Last Updated on 10 months by Shaikh Mainul Islam
বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে ২১ শে ফেব্রুয়ারি একটি স্মরণীয় দিন। ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি বক্তৃতা দিতে হয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে।
প্রিয় পাঠক, স্বাগত Dainik Kantha এর আজকের পোস্ট “২১ শে ফেব্রুয়ারি বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)” এ।
আজকের পোস্টে আমরা জানব, ২১ শে ফেব্রুয়ারি কি, ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম, ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে একটি নমুনা বক্তৃতা এবং ২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বিস্তারিত।
২১ শে ফেব্রুয়ারি কি
মাতৃভাষা বাংলা করার দাবিতে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে প্রাণ দেওয়া শহীদদের শ্রদ্ধা ও স্মরণে প্রতিবছর সরকারিভাবে ২১ শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ দিবস পালন করা হয়। এ দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনির্মিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান ভাগ হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের দুটি অংশের উৎপত্তি হয়। এর মধ্যে একটি ছিল পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশ।
আরও পড়ুনঃ ২১ শে ফেব্রুয়ারি কি দিবস
১৯৪৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের গরভরনর জেনারেল মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ঢাকায় আসেন।
তখন তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতায় বলেন, “উর্দু ই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”।
সেই থেকে ছাত্র জনতার প্রতিবাদ শুরু হয়। একের পর থেমে থেমে মাতৃভাষা বাংলা করার দাবিতে প্রতিবাদ চলতেই থাকে।
এরপর ১৯৫২ সালের ১৯ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত আবারো প্রতিবাদের গণ জোয়ার তইরি হয়। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করলে মিছিলে পুলিশ গুলি করে।
আরও পড়ুনঃ ২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)
সেখানেই শহীদ হন সালাম, রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত সহ নাম না জানা আরও অনেকে।
সেই থেকে ভাষা শহীদদের হত্যার স্মরণে প্রতিবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালন করা হয়।
দেশ স্বাধীনতার বেশ কিছু বছর পরে ১৯৯১ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ থেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সেই থেকে দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে পালিত হয়।
এই দিনে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাড়া বা মহল্লা, নির্দিষ্ট এলাকায় শহীদদের স্মরণে মিলাদ, মাহফিল, সংক্ষিপ্ত আলোচনা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বক্তৃতার আয়োজন করা হয়।
মূলত ভাষা শহীদদের স্মরণে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য বুঝাতে এসবের আয়োজন করা হয়।
যেখানে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ থেকে অনেককেই ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বক্তব্য দিতে হয়।
তাই আজকের পোষ্টে আমরা ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সাধারণ নিয়মাবলী এবং এক্তি নমুনা বক্তৃতা দেখবো।
২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম
যেকোনো অনুষ্ঠানে বা মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার মতোই ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাধারণ কিছু নিয়ম মানতে হবে।
যেমন প্রথমেই মনে রাখতে হবে আপনি ২১ শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিতে মঞ্চে বক্তৃতা দিবেন।
আপনার বক্তৃতায় ২ থেকে ৩ প্যারায় যেনো ২১ শে ফেব্রুয়ারির সম্পূর্ণ বিষয়টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থাকে।
এরপর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে হবে বক্তৃতার প্রথম এবং শেষে। শহীদদের সম্মানে মঞ্চে একবার নীরবতা পালন করা না হলে আপনি করবেন। সমবেদনা জানাবেন ৫২ এর সকল শহীদদের পরিবারকে উদ্দেশ্য করে।
ভাষা আন্দোলনের শুরু ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত সাল তারিখ গুলি মনে রেখে বলতে চেষ্টা করবেন। এরপর উল্লেখ করবেন মুক্তিযুদ্ধে ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা সম্পর্কে।
এরপর আপনার উদ্দেশ্য থাকবে নতুন প্রজন্মকে কত সুন্দর সাবলীল ভাবে অনুভব করানো যায় ২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে।
২১ শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে কিছু কথা এমনভাবে রহস্য নিয়ে সত্যকে জানাতে হবে যেন সামনে উপস্থিত সকল নতুন প্রজন্মের মনে আরও জানার আগ্রহ তৈরি হয়।
আরও পড়ুনঃ একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা প্রতিযোগিতা লেখার নিয়ম (নমুনা রচনা সহ)
এসব মঞ্চে আপনি যখন বক্তৃতা দিবেন তখন আপনাকে মনে রাখতে হবে ৩ – ৫ মিনিটের মধ্যে শেষ করতে হবে। এর অন্যতম কারণ দর্শক বিরক্ত হয়ে আপনার বক্তব্য থেকে মন উঠিয়ে না নেয়।
২১শে ফেব্রুয়ারির নমুনা বক্তব্য
” ওরা না থাকলে ভাষা হইতো নাহ বাংলা, পেতাম না স্বাধীনতা”
আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। আজকের এই দিনে গভির শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি দেশের কৃতি সন্তান সকল ভাষা শহীদদের এবং স্মরণ করছি দেশের জন্য সকল শহীদদের।
আরও পড়ুনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বক্তব্য দেওয়ার নিয়ম (নমুনা বক্তব্য সহ)
১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলা ভাষার জন্য আন্দলন করে পাকিস্তানি সরকারের হাতে জীবন দেন রফিক, শফিক, জব্বার, বরকত সহ নাম না জানা আরও অনেকে।
তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের আরও এক ধাপ এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
মঞ্চে উপস্থিত সকলের প্রতি আমার সালাম, আস্লামুয়ালাইকুম।
পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ এবং ২৪ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘোষণা দেন
“উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা”তখন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা চরম বিরক্তি প্রকাশ করে।
১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় এসে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ এর কথার পুনরাবৃত্তি করেন।
তখন ছাত্ররা প্রতিবাদে ২১ ফেব্রুয়ারি হরতাল সহ বিভিন্ন সভার সিদ্ধান্ত নেন।
সরকারের ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্ররা রাজ পথে নাম্লে পুলিশ তাদের উপর গুলিবর্ষণ শুরু করে।
যার ধারাবাহিকতায় ছাত্রদের আন্দোলনটি জনমানুষের আন্দোলনে রুপ নেয়।
আরও পড়ুনঃ বিজয় দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা
স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য এই ভাষা আন্দোলন ছিলও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত ইতিহাস জানা।
লাখো শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে সর্বদা সচেতন থাকা।
আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্ট বক্তব্য
মাতৃভাষা মায়র মুখের ভাসাকে সম্মান করা, বুকে ধারণ করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানাতে হবে। জানাতে হবে মাতৃভাষার জন্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা।
এখানেই আমি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করছি।
২১ শে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কিত FAQS
১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার ছিল।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভম্বর জাতিসংঘ থকেকে ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
২১ শে ফেব্রুয়ারিতে বক্তৃতা নিয়ে সর্বশেষ
আজকের পোষ্টে আমরা জেনেছি ২১ শে ফেব্রুয়ারি বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম এবং একটি নমুনা বক্তৃতা দেখেছি।
মুল বিষয় হচ্ছে আপনাকে খুব সুন্দর সাবলীল ভাবে বুঝিয়ে বলতে হবেহ।
২১ শে ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সভায় বক্তৃতা দেওয়ার জন্য এই পোস্টটি আপনাকে সাহায্য করবে বলে আশা করছি।
একুশে ফেব্রুয়ারি সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস সম্পর্কে আমাদের অন্যান্য সকল পোস্ট পড়তে National Category ভিজিট করুন।
আমাদের সকল আর্টিকেল পড়তে নিয়মিত Dainik Kantha ভিজিট করুন।
সর্বশেষ আপডেট পেতে চোখ রাখুন ফেসবুক পেজ Dainikkantha এ।
Khub BhAlo hoice onek onek dhonnobad
ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য। Dainikkanths এর সাথেই থাকুন।
কাল আমার ব্যক্তিতা দিতে হতো তাই আমি search করেছিলাম easy বক্তব্য এর জন্যে তার পর আপনার এই বক্তব্য ও নিয়মটি পাই এই পোস্ট টি upload দেওয়ার জন্যে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আমাদের সাথেই থাকবেন। আপনার জন্য শুভকামনা।