নিয়ম বিষয়ে মেনে চলার তৌফিক দিন, আমিন।
ইতিকাফে থেকে যেসব কাজ করা যাবে না
ইতিকাফে থাকাকালীন বেষ নির্দিষ্ট কিছু কাজ ব্যতিত প্রায় বেশিরভাগ কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ
- একেবারেই চুপচাপ বসে থাকা যাবে না। বরং ইবাদতে মশগুল থাকতে হবে।
- ঝগড়া-ঝাটি বা অনর্থক কথাবার্তা বলা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
- গীবত বা পরনিন্দা করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
- মালপত্র মসজিদে এনে বেচা-কেনা করা থেকে নিজেকে বিরত থাকতে হবে।
এছাড়াও দুনিয়াবি সব ধরনের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
তবে , মোবাইল ল্যাপটপে অত্যন্ত জরুরি কাজগুল খুব সময়ের মধ্যে করা গেলে তা করা যাবে।
কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে শতভাগ দূরে রাখতে হবে।
ইতিকাফ ভাঙ্গার কারণ সমূহ
ইতিকাফ রাখা যায়। তবে রোজার মতো কিছু কারণে ইতিকাফ ভেঙ্গেও যায়।
চলুন ইতিকাফ করার নিয়ম অনুযায়ী নিচে ইতিকাফ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ সমূহ জেনে নেই।
- ওজরবশত বের হয়ে প্রয়োজনের চেয়ে বেশী বাহিরে যাওয়া এবং দেরি করে ফেরা।
- নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া মসজিদের বাহিরে গেলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যায়।
- স্ত্রী সহবাস করলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যায়।
- অসুস্থতা বা ভয়ের কারণে মসজিদ থেকে বের হলে ইতিকাফ ভেঙ্গে যায়।
ইতিকাফে যেসব কাজ করা যাবে
বেশ কিছু কাজ, দুনিয়াবি কাজ হলেও ইতিকাফ চলাকালীন অবস্থায় করা যাবে তা হচ্ছ,
- মসজিদে খাওয়াদাওয়া করা যাবে।
- পেশাব-পায়খানার জন্য বাইরে যাওয়া যাবে।
- ফরয গোসলের জন্য বাইরে যাওয়া যাবে।
- মসজিদে মুয়াজ্জিন না থাকলে আজান দেওয়ার জন্য বাহিরে বের হওয়া।
- জুমার নামাজ হয় না এমন মসজিদে ইতিকাফ করলে জামে মসজিদে গিয়ে খুতবার পূর্বে ২/৪ রাকাত সুন্নাত আদায় করতে পারে এবং জুমার নামাজ পড়তে পারে এততুকু সময় নিয়ে জুমা আদায় করা।
তাই এইসব কাজ থেক ইতিকাফ চলাকালীন আমাদের বিরত থাকতে হবে।
ইতিকাফ করার নিয়ম আল্লাহ আমাদের সবাইকে জানার এবং আমল তৌফিক দিন। আমিন।
ইতিকাফে করার নিয়ত । ইতিকাফ করার নিয়ম
একজন ব্যক্তি বাড়ি থেকে মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হলেই তার ইতিকাফের জন্য নিয়ত করা হয়ে যায়।
নিয়ত করার কোনও বিষয় না। নিয়ত মুখে উচ্চারণ করেও করার কোনও বিষয় না।
একমাত্র হজ এবং অম্রাহ হজ ব্যতিত অন্য কোনও নামাজ কিংবা আমল ইবাদতে নিয়ত করতে হয় না। তাই আপনাকে ইতিকাফেও নিয়ত মুখে উচ্চারণ করে করতে হবে না।
আপনি বাড়ি থেকে ইতিকাফের উদ্দেশ্যে বের হয়েছেন এতেই নিয়ত হয়ে যায়। কখনোই ইতিকাফ করার নিয়ম অনুযায়ী আলাদা করে ইতিকাফের নিয়ত আরবি কিংবা কোনও ভাশাতেই করার দরকার নেই। আশা করছি বুঝতে পারছেন।
আরও পড়ুনঃ তারাবির নামাজের মোনাজাত বাংলা অর্থ সহ
এতক্ষণে আমরা ইতিকাফ করার নিয়ম সম্পর্কিত সবকিছু জেনেছি।
আমাদের সকল পোষ্টের মতো এই পোস্টেও ইতিকাফ করার নিয়ম সম্পর্কিত অর্থাৎ ইতিকাফ সম্পর্কিত অধিক জিজ্ঞেসিত প্রশ্ন উত্তর পর্ব থাকছেই।
প্রিয় পাঠক, চলুন আমাদের আজকের পোস্ট ইতিকাফ করার নিয়ম এবং মেয়েদের ঘরে বসে ইতিকাফ করার নিয়ম সম্পর্কিত এই পোস্টে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রধ্ন উত্তর জেনে নেওয়া যাক।
এই প্রশ্ন বা জানতে চাওয়া গুলো সাধারণ মানুষের কাছে অধিক জিজ্ঞেসিত প্রশ্ন।
চলুন ইতিকাফ করার নিয়ম পোস্ট থেকে ইতিকাফ করার নিয়ম সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে জেনে নেই।
ইতিকাফ সম্পর্কিত FAQS
আসতাগফিরুল্লাহ। কখনোই না। টাকার বিনিময়ে ইতিকাফ করানোর সাথে সকল ব্যক্তি পাপের আওতায় চলে আসবে।
এটি সম্পূর্ণ বিধানের বাহিরে। এর জন্য রয়েছে কঠিন থেকে কঠিন তম শাস্তি।
ইতিকাফ করার বিধানে এমন বলে থাকেন আলেমগন যে, একটি মসজিদ বা গ্রাম থেকে অন্তত একজন হলেও ইতিকাফ করা অত্যন্ত জরুরি।
তাই বলা যায় যে, ইতিকাফে গ্রাম বা একটি মসজিদ থেকে অন্তত একজন মুসলমানের ইতিকাফ করা অত্যন্ত জরুরি।
তবে একাধিক ব্যক্তি করলে আরও ভালো। ইতিকাফ করার লোক সংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও সংখ্যা নেই।
না। কারণ রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়ার জন্য হলেও এটি দুনিয়াবি কাজ। তবে কোনও মানুষ জন না থাকলে সেক্ষেত্রে অল্প সময়ের জন্য যেতে পারে। তবে না করা অতি উত্তম।
ইতিকাফ করার নিয়ম । সর্বশেষ
প্রিয় পাঠক, আজকের পোষ্টে আমরা ইতিকাফ করার নিয়ম এবং মেয়েদের ইতিকাফ করার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি।
এছাড়াও ইতিকাফ সম্পর্কিত শুরু থেকে শেষ সবকিছু জেনেছি।
এই পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে ইতিকাফ সম্পর্কিত সকল বিষয়ে জানা যাবে।
আশা করছি এই পোস্ট থেকে ইতিকাফ সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানতে পেরেছেন।
এছাড়া ইতিকাফ করার নিয়ম এবং এই সম্পর্কিত সকল বিষয়ে জানার থাকলে কমেন্ট করে জানান।
ইতিকাফ এবং ইসলাম সম্পর্কিত আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়ার জন্য ইসলাম ক্যাটাগরিতে ভিজিট করুন।
নিয়মিত আমাদের সকল পোস্ট পড়তে ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
1 thought on “ইতিকাফ করার নিয়ম । মহিলাদের ইতিকাফের নিয়ম সহ বিস্তারিত”